এখনো যেভাবে প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ রয়েছে কমলার
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৫ AM , আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৫ AM
রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে আমেরিকায় নারী প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা আবারও শেষ হয়ে গেল। তবে কমলা হ্যারিসের এখনও প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ রয়েছে। জো বাইডেন চাইলে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পেতে পারে আমেরিকা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ইউএসএ টুডে ও নিউইয়র্ক পোস্টসহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হচ্ছে, ডেমোক্র্যাটদের একটি অংশ চাইছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যাতে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তাতে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথ খুলে যাবে কমলার।
আমেরিকার আইনেও এতে কোনো বাধা নেই। আগামী ২০ জানুয়ারি শপথ নেবেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার আগে ক্ষমতায় থাকবেন জো বাইডেন। আইন বলছে, তিনি মারা গেলে বা সরে দাঁড়ালে ভাইস প্রেসিডেন্ট পাবেন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব। এতে আলাদা কোনো ভোটও লাগবে না, কারও বাধাও থাকবে না।
এমনটি হলে আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হবেন কমলা হ্যারিস। প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পাবে আমেরিকা। এ ছাড়া প্রথম অশ্বেতাঙ্গ প্রেসিডেন্টও পাবে দেশটি।
ইউএসএ টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইস্যুটি প্রথম সামনে আনেন কমলা হ্যারিসের সাবেক যোগাযোগ পরিচালক জামাল সিমন্স। গত রোববার সিএনএনের এক প্রোগ্রামে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত ৭১ দিনে কী কী গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটতে পারে?
গাজা, ইউক্রেন ও ন্যাটো ইস্যু নিয়েই সাধারণত মন্তব্য করার কথা ছিল জামাল সিমন্সের। কিন্তু তিনি বললেন ভিন্ন কথা। সিএনএনকে জামাল সিমন্স বলেন, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জো বাইডেন পদত্যাগ করলে কমলা হ্যারিস হতে পারেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট।’
সিমন্স আরও বলেন, ‘জো বাইডেন একজন অসাধারণ প্রেসিডেন্ট। তিনি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তার অনেকগুলোই পূরণ করেছেন। এই মুহূর্তে একটি প্রতিশ্রুতি বাকি আছে, যা তিনি পূরণ করতে পারেন। আর তা হলো, একটি ক্রান্তিকালীন ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠা।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজয়ের জন্য ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিসের বেশকিছু কারণের মধ্যে রয়েছে তাঁর দেরিতে মনোনয়ন পাওয়া। এ বিষয়ে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকেই দুষছেন সাবেক হাউজ স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। পেলোসির মতে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে ডেমোক্রেটিক পার্টি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রার্থী বাছাই করতে পারতো।
বাইডেন নির্বাচনী প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর পর তড়িঘড়ি করে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ায় কমলা হ্যারিস নিজের শক্তিমত্তার প্রমাণ দিতে পারেননি বলে দাবি ন্যান্সি পেলোসির। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক এই স্পিকার আরও বলেন, বাইডেন আরও আগে প্রার্থিতা থেকে সরে এলে কমলা জনগণের আরও কাছে যেতে পারতেন।
এ নিয়ে এবার বেশ কয়েকজন ডেমোক্র্যাটও কথা বলছেন। তারা বলছেন, এবার কমলা হ্যারিসকে প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত বাইডেনের। এতে কূটনৈতিক সম্পর্কের দিক থেকে অনেকটা এগিয়ে থাকতে পারবে ডেমোক্র্যাটরা। আর তাতে আগামী মধ্যবর্তী নির্বাচনে তারা বেশ ভালো কিছু করতে পারবে।
এতে আইনি বাধা না থাকলেও নীতিগত কিছু বাধা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। আর কমলা হ্যারিসও কখনো এ নিয়ে মন্তব্য করেননি। ডেমোক্র্যাটদের উচ্চমহলে এ নিয়ে আলোচনা হয়নি বলেই দাবি করছেন আরেক মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্ট।
বলে নেওয়া ভালো, জো বাইডেনের পদত্যাগের ব্যাপারে এখনো হোয়াইট হাউস থেকে কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। তবে তিনি সরে দাঁড়ালে নতুন ইতিহাস রচিত হতে পারে আমেরিকায়। সেটি হয়তো কমলার জন্য এতটা সুখকর হবে না। কেননা তিনি নির্বাচনে পপুলার ভোটেও জিততে পারেননি।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এভাবে নারী প্রেসিডেন্ট পাওয়া আমেরিকার জন্য ভালো কোনো সংবাদ হতে পারে না। আর কমলা হ্যারিস সেটি হয়তো চাইবেনও না। তবে সময়ই বলে দেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কোন পথে হাঁটবেন।