সংসদে তোপের মুখে বাণিজ্যমন্ত্রী বললেন: ব্যবসায়ী হওয়া কি তার অপরাধ?

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি  © টিডিসি ফটো

নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে নিয়ে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের সদস্যদের কঠোর সমালোচনা ও তোপের মুখে পড়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সংসদে বাণিজ্য সংগঠন বিল পাসের প্রক্রিয়ার সময় বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী একজন অভিজ্ঞ ব্যবসায়ী হয়েও সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

আরও পড়ুন: রমজানে বেড়েছে যানজট, হয়রান রাজধানীবাসী

জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন,ব্যবসা করি আজকে ৪০ বছর, রাজনীতি করি ৫৬ বছর। ৬৬ সাল থেকে শুরু করেছি কিন্তু রাজনীতিবিদ হতে পারি নাই। এই ঢাকা শহরে অর্ধেকের সময় ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম ৭৩ সালে। ৬৯ সালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমার, উকিল যখন পার্লামেন্ট মেম্বার হয়, ডাক্তার যখন হয় তাকে কেউ বলে না যে উকিল কেন আসছে? কিন্তু আমি ব্যবসায়ী বলে আমার অপরাধ। তিনি প্রশ্ন রাখেন, ব্যবসায়ী হওয়া কি তাঁর অপরাধ?

বিলের ওপর আলোচনাকালে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, সিন্ডিকেটের স্বার্থে বিলটি আনা হয়েছে। এর মাধ্যমে সিন্ডিকেটকে উৎসাহী করা হচ্ছে।

বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদ বলেন, গ্যাসের অভাবে ঢাকায় হাহাকার চলছে। গ্যাসের দাম, তেলের দাম—সব বাড়ানো হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কিছু উদ্যোগ সরকার নিয়েছে। কিন্তু সেখানে স্বচ্ছতার অভাব আছে। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা জনপ্রতিনিধি হয়ে সম্পদের পাহাড় গড়ছেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। ক্ষমতার বলয়ে থেকে সিন্ডিকেট বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। তারেক রহমান লন্ডন থেকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করছেন, বিএনপির কারণে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে—এসব অপ্রাসঙ্গিক কথা না বলে সরকারকে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে।

বিএনপির সংরক্ষিত আসনের রুমিন ফারহানা বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে হইচই হলো। ১৫ দিনে সিন্ডিকেট এক হাজার কোটি টাকা উঠিয়ে নিয়েছে। সিন্ডিকেট হলো সরকার। সরকার আর সিন্ডিকেটের মধ্যে পার্থক্য নেই।

পীর ফজলুর রহমান বলেন, আজকে সংবাদপত্রে এসেছে তিনি (বাণিজ্যমন্ত্রী) গতকাল বাজারে গিয়েছেন এবং তিনি ২৮ টাকা কেজিতে ৫ কেজি পেঁয়াজ কিনেছেন। এখন মন্ত্রী যদি ঘোষণা দিয়ে একটু কাঁচা বাজার, সবজি বাজারসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে যেতেন মানুষও ওই বাজারে যেতে পারত এবং মন্ত্রীর মত কম দামে জিনিস কিনতে পারত। কারণ উনি যতই ভ্যাট কমিয়ে মূল্য কমানোর চেষ্টা করছেন, প্রকৃতপক্ষে বাজারে পণ্যের দাম অত কমে নাই।

আরও পড়ুন: বিসিএসে উত্তীর্ণ হলেও বিএনপি করে বলে চাকরি হচ্ছে না

মন্ত্রী বলেন, সরকার কোথাও ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে না। ব্যবসায়ীদের সহায়তা করে। যে কেউ চাইলে তেল আমদানি করতে পারে। সরকার সিন্ডিকেট—এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। তিনি বলেন, একটি টিসিবির ট্রাক থেকে আড়াই শ মানুষকে পণ্য দেওয়া হয়। ছবি দেখানো হয় পণ্যের জন্য মানুষ দৌড়াচ্ছে। ৩০০ জন লাইনে দাঁড়ালে ৫০ জন পাবেন না। বাকি ২৫০ জন যে পণ্য পেয়েছেন, সেটা দেখানো হয় না।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সিন্ডিকেট বলে যাঁদের কথা বলা হচ্ছে, তাঁরা কেউ রাজনীতি করেন না, তাঁরা কেউ এমপি নন। সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী প্রতিনিয়ত ফলোআপ করছেন।


সর্বশেষ সংবাদ