বাঁশের সাঁকোয় টোল আদায়!
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২০, ০১:২৯ PM
বাঁশের সাঁকো তৈরী করে সেটি পারাপারের জন্য জনপ্রতি ৫ টাকা করে টোল আদায় করার অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ যাতায়াতের বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় এক শ্রেণীর ব্যক্তি মানুষের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে এই ব্যবসা করছে। অন্যদিকে টোল আদায়কারীদের দাবি মানুষের সেবা দিয়েই তারা টাকা নিচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাজীপুরের কাশিমপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকার মানুষের চলাচলের সেতু নেই। সেতু না থাকায় ইসলামপুরের ভাঙ্গাব্রিজের পাশে বাঁশের সাঁকো দিয়ে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে বিভিন্ন রোডে যাতায়াত করে এলাকার শতশত মানুষ। এই সাঁকো পার হতে তাদের ৫ টাকা করে দিতে হয়। অথচ ইসলামপুর এলাকা গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন থেকে মাত্র পাঁচ-ছয় কিলোমিটার দূরে। একটি সেতু নির্মাণ এই এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি হলেও তা এখনো নির্মাণ হয়নি।
ইসলামপুরের বাসিন্দারা ডংকাবিলের ভাঙ্গাব্রিজের পাশ দিয়ে দীর্ঘদিন নৌকায় পারাপার হতেন। স্থানটি এখন ভাঙ্গাব্রিজের খেয়াঘাট হিসেবে পরিচিত। ওই ঘাটের দু’পারে ইসলামপুর, নাওজোড়, কড্ডানান্দন ও কাশিমপুরের বারেন্ডা, এনায়েতপুর, বাগবাড়ি, নরসিংহপুর, সারদাগঞ্জ, হাতিমারা, ধনঞ্জয়খালি, নয়াপাড়া, নদীরপাড়সহ ১০টি এলাকা রয়েছে। বহু বছর আগে সেখানে একটি বক্স কালভার্ট ছিল। সেটি ভেঙে যাওয়ার পর আর সেখানে ব্রিজ বা কালভার্ট করা হয়নি। ওই স্থানে দীর্ঘদিনেও সেতু নির্মিত না হওয়ায় এলাকাগুলোর প্রায় ২০ হাজার মানুষকে সাঁকো দিয়ে পারাপার হয়ে বিভিন্ন এলাকায় যেতে হয়।
কাশিমপুর এলাকার বাসিন্দা অটোচালক আবদুল হাই বলেন, এলাকার মানুষ ভোট দিয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত করেছেন। তখন এলাকার মানুষদের কথা দিয়েছিলেন নির্বাচিত হলে একটি ব্রিজ করে দেবেন। কিন্তু দুই বছর হয়ে গেল এখন পর্যন্ত ব্রিজ করার কোনো নাম নেই। উল্টো বাঁশের সাঁকো দিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে।
কাশিমপুর এলাকার বাসিন্দা মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘আগে নৌকায় মানুষ পারাপার করতেন। এখন কয়েকজন মিলে একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছেন। সেই সাঁকো দিয়েই দুইপাড়ের মানুষ যাতায়াত করে থাকেন। তবে এর জন্য জনপ্রতি পাঁচ টাকা করে টোল দিতে হয়। টোল আদায়কারীরা বলছেন- এটা খেয়া পারাপারের টাকা।’
ভাঙ্গাব্রিজের পাশের সাঁকো তৈরি করে টোল আদায়কারী রনি মিয়া বলেন, আগে সন্ধ্যা হলে এ পাথে মানুষ চলাচল করত না। আমরা এখানে লাইটের ব্যবস্থা করেছি। এখন মানুষ চলাচল করছেন। জনপ্রতি পারাপারের জন্য নেয়া হচ্ছে ৫ টাকা। এটি বেশি মনে হলেও আমরা তো সেবা দিয়েই নিচ্ছি।
ইজারাদার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন থেকে এক বছরের জন্য ঘাটটি ইজারা নেয়া হয়েছে। নৌকায় মানুষের সমস্যা হবে চিন্তা করে সেখানে বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরি করা হয়েছে।’ তবে এলাকার অন্য মানুষের মতো তিনিও সেখানে সেতু তৈরির দাবি জানান।
এ ব্যাপারে গাজীপুর সিটির ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সোয়েব আল আসাদের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।