ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আহত খোকনকে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হলো রাশিয়ায়
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৪০ PM , আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৪০ PM

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের সময় গত ৫ আগস্ট রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হওয়া খোকন চন্দ্র বর্মণকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাশিয়ায় পাঠানো হয়েছে। আজ শুক্রবার ভোরে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে রাশিয়া উদ্দেশে রওনা হন তিনি।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খোকনকে রাশিয়ায় পাঠানো হয়।
জানা গেছে, গুলির আঘাতে খোকনের মুখের একটি বড় অংশ হাড়সহ নষ্ট হয়ে যায়। তাঁর ওপরের ঠোঁট, মাড়ি, নাক, তালু–এগুলোর এখন আর কোনো অস্তিত্ব নেই।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আঘাতের ধরন গুরুতর এবং আহত খোকনের মুখ পুনর্গঠনের প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল একটি কেস হওয়ায় খোকনের চিকিৎসার ব্যাপারে বাংলাদেশ ছাড়াও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যোগাযোগ করা হলে তাদের অপারগতার পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ চেষ্টার পর এক পর্যায়ে এই বিষয়ে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর ইউনিভার্সিটি ক্লিনিক অব লোমোনোসোভ হাসপাতাল খোকনের মুখ পুনর্গঠনের চ্যালেঞ্জটি নিতে সম্মত হয়েছে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাশিয়ায় প্রশিক্ষিত সার্জন ডাক্তার মো. মাহমুদুল হাসানসহ শুক্রবার ভোর ৪টা ২৫ মিনিটে খোকনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাশিয়া পাঠানো হয়।
খোকনকে প্রাথমিকভাবে ওই হাসপাতালে প্রাক মূল্যায়ন করা হবে এবং থ্রি-ডি অ্যানিমেশনের মাধ্যমে তাঁর চেহারাকে পূর্বের অবস্থায় ফেরত আনার জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি মডেল দ্বার করানো হবে। মডেল অনুযায়ী চেহারা পুনর্গঠনের জন্য মূল সার্জারি মার্চ মাসের ২০ তারিখ বা তার কাছাকাছি সময়ে শুরু হবে।
মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যে কর্মকাণ্ড অব্যাহত আছে, তারই ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে ৩৮ জন আহতকে সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে আহতদের মধ্যে ৩ জন চিকিৎসা শেষে ফিরে এসেছেন। এ ছাড়া বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী আহতদের মধ্যে যাদের উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন তাদের বিদেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান আছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে জুলাই আন্দোলনে আহত ১৪ হাজারের বেশি ছাত্র-জনতাকে বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৬ টি দেশ (থাইল্যান্ড, চীন, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর) থেকে আসা বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা হাজারের বেশি আহতকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার মূল্যায়ন করেছেন। ক্ষেত্রবিশেষে তাঁরা আন্দোলনে আহতদের ওপর সার্জারি করেছেন।