উত্তরায় দম্পতির ওপর হামলা : চক্রের সবাই গ্রেপ্তার

চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ
চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ  © সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরায় দম্পতি মেহেবুল হাসান (৩৭) ও তার স্ত্রী নাসরিন আক্তার ইপ্তিকে (২৮) ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি হামলার ঘটনায় জড়িত চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত তিনজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।

গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন মো. মোবারক হোসেন (২৫), রবি রায় (২২), মো. আলফাজ মিয়া ওরফে শিশির (২২), সজীব (২০) ও মেহেদী হাসান সাইফ (২৪)।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

পুলিশ জানায়, ‘বেপরোয়া’ বাইক চালানোর প্রতিবাদ করায় রাজধানীর উত্তরায় মেহেবুল হাসান ও তার স্ত্রী নাসরিন আক্তার ইপ্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে সরাসরি আঘাত করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। তাদের সবাইকে শনাক্ত এবং গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

উত্তরা পশ্চিম থানা সূত্রে জানা যায়, সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাত আনুমানিক সোয়া ৯টার দিকে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ সংবাদ পায়, উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের ৯ নম্বর রোডে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এক দম্পতিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাচ্ছে। পরে পুলিশের একটি টহল টিম তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জনগণের সহায়তায় ঘটনায় জড়িত মো. মোবারক হোসেন ও রবি রায়কে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নাসরিন আক্তার ইপ্তি বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ৯টার দিকে মেহেবুল হাসান ও নাসরিন আক্তার ইপ্তি দম্পতি উত্তরা পশ্চিম থানাধীন আমির কমপ্লেক্স থেকে কেনাকাটা করে বাসায় ফিরছিলেন। এ সময় উক্ত স্থানে তিন ব্যক্তি দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে বিকট শব্দ করে দ্রুত গতিতে এলোমেলোভাবে চালিয়ে যাওয়ার সময় সামনে থাকে একটি রিকশাকে ধাক্কা দেয়। তখন রিকশায় চার বছর বয়সী একটি শিশু তার মায়ের সঙ্গে ছিল। শিশুটির বাবা রিকশা থেকে নেমে মোটরসাইকেল চালক গ্রেপ্তার আসামি মো. মোবারক হোসেনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান। এ সময় রিকশার পেছনে থাকা ভুক্তভোগী দম্পতি তাদের ঝামেলা করতে নিষেধ করেন। পরে রিকশার যাত্রীরাও চলে যায়। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলে থাকা তিনজন মেহেবুল হাসানের সঙ্গে তর্ক শুরু করে এবং তাকে মারধর শুরু করে। মারতে মারতে তারা বলতে থাকে, ‘আমাদের চিনিস? আমরা কে?’

পরে ভুক্তভোগী দম্পতি আশপাশের লোকজনের সহযোগিতায় আক্রমণকারী একজনকে ধরে ফেলে ও তার মোটরসাইকেল আটক করে। এ সময় সঙ্গে থাকা একজন ফোন করে আরও কয়েকজন সহযোগীকে ডেকে নিয়ে আসে। তারা দেশীয় অস্ত্র রামদাসহ ঘটনাস্থলে এসে সবাইকে ভয় দেখায় এবং রামদা দিয়ে মেহেবুল হাসানকে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে। এ সময় নাসরিন আক্তার ইপ্তি তার স্বামীকে বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করলে সন্ত্রাসীরা তাকেও রামদা দিয়ে আঘাত করে। এতে তারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হন। খবর পেয়ে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের টহল টিম ঘটনাস্থলে এসে জনগণের সহায়তায় মোবারক হোসেন ও রবি রায়কে আটক করে। এদিকে পুলিশ আহত দম্পতিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে তারা সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনায় ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ক্ষিপ্ত হয়ে দুই যুবক ওই দম্পতিকে রামদা দিয়ে আঘাত করছে। এ সময় জীবন বাঁচাতে ওই নারীকে হাত জোড় করতেও দেখা গেছে।

উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর বলেন, আহত দম্পতি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন, তারা শঙ্কামুক্ত। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নাসরিন আক্তার ইপ্তি সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করেছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।


সর্বশেষ সংবাদ