পদ্মা-মেঘনায় মাছ ধরা নিষিদ্ধ হচ্ছে মধ্যরাত থেকে
- চাঁদপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৩৮ PM , আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৪:২০ PM
ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাত থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস জাটকাসহ সব ধরনের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার।
নিষিদ্ধ সময়ে জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে শুরু করে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকায় সরকারিভাবে নিবন্ধিত প্রায় ৪৩ হাজার জেলে সব ধরনের মাছ আহরণ থেকে বিরত থাকবে।
দুই মাসের এই জাটকা সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে জেলার মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, সদর ও হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদী উপকূলীয় এলাকায় সচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সভা, মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।
সরজমিন সদর উপজেলার আনন্দ বাজার, শহরের টিলাবাড়ি, বড় স্টেশন মোলহেড, পুরান বাজার রনাগোয়াল, দোকানঘর, বহরিয়া, হরিণা ও আখনের হাট জেলে পল্লী ঘুরে দেখা গেছে অধিকাংশ জেলে তাদের মাছ ধরার নৌকা ডাঙ্গায় উঠিয়ে রেখেছে। আবার অনেকে তাদের জালগুলো মেরামতের কাজ করছে।
বহরিয়া এলাকার জেলে শাহাজাহান ব্যাপারী বলেন, জাটকা সংরক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে পারলে ইলিশের উৎপাদন বাড়বে। তবে এটি বাস্তবায়ন করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরো তৎপর হতে হবে। আমরা জাটকা আহরণ থেকে বিরত থাকলেও এক শ্রেণির জেলে জাটকা নিধন করে।
হরিণা ফেরিঘাট সংলগ্ন মৎস্য আড়তের ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম সৈয়াল বলেন, নানা কারণে নদীতে ইলিশের বিচরণ কমেছে। সকলের সহযোগিতায় যদি জাটকা সংরক্ষণ করা যায়, তাহলে কিছুটা হলেও ইলিশের উৎপাদন বাড়বে।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মহসীন উদ্দিন জানান, সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেউ যেন জাটকা নিধন করতে না পারে সেজন্য তৎপর থাকবে সব স্তরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। এর মধ্যে পদ্মা ও মেঘনা নদীর পাড়ে প্রায় সচেতনতামূলক সভা করেছেন। এতে জেলে এবং মাছ ব্যবসায়ীরা তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, জাটকা সংরক্ষণে প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সব ধরনের সহায়তা প্রদান করবেন তারা।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, জাটকা সংরক্ষণে পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স দায়িত্ব পালন করবে। জাটকা আহরণ থেকে বিরত থাকা জেলের জন্য ইতোমধ্যে খাদ্য সহায়তা হিসেবে বরাদ্দকৃত চাল এসেছে। এসব জেলেদের জন্য ৪০ কেজি করে (বিজিএফ) চাল ৪ মাস বিতরণ করা হয়।
চাঁদপুর নৌ অঞ্চলের নৌপুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান বলেন, চাঁদপুর নৌ সীমানার মধ্যে জেলেদের সঙ্গে সচেতনতামূলক সভা করা হয়েছে। এরপরও যদি কোনো জেলে আইন অমান্য করে নদীতে নেমে জাটকা নিধন করে, তাদের বিরুদ্ধে মৎস্য আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।