সীতাকুণ্ডের বিস্ফোরণ মনে করিয়ে দিলো বৈরুতের ঘটনা

সীতাকুণ্ডের বিস্ফোরণ মনে করিয়ে দিলো বৈরুতের ঘটনা
সীতাকুণ্ডের বিস্ফোরণ মনে করিয়ে দিলো বৈরুতের ঘটনা  © টিডিসি ফটো

২০২০ সালের ৪ঠা আগস্ট। হঠাৎ এক বিস্ফোরণে কেঁপে উঠে  লেবাননের বৈরুত নৌবন্দর । বিস্ফোরণের সাথে সাথে সেখানে থাকা একটা কন্টেইনারে আগুন ধরে যায়। পরে আগুন একটা থেকে আরেকটি কন্টেনারে ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের কয়েক হাজার কর্মী এসেও আগুন নেভাতে পারছিলো না। কন্টেইনারের মুহুর্মুহু বিস্ফোরণে কেঁপে উঠছিলো পুরো বৈরত শহর। শেষপর্যন্ত প্রায় ৩০ ঘন্টায় শতাধিক কন্টেইনার জ্বালিয়ে ক্ষ্যান্ত দেয় সর্বনাশা সেই আগুন। ওই  দুর্ঘটনায় ২ শতাধিক মানুষ মারা যায়। আর আহত হয় ৬ হাজার মানুষ। পরে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বন্দরের একটা গুদামঘরে রাখা  অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট থেকে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে।

সীতাকুণ্ডের বেসরকারি কন্টেইনার ডিপোতে শনিবারের রাতের বিস্ফোরণের ঘটনা অনেকটা বৈরুতের ঘটনায় মনে করিয়ে দিচ্ছে।

এদিন রাতে চট্টগ্রাম নগরী থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে ভাটিয়ারীর কদমরসুল এলাকায় বিএম ডিপো নামের এক কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। এরপর রাসায়নিকের কনটেইনারে একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটতে থাকে। কেঁপে ওঠে ওই এলাকা।

এই আগুন ও বিস্ফোরণে অন্তত ৪২ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে শতাধিক মানুষ। আগুন নিয়ন্ত্রণে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষকে।

দুই দুর্ঘটনায় প্রায় একই রকম ঘটনা ঘটেছে। ভাটিয়ারীতেও উড়ে গেছে ডিপোর ছাউনি। চারদিকে শুধু ধুয়ার কুণ্ডলী।

আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে আগুন: দুর্ঘটনা নাকি হত্যাকাণ্ড— প্রশ্ন স্থানীয়দের

বৈরুতের বিস্ফোরণের পেছনে যেমন রাসায়নিক দ্রব্য, ভাটিয়ারীতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়াতেও বড় ভূমিকা রেখেছে রাসায়নিক দ্রব্য হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড।

হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ছাড়া আরও কিছু রাসায়নিক সেখানে থাকতে পারে বলে ধারণা ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষের।

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আনিসুর রহমান বলেন, ডিপোর কর্মকর্তাদের বরাতে আমরা জানতে পেরেছি, কনটেইনারগুলোতে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ছিল। তবে প্রথমে আগুন নেভাতে আসা ফায়ার সার্ভিসকর্মীদের এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের কেউ অবহিত করেনি।

কী ঘটেছিল বৈরুতে

বন্দর এলাকার ওই বিস্ফোরণে পুরো বৈরুত শহর ভূমিকম্পের মতো কেঁপে উঠেছিল। ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, বৈরুতের বন্দর এলাকা থেকে বড়ু গম্বুজ আকারে ধোঁয়া উড়ছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে বিকট বিস্ফোরণে গাড়ি, ভবন উড়ে যায়।

যে স্থানটিতে বিস্ফোরণ ঘটেছে, সেখানে বন্দরের গুদাম ছিল। এতে মজুত ছিল অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। গুদামে হাজার হাজার টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের ঝুঁকি নিয়ে লেবাননের কর্মকর্তারা আগে থেকেই জানলেও কোনো ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ রয়েছে।

আন্তর্জাতিক একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিস্ফোরণের জন্য দায়ী অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট আসলে লেবাননের নয়, বরং রাশিয়ার মালিকানাধীন একটি পণ্যবাহী জাহাজে করে এগুলো লেবাননে পৌঁছেছিল।

দুর্ঘটনার ছয় বছরেরও বেশি সময় আগে মোজাম্বিকে যাওয়ার পথে রুশ জাহাজ ফুটো হয়ে লেবাননের রাজধানী বৈরুতের বন্দরে আশ্রয় নেয়। এতে বহন করা হচ্ছিল ২ হাজার টনের বেশি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। সার বানাতে কিংবা বোমা তৈরির কাজে ব্যবহার হয় এই রাসায়নিক।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence