কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে যে পরিকল্পনা জানালেন তারেক রহমান

তারেক রহমান
তারেক রহমান  © সংগৃহীত

বাংলাদেশে ইউনিয়ন আছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজারেরও বেশি। আগামী ৩ মাস পর্যন্ত দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে কৃষক দলের নেতৃত্বে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে কৃষি সংক্রান্ত সমস্যাগুলো জানার চেষ্টা করা হবে। পরে জনগণের সমর্থনে বিএনপি সরকার গঠনের পর কৃষকদের সেসব সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করা হবে। কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ নানা পরিকল্পনার কথা উত্থাপন করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। 

সম্প্রতি রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কর্মসূচি উদ্বোধন ও আলোচনা সভায় তারেক রহমান কৃষি নিয়ে তার পরিকল্পনা তুলে ধরেন। কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে ১০ নভেম্বর থেকে আগামী ৩ মাস পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে বলে জানান এই নেতা।

কৃষকের পানির সুবিধা, পানির সংরক্ষণ ও মাটির নিচে পানির ব্যবহার কমাতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে জিয়াউর রহমানের খাল খনন কর্মসূচি আবারও শুরু করবে জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘পানির সঙ্গে কৃষি ও কৃষক অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। আমাদের পানির লেভেল নিচে নেমে গেছে। এটা ভবিষ্যৎতে বিপদের কারণ হবে। পানির অভাবে ফসল উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হয়। খাল খননের মাধ্যমে শহীদ জিয়া পানির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। যেখানে একটি ফসল হতো, সেখানে পানির কারণে দুটি হয়েছিল, দুটি ফসলের জায়গায় তিনটি হয়েছিল। এ জন্য আমাদের খাল খনন করতে হবে।’ 

ভবিষ্যৎতে কৃষকবান্ধব সরকার গঠন করা হবে জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামল প্রতিবারই আমরা কৃষকদের সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করেছি। কৃষিক্ষেত্রে যে-সব সমস্যা রয়েছে সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করেছি। খালেদা জিয়ার সময়ে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত কৃষিঋণ মওকুফ ছিল। জনগণের সমর্থনে সরকার গঠনের পর কৃষকদের সমস্যা সমাধানে কাজ করবে বিএনপি। কৃষকবান্ধব সরকার গঠন করা হবে।’

পরিকল্পনা উত্থাপন করেছেন তারেক রহমান

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কৃষকদের স্বার্থে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হবে জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘ওই (দ্বাদশ নির্বাচন) ডামি নির্বাচন হবে না, নিশিরাতের (একাদশ নির্বাচন) নির্বাচন হতে পারবে না। দিনের আলোতে ভোট হতে হব, যাকে খুশি তাকে ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা থাকতে হবে, নিরাপদে ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা থাকতে হবে। জনগণের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে না পারলে, জনগণের কাছে জবাবদিহি করে এরকম ব্যক্তিদের সামনে আনতে না পারলে কোনোভাবেই আমরা কিছু করতে পারব না।’

তারেক রহমান বলেন, ‘দেশ, দেশের মানুষ এবং এদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তি, এই তিনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কিন্তু থেমে নেই। এই ষড়যন্ত্র যে থেমে নেই সেটা আপনারা প্রতিনিয়তই পত্রপত্রিকার বিভিন্ন নিউজ ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে, বিভিন্ন টেলিফোনের আলাপেও কমবেশি জানতে পারছেন। জাতীয়তাবাদী শক্তির নেতাকর্মীদের বলব, ষড়যন্ত্র যে থেমে নেই, কথাটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম না হব, ততক্ষণ পর্যন্ত, একটি উদাহরণ দিয়ে বলি, আজকের এই বাজারমূল্যের যে সিন্ডিকেট তা ভাঙা সম্ভব হবে না। কারণ এটিকে যদি ভাঙতে হয়, দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনতে হয়, তাহলে প্রকৃত জনপ্রতিনিধি দরকার; যারা মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে। যেদিন এ রকম একটি সিস্টেম তৈরি করা সম্ভব হবে, সেদিনই বাজার পরিস্থিতি অনেকাংশে ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণ করে নিয়ে আসা যাবে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে।’

বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে দেশের তৃণমূলের মানুষের সঙ্গে কথা বলারও তাগিত দেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিটি ইউনিয়নে যাচ্ছেন, কৃষকদের সাথে কথা বলবেন, প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের সাথে কথা বলবেন; হয়ত একজন গৃহিণী, একজন ছোট দোকান কর্মচারী কিংবা মালিকের সাথে কথা বলবেন, এ রকম বহু শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে কথা বলবেন। তাদের প্রত্যেককে একটি বার্তা দিতে হবে, ‘ভাই তুমি যে রাজনীতিতেই বিশ্বাস কর না কেন, একটি জায়গায় এসে দাঁড়াও। তুমি যাকে ইচ্ছা তুমি ভোট দাও’, কিন্তু ভোট যাতে হয় এই ব্যবস্থাটা করতে হবে যে কোনো মূল্যে।’

নির্বাচন নিরপেক্ষ হতে হবে মন্তব্য করে তারেক বলেন, ‘নির্বাচন নিরপেক্ষ হতেই হবে। এটার সাথে কোনো আপস নাই। যদি এটি নিশ্চিত করা যায়, ধীরে ধীরে আমরা দেশের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে’।


সর্বশেষ সংবাদ