ঘুষ ও অবৈধ ভিসা বাণিজ্যের অভিযোগে ইতালির দূতাবাসের কর্মী গ্রেপ্তার
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:১৪ AM , আপডেট: ৩০ নভেম্বর -০০০১, ১২:০০ AM

বাংলাদেশে ইতালির দূতাবাসের এক কর্মীকে ঘুষ ও অবৈধ ভিসা বাণিজ্যের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইউরোপের সংবাদমাধ্যম ব্রাসেলস সিগন্যালের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি ঘুষের বিনিময়ে অবৈধভাবে ভিসা ইস্যু ও পাচারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি ব্রাদার্স অব ইতালি (এফডিআই) পার্টির এমপি এবং ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য আঁদ্রে ডি গুসেপ্পিকে ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাকে ২০ লাখ ইউরো এবং প্রতি অভিবাসীর ভিত্তিতে আয়ের একটি অংশ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে এই ঘুষের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন দি গুসেপ্পে এবং পুরো বিষয়টি রেকর্ড করে প্রসিকিউটরদের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই তদন্তের মাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
তদন্তে জানা যায়, বাংলাদেশের একজন উদ্যোক্তা ও রোমে একটি রেস্তোরাঁর মালিক অবৈধভাবে কাজের জন্য ভিসা বিক্রির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার সঙ্গে ঢাকায় ইতালি কনস্যুলার অফিসের তিনজন কর্মকর্তার যোগসাজশ ছিল। তাদের মধ্যে দুইজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হলেন—বাংলাদেশে ইতালির দূতাবাসের ভিসা বিভাগের প্রাক্তন প্রধান এবং এক প্রাক্তন কর্মকর্তা, যিনি ঢাকায় ভিসা প্রসেসিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন এবং পরবর্তীতে তুরস্কে বদলি হন।
প্রসিকিউটরদের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, সন্দেহভাজন কর্মকর্তারা নগদ অর্থ, বিলাসবহুল ইলেকট্রনিকস, দামি ঘড়ি, দুবাই ভ্রমণের খরচ, এমনকি ব্যক্তিগত বিমান টিকিটের বিনিময়ে অবৈধভাবে ভিসা অনুমোদন করতেন। অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশি ভিসা গ্রহীতাদের ১৫ হাজার ইউরো পর্যন্ত পরিশোধ করতে বাধ্য করা হয়েছে, যদিও ভিসার প্রতিশ্রুত কাজের কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। অনেক ক্ষেত্রে অস্তিত্বহীন কোম্পানির নামে ভিসার আবেদন করা হতো, যা রোমের অভিবাসন ডেস্কের চেকিংয়ের অভাবে ধরা পড়েনি। সেখানে ভিসা আবেদন যাচাইয়ের জন্য আধুনিক কম্পিউটার সিস্টেম ব্যবহার করা হয় না, ফলে নকল বা ভুয়া নথি প্রদর্শনের সুযোগ পেয়েছে অসাধু চক্র।
তদন্তে রোমের কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ার পর, ইতালির কর্তৃপক্ষ ১৯ ফেব্রুয়ারি এই দুর্নীতির অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করে। আটককৃতদের মধ্যে দুইজন সরকারি কর্মকর্তা গৃহবন্দি রয়েছেন, আর দুই বাংলাদেশিকে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার দায়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এই চক্রের মাধ্যমে বহু বাংলাদেশি অভিবাসী প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে। ইতালির প্রসিকিউটররা এই ঘটনার তদন্ত আরও গভীরভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন এবং ভিসা বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য ব্যক্তিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছেন।