সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীর মামলার বিষয়ে সরকারকে জাতিসংঘের আহ্বান

জাতিসংঘ
জাতিসংঘ  © সংগৃহীত

বিগত আওয়ামী লীগ শাসনামলে সাংবাদিক, আইনজীবী, ট্রেড ইউনিয়নকর্মী, সুশীল সমাজকর্মী এবং মানবাধিকার সুরক্ষাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো প্রত্যাহারের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর)।

সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার অধিকারসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন দ্বারা সুরক্ষিত আচরণ বিধির প্রেক্ষিতে সাংবাদিক, আইনজীবী, ট্রেড ইউনিয়ন কর্মী, সুশীল সমাজকর্মী এবং অন্য মানবাধিকার সুরক্ষা কর্মীদের বিরুদ্ধে করা সব বিচারাধীন ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় গত ১২ ফেব্রুয়ারি জেনেভা অফিস থেকে ‘২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসে বাংলাদেশে বিক্ষোভের সাথে সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন’ শীর্ষক তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

ওএইচসিএইচআর বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে সাংবাদিক, রাজনৈতিক দলের সমর্থক, ট্রেড ইউনিয়ন কর্মী, নাগরিক সমাজের কর্মী এবং মানবাধিকার সুরক্ষা কর্মীদের ওপর যেকোনো বেআইনি নজরদারি অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দিতে বলেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘প্রতিশোধমূলক সহিংসতা থেকে তাদের কার্যকরভাবে রক্ষা করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করুন এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির ওপর আক্রমণ, নাগরিক ক্ষতির দাবিসহ এই ধরনের হামলার অপরাধীদের তদন্ত ও বিচার করুন।’

জাতিসংঘের অধিকার অফিস রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক নাগরিকদের ওপর নজরদারি সম্পর্কে একটি স্বাধীন গণতদন্ত শুরু করার এবং তদন্তের ফলাফল প্রকাশ করার প্রস্তাব করেছে।

প্রতিবেদনে জাতীয় টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র বন্ধ করার এবং নজরদারি কার্যক্রম পরিচালনাকারী নিরাপত্তা সংস্থাগুলো বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের বাধ্যবাধকতা কঠোরভাবে মেনে কাজ করছে তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ওএইচসিএইচআর বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের অস্পষ্ট বিধানগুলো সংশোধন করার সুপারিশ করেছে, যা নিয়ন্ত্রণহীন নজরদারির ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল।

জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী স্থগিত রেখে ইন্টারনেট বন্ধের উপর অবিলম্বে স্থগিতাদেশ আরোপ করা হোক, যাতে নিশ্চিত করা যায় যে, ইন্টারনেট বন্ধ বা নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশন ব্লক করার বিষয়টি সুস্পষ্ট মানদণ্ড, স্বচ্ছতা ও উপযুক্ত বিচারিক এবং অন্যান্য স্বাধীন তত্ত্বাবধান সাপেক্ষ বিষয় এবং শুধু একটি বৈধ উদ্দেশ্যে ও একটি গণতান্ত্রিক সমাজে প্রয়োজনীয় সুষমভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে।’ ওএইচসিএইচআর ২০০৯ সালের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন সংশোধন করারও পরামর্শ দিয়েছে, যাতে কমিশন প্যারিস নীতিমালা সম্পূর্ণভাবে প্রতিপালিত হয় এবং এর প্রতি জনসাধারণের আস্থা জোরদার করা যায়।

প্রতিবেদনে নাগরিক সমাজসহ বাংলাদেশের সব প্রাসঙ্গিক স্টেকহোল্ডারকে প্রকৃত ও গ্রহণযোগ্য সম্পৃক্ততার মাধ্যমে একটি স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়ায় কমিশনের স্বাধীন সদস্যদের নিয়োগ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সুস্পষ্ট করতে হবে যে কমিশনের কাজের মধ্যে সামরিক, পুলিশ, আধাসামরিক ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ ছাড়া কমিশনকে কার্যকরভাবে, নিরপেক্ষভাবে ও স্বাধীনভাবে কাজ সম্পাদন করার জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক ও মানবসম্পদ সরবরাহ করা হয়েছে।’ প্রতিবেদনে বিশেষ করে সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩, অফিশিয়াল গোপনীয়তা আইন, সন্ত্রাসবিরোধী আইন এবং দণ্ডবিধির ফৌজদারি মানহানির বিধান অনুযায়ী সমালোচনামূলক মিডিয়া রিপোর্টিং বা নাগরিক ও রাজনৈতিক ভিন্নমত দমন করার জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত ফৌজদারি বিধানের অধীনে গ্রেপ্তার, তদন্ত বা বিচারের ওপর তাৎক্ষণিক স্থগিতাদেশ আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।

সূত্র : বাসস


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence