তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্প

সহায়তায় পাকিস্তানি এক নাগরিকই দিলেন ৩১২ কোটি টাকা

তুরস্ক ও সিরিয়া ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত একটি এলাকা
তুরস্ক ও সিরিয়া ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত একটি এলাকা  © সংগৃহীত

তুরস্ক ও সিরিয়া ভয়াবহ ভূমিকম্পে সব হারানো নাগরিকদের জন্য একাই ৩ কোটি ডলার বা ৩১২ কোটি টাকা দান করেছেন পাকিস্তানি এক নাগরিক। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ওই পাকিস্তানি নাগরিক দেশটিতে তুর্কি দূতাবাসে গিয়ে এই বিপুল টাকা দান করছেন। তবে তিনি তার নাম পরিচয় প্রকাশ করেননি। 

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে খবর প্রচার করেছে তুরস্ক-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ তার টুইটারে বলেছেন, এক অজ্ঞাত পাকিস্তানির উদাহরণ দেখে খুব অনুপ্রাণিত হয়েছি। এ ধরনের পদক্ষেপ পরোপকারের এমন মহান কাজ, যা মানুষকে বিপর্যস্ত পরিস্থিতির মধ্যেও ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস যোগায়।

এছাড়াও গত বৃহস্পতিবার দুই দেশের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তার জন্য তহবিল ও ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহের তদারকির জন্য একটি বিশেষ মন্ত্রীসভা কমিটি গঠন করেছেন শেহবাজের সরকার।

এরপর দেশটির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তহবিল সংগ্রহ অভিযান শুরু করা হয়। শনিবার সারাদেশের এ কার্যক্রম শুরু হলে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে এ অভিযান চলে।

প্রসঙ্গত, তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পে বহু ভবন ধসের ঘটনায় তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তবর্তী ঐ এলাকায় এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২৯ হাজার ১১৭ জন মানুষের। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তুরস্কে মৃত্যু হয়েছে ২৪ হাজার ৬১৭ জনের। একই ঘটনায় সিরিয়ায় এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৫০০ জনের।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর গাজিয়ানতেপের কাছে এ ভূমিকম্প হয়। কম্পন অনুভূত হয়েছে প্রতিবেশী সিরিয়া, লেবানন ও সাইপ্রাসেও।

এএফএডির কর্মকর্তা ওরহান তাতার জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে ৫৭৭৫টি ভবন ধ্বংস হয়েছে, এ পর্যন্ত ২৮৫টি পরাঘাত হয়েছে এবং সব-মিলিয়ে ৪০ হাজান জন আহত হয়েছেন।

আর তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ পর্যন্ত মোতায়েন করা হয়েছে ১৩৭৪০ জন উদ্ধারকর্মী এবং ৪১ হাজারেরও বেশি তাঁবু, এক লাখ বিছানা ও তিন লাখ কম্বল পাঠানো হয়েছে দুর্গত এলাকাগুলোতে।

জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) বলছে, স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে ভূমিকম্পটি শুরু হয়ে প্রায় এক মিনিট স্থায়ী হয়। এর উৎপত্তি গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে ভূপৃষ্ঠের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার (১১ মাইল) গভীরে।

অন্যদিকে জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্স (জিএফজেড) বলছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তি তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কাহরামানমারাসের কাছে ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার (৬ মাইল) গভীরে। সুনামির সম্ভাবনা পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে বলে ইএমএসসি মনিটরিং সার্ভিস জানিয়েছে।

আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আশঙ্কা করছে, মৃতের সংখ্যা বাড়তেই থাকবে। সংস্থার কর্মকর্তাদের অনুমান, নিহতের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়াতে পারে। এই ভূমিকম্পে মোট দুই কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকতে পারে। বিভিন্ন দেশকে দ্রুত দুর্যোগ অঞ্চলে সাহায্য পাঠানোর আহ্বানও জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। 

ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়েছে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা ও দেশটির অন্যান্য শহরের পাশাপাশি পুরো অঞ্চল-জুড়ে। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলেছে, স্থানীয় বাসিন্দারা প্রচণ্ড শীতের মধ্যে তুষারে ঢাকা রাস্তায় নেমে আসতে বাধ্য হয়েছেন ভূমিকম্পের তীব্রতায়। ভূমিকম্পে বহু ভবন ধসে পড়েছে আর এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপে বহু মানুষ আটকা পড়েছে বলেও খবর আসছে।

তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেইমান সোইলু জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে গাজিয়ানতেপ, কাহরামানমারাস, হতাই, ওসমানিয়ে, আদিয়ামান, মালাটিয়া, সানলিউরফা, আদানা, দিয়ারবাকির ও কিলিস-এই ১০টি শহর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, ভূমিকম্পে আলেপ্পো প্রদেশে বহু ভবন ধসে পড়েছে। আর দেশটির হামা প্রদেশের বেসামরিক পরিষেবার একটি সূত্র রয়টার্সকে বলছে, সেখানেও বেশকিছু ভবন ধসে পড়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence