এনসিটিবির দুর্নীতির শ্বেতপত্র তৈরির দায়িত্বে অভিযুক্তরাই!
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৪০ PM , আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০৬ PM
দেশের অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র জানতে শ্বেতপত্র প্রকাশ করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। শিক্ষার গুরুত্বকে বিবেচনায় রেখে উদ্যোগের অংশ হিসেবে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) শ্বেতপত্র প্রণয়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। যদিও অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী শাসনামলে যারা দুর্নীতি করেছেন, তাদের নিয়েই এনসিটিবির দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি করা হয়েছে।
জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে গত ২৪ অক্টোবর এ বিষয়ে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছ এনসিটিবি। এছাড়াও এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরবরাহ করতে আরও ৪ এনসিটিবির আরও ৪ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে আছেন এনসিটিবির প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা প্রফেসর মো. নজরুল ইসলাম। সদস্য হিসেবে আছেন উৎপাদন নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মোহাম্মদ আবু নাসের টুকু, ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞ (প্রাথমিক) মো. আব্দুল মুমিন মোছাব্বির, বিতরণ নিয়ন্ত্রক মো. হাফিজুর রহমান। এছাড়াও সদস্য সচিব হিসেবে আছেন বিশেষজ্ঞ (মাধ্যমিক) জনাব মীর রাহাত মাসুম।
এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরবরাহ করতে এনসিটিবির ৪ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন এনসিটিবির ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞ (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) সাইফা সুলতানা, গবেষণা কর্মকর্তা (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) মো. আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞ (মাধ্যমিক) ড. প্রবীর চন্দ্র রায়, গবেষণা কর্মকর্তা (মাধ্যমিক) শাহ্ মো. জুলফিকার রহমান। এনসিটিবির সচিব শাহ মুহাম্মদ ফিরোজ আল ফেরদৌস স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
তবে অভিযোগ উঠেছে, যাদের নিয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে তারাই বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে সুবিধাভোগী ছিলেন। এছাড়াও শ্বেতপত্রটি মন্ত্রণালয়ে যাওয়ার পূর্বে এনসিটিবির সচিব স্বাক্ষর করবেন। কিন্তু সচিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি আগে থেকেই এনসিটিবিতে উপসচিব (প্রশাসন) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এই কর্মকর্তা একাই চার চারবার এনসিটিবিতেই পদায়ন নিয়েছেন। শুধু এনসিটিবিতে নয়, আওয়ামী আমলে পুরো শিক্ষা প্রশাসনে ফিরোজ আল ফেরদৌস সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিকের ভাগ্নে পরিচয়ে প্রভাব বিস্তার করেছিলেন।
বিষয়টি নিয়ে এনসিটিবির একাধিক কর্মকর্তার সাথে কথা হলে তারা জানান, যাদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে তাদের অনেকের বিরুদ্ধেই পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নানাভাবে সুবিধা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনির আর্থিক বিভিন্ন অনিয়ম আর ঘুষ বাণিজ্যের সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন এমন ব্যক্তিদেরও এখানে রাখা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, পক্ষপাতিত্ব হওয়ার সুযোগ নেই। এনসিটিবিতে যারা কর্মরত আছেন তাদের কাছ থেকে তথ্য চেয়ে নেয়া হবে। যার কাছে যে তথ্য আছে সেটা তারা প্রদান করবেন। আমরা কমিটি গঠন করে দিয়েছি, তারা সকল স্তরের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তথ্য চেয়েছেন। নিয়মমাফিক বিষয়গুলো নিয়ে তারা কাজ করবে।
তবে সচিবের বিষয়টি উল্লেখ করলে চেয়ারম্যান বলেন, কোন ব্যক্তিকে যদি সরকার এ পদে বসায় সেটা নিয়ে আমার কোন মন্তব্য করার সুযোগ নেই। আর তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগের কথা বলা হচ্ছে, সেটা প্রমাণিত না হলে কোন কিছু বলার সুযোগ নেই।