মাত্র ২০০ গ্রাম মাংস দিয়ে কোরবানির ঈদ করলো ২০০ পরিবার

কোরবানির গোশত কাটছে
কোরবানির গোশত কাটছে   © সংগৃহিত

সারাদেশের সঙ্গে সিলেটের বন্যকবলিত অঞ্চলগুলোতেও ঈদ উদযাপন হচ্ছে। ঈদের নামাজ শেষে যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি দিয়েছেন। তবে এসব অঞ্চলে এবার পশু কোরবানির সংখ্যা খুব কম।সারা বছর গরুর মাংস খেতে না পারলেও ঈদ উল আযহার দিন অন্তত সবার ভাগ্য একবেলা হলেও মাংস জুটতো। এবার সেই একবেলাও জুটেনি কারও কারও ভাগ্য। এমনও গ্রাম আছে যেখানে একটি পশুও কোরবানি হয়নি। তাই অনেকে গ্রাম ছেড়ে শহরে এসেছেন একটু মাংস পাবার আশায়। 

রবিবার (১০ জুলাই) দুপুরে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের পুরান লক্ষণশ্রী গ্রামের মনমিলা খাতুন বলেন, বানের কারণে গেরামে এবার কোরবানি কম হইসে। এর লাগি কেউ কোরবানির মাংস পাইছে কেউ পায় নাই। তাই আমরা মাংসের লাগি টাউনও আইছি।

লক্ষণশ্রী গ্রামের জমিলা বিবি বলেন, এই ঈদে পিঠাপুলি করতে পারি নাই। সবকিছু বানের পানিতে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। বসতঘর ছাড়া কিছু নাই। সকালে উঠে গোসল করে টাউন আইছি মাংসের লাগি। দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে মাংস সংগ্রহ করে বিকালে রান্না করে সবাই খাবো।

আরও পড়ুন: ঈদের দিনও গাবতলী হাটে গরু বেচাকেনা চলছে

জেলায় বন্যার ক্ষত এখনও শুকায়নি। কারও বসতঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে, আবার কারও বসতঘরে এখনও কাদা-পানি থাকায় ফিরতে পারেননি। প্রায় সাত হাজার বন্যাদুর্গত মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে ঈদুল আজহা উদযাপন করছেন। যারা কোনোরকেম বাড়ি ফিরতে পেরেছেন, তারা বহু কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।

শহরের বড়পাড়া এলাকার মতলিব মিয়া বলেন, বন্যার কারণে এবার বেশিরভাগ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই পশু কম কোরবানি হয়েছে। গ্রামের তুলনায় টাউন কোরবানি বেশি হয়। এ জন্য আমরা মাংসের জন্য বের হয়েছি।

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিশের সেক্রেটারি বিলাল আহমেদ চৌধুরী ‍সিলেটের বন্যকবলিত একটি গ্রামে গরু কোরবানি করেন। তিনি বলেন, পুরো এলাকাজুড়ে মাত্র একটি গরু কুরবানি। এটা অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। এমন জনপদ আমার পার্শ্ববর্তী এলাকা সেটা কখনোই জানা হতো না। অবহেলিত প্রান্তিক এই অঞ্চলে একটি দ্বীনি প্রতিষ্ঠান হওয়ার সুবাদে আজ ১৬০ পরিবারে অন্তত ২০০ গ্রাম করে গোশত পাবে। 

তিনি আরও বলেন, অন্তত তিনটি গরু  কুরবানী করলে ১ কেজি করে পৌছানো যেতো। কিন্তু সেটা করা যায় নি। মাত্র পয়ত্রিশ হাজার টাকায় একটি গরু কেনা হয়েছে। ১৬০ পরিবারের তালিকা আগেই করা হয়েছিল । উপস্থিত ২০০ পরিবারের বেশি। মানুষের চোখ-মুখে তাকিয়ে যারপরনাই কষ্ট পেয়েছি। যাইহোক এটুকুর জন্যই রব্বে কা'বার দরবারে শুকরিয়া জানাচ্ছি। 


সর্বশেষ সংবাদ