ভাবখানা এমন— বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে বিবস্ত্র; এ আর এমন কি!

আমিনুল ইসলাম
আমিনুল ইসলাম  © সংগৃহীত

পৃথিবীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পত্রিকায় স্থান পায় নিজেদের গবেষণা এবং নানা আবিস্কারের জন্য। আর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আজকাল স্থান পাচ্ছে- ছাত্রী বিবস্ত্র করার ঘটনায়!

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ক্যাম্পাসের ভেতরেই বিবস্ত্র করে ছবি তোলা হয়েছে। ভিডিও করা হয়েছে। মেয়েটি নিজে বলেছে, ছেলেগুলোকে দেখে মনে হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র। পত্রিকার রিপোর্ট গুলোও এমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে। 
এদিকে এই ঘটনার বিচার না করে বিশ্ববিদ্যালয়টি উল্টো ঘোষণা করেছে- ছাত্রীরা রাত ১০টার পর হলে ফিরতে পারবে না! এর চাইতেও অবাক হয়ে লক্ষ্য করছি- এত বড় একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে; অথচ বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসি'র এই নিয়ে তেমন কোন মাথা ব্যথা নেয়। তিনি তার ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা ক্যাম্পাসের ভেতরেই দিতে পারছেন না। অথচ এই মানুষটাই আবার দেশ এবং জাতির নিরাপত্তা নিয়ে পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশনে কথা বলে বেড়ান! উনার তো এই লজ্জা কাঁধে নিয়ে পদত্যাগ করা উচিত ছিল। অবশ্য তিনি পদত্যাগ করবেন কেন! এনারা তো সেই ভিসি গোত্রভুক্ত; যারা বলেছিল- সিলেটের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে যদি পদত্যাগ করতে হয়; তাহলে উনারা সবাই পদত্যাগ করবেন!  

এর চাইতেও অবাক হচ্ছি দেশের মানুষজনকে দেখে। এত বড় একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে। এই নিয়ে কারো তেমন কোন প্রতিবাদ নেই। ভাবখানা এমন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ছবি তোলা হচ্ছে; এ আর এমন কি! মেরে-কেটে ফেলে রেখে তো আর যায়নি!

সেদিন আবার পড়লাম ঢাকার এক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বারবিকিউ পার্টির কথা বলে এক ছাত্রীকে জোর করে বাসায় এনে এরপর নির্যাতন করেছে। সভ্যতার ঠিক কোন পর্যায়ে আমরা আছি; আমার ঠিক জানা নেই। আরেক মেয়ে আমাকে লিখেছে- " ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে দুই মাস জেল খেটে এসছি স্যার।" মেয়েটা আমাকে তার ঘটনা শেয়ার করতে চেয়েছে। আমার উত্তরই দেয়ার সময় হয়নি। আমাকে উত্তর দিতে হবে কেন? দেশে কি সৎ, ভালো শিক্ষকের অভাব পরেছে? যাদের কাছে গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের কথা গুলো শেয়ার করতে পারবে? এ কেমন শিক্ষাঙ্গন গড়ে তুললাম আমরা!

লেখক: ড. আমিনুল ইসলাম
সিনিয়র লেকচারার ক্রিয়েটিভিটি অ্যান্ড ইনোভেশন বিভাগ, এস্তনিয়ান এন্টারপ্রেনারশিপ ইউনিভার্সিটি।


সর্বশেষ সংবাদ