সীতাকুণ্ডে আগুন: দুর্ঘটনা নাকি হত্যাকাণ্ড— প্রশ্ন স্থানীয়দের

সীতাকুণ্ডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
সীতাকুণ্ডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড  © ফাইল ছবি

সীতাকুণ্ডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড শুধুই দুর্ঘটনা নাকি হত্যাকাণ্ড— এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয়দের মনে। কেননা কাল রাত থেকে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে মালিকপক্ষের কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। এদিকে মালিক পক্ষের অসহযোগিতার কারণে দ্রুত আগুন নেভাতে পারেননি বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন।

তিনি বলেন, ‘মালিক পক্ষ জানেন কনটেইনার ডিপোতে কোথায় কোথায় কেমিক্যাল আছে, যদি তারা আমাদের সঠিক তথ্য দিতেন, তাহলে খুব দ্রুত আগুন নেভাতে পারতাম। তারা আমাদের সহযোগিতা করেননি।’

এর আগে ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানিয়েছে, আগুন লাগার পর তাদের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাদেরকে কন্টেইনারে দাহ্য পদার্থ থাকার কথা জানানো হয়নি। তাদের বলা হয়েছিল, ওই কন্টেইনারে গার্মেন্টস পণ্য রয়েছে। এ কারণেই তারা আগুন নেভাতে পানি ছিটিয়েছিলেন। দাহ্য পদার্থের বিষয়ে অবগত হলে তারা পানির পরিবর্তে ফোম ব্যবহার করতো। এতে বিস্ফোরণ ঘটতো না এবং ক্রমান্বয়ে এতগুলো কন্টেইনারে আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়তে পারতো না।

স্থানীয় এক তরুণ মাসুম রহমান বলেন, কনটেইনার ডিপোতে রাসায়নিক দ্রব্যের মজুদ সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট পরিদপ্তর কিছু জানতো না। সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার হলো, প্রাথমিক পর্যায়ে আগুন লাগার পর ডিপো কর্তৃপক্ষ ফায়ার সার্ভিসকে জানায় ডিপোতে শুধু রপ্তানিযোগ্য পোশাক আছে। এই কারণে ফায়ার সার্ভিস ‌ক্যামিকেল এক্সপ্লোশনের সম্ভাব্যতা সম্পর্কে জানতেই পারেনি। তাই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও সতর্কতা অবলম্বন করেনি। সীতাকুণ্ডে এটি কোন দূর্ঘটনা ঘটেনি, যা হয়েছে সেটা হলো হত্যাকাণ্ড। আমরা এর বিচার চাই।

তবে রোববার বেলা সাড়ে ১২টার পর বিএম কনটেইনার ডিপোর মালিকপক্ষের প্রতিনিধি কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক শহীদ উদ্দিন সংবাদ মাধ্যমে এ বিষয়ে তাদের অবস্থান জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন।

মালিকপক্ষের প্রতিনিধি শহীদ উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুন ও হতাহতের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। এ মুহূর্তে নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আহত হয়েছেন যারা তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।’ 

যারা নিহত হয়েছেন তাদের প্রত্যেকের পরিবারকে সর্বোচ্চ এবং যারা আহত হয়েছেন তাদেরও সম্পূর্ণ চিকিৎসা ব্যয় গ্রহণ করা হবে— জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের দায়িত্ব গ্রহণের ঘোষণা দিচ্ছি। আমাদের কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনসহ সরকারের গঠিত তদন্ত কমিটিকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার ঘোষণা দিয়েছে। 

এদিকে মালিকপক্ষ থেকেও এটি দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা বা কোনো প্রতিপক্ষ দ্বারা ইচ্ছাকৃত অনিষ্টসাধন (স্যাবোটাজ) ঘটিয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।

 


সর্বশেষ সংবাদ