আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমা

ইজতেমা ময়দান
ইজতেমা ময়দান  © সংগৃহীত

টঙ্গীর তুরাগ তীরে লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে এবারের ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমা। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বাদ মাগরিব ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা উর্দু ভাষায় আমবয়ান করেন, যা বাংলায় তরজমা করেন মাওলানা জুবায়ের।

সরকারিভাবে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ইজতেমা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তাবলিগ জামাতের নিয়ম অনুযায়ী দিন ও তারিখ পরিবর্তন হয় প্রতিদিন মাগরিবের পর। সেই হিসেবে আজ থেকেই শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা।

পুলিশ ও ইজতেমার আয়োজকদের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর প্রথমবারের মতো তিন পর্বে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে প্রতিবছর দুই পর্বে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হতো। তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বের কারণে এ বছরই প্রথম তিন পর্বে ইজতেমা আয়োজন করা হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমার আয়োজন করছেন শুরায়ি নেজাম (মাওলানা জুবায়ের) অনুসারীরা। এ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লাখো মুসল্লি টঙ্গীর তুরাগ তীরে সমবেত হয়েছেন।

গত দুই দিন ধরে মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেন। বৃহস্পতিবার বিকেলের মধ্যেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় ইজতেমার ময়দান ও আশপাশের এলাকা। ইজতেমা উপলক্ষে পুলিশ প্রশাসন এবার নিরাপত্তা জোরদার করেছে। সিসি ক্যামেরা, ড্রোন, চেকপোস্টসহ ডিবি পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব, আনসার ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাও নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়াও মুসল্লিদের চিকিৎসার জন্য অস্থায়ী চিকিৎসা ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।

আগামী ২ ফেব্রুয়ারি সকালে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে প্রথম পর্ব। এরপর ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরায়ি নেজাম (মাওলানা জুবায়ের) অনুসারীরা দ্বিতীয় পর্বেও অংশ নেবেন। ৫ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে মাওলানা জুবায়ের অনুসারীদের বিশ্ব ইজতেমা। পরে তারা প্রশাসনের কাছে ইজতেমা ময়দান হস্তান্তর করবেন।

এরপর আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে মাওলানা সাদ অনুসারীদের বিশ্ব ইজতেমা। ১৬ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ২০২৫ সালের বিশ্ব ইজতেমা।

মাওলানা জুবায়ের অনুসারী মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান জানান, বাদ মাগরিব ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা উর্দু ভাষায় আমবয়ান করেন। এর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা। শুরায়ি নেজাম অনুসারীদের আয়োজনে ইজতেমায় লাখো মানুষ অংশগ্রহণ করেছেন। এছাড়াও মুসল্লিদের আগমন অব্যাহত রয়েছে।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসো আরেফিন জানান, জেলা প্রশাসন বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক কর্মকাণ্ড সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষে বিভিন্ন বিভাগের কাজের সমন্বয় করে থাকে। বিদেশি মেহমানদের আবাসস্থল নির্মাণের নিমিত্তে টিন সরবরাহ, বিভিন্ন দফতরের কন্ট্রোল রুমের স্থান নির্ধারণ ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকার পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা বিভাগীয় প্রশাসনের দিক নির্দেশনায় বিভিন্ন কার্যাদি তদারকি করা হচ্ছে। সর্বোপরি বিশ্ব ইজতেমার সকল দিক জেলা প্রশাসন পর্যবেক্ষণ করছে, যখন যেখানে যা প্রয়োজন সেগুলোর ব্যবস্থা করছে।

উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সাল থেকে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে মুসলমানরা তাবলিগ জামাতের এই সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন।


সর্বশেষ সংবাদ