আদালতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে রিভিউ চাওয়ার ঘোষণা মন্ত্রীর

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জাম্মেল হক
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জাম্মেল হক  © সংগৃহীত

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিষয়টি নিয়ে আবার আপিল বিভাগে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জাম্মেল হক। শুক্রবার (২৬ জুলাই) নরসিংদীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। 

এর আগে সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনে সহিংসতায় নরসিংদীর পাঁচদোনায় হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন পরিদর্শন করতে সেখানে যান একাত্তরে রণাঙ্গনের এই যোদ্ধা। পরে নরসিংদীর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মত বিনিময়ে অংশ নেন তিনি।

তিনি বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের আর চাকরির বয়স নেই, এই বিষয়টি আদালতকে জানাবেন তারা। মহামান্য আদালত রায় দিয়েছে আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে, মেধার ভিত্তিতে ৯৩ ভাগ। আমরা অভিনন্দন জানিয়েছি। কিন্তু আমাদের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যে ৫ ভাগ, সেটা নিয়ে মহামান্য আদালতের কাছে আমরা রিভিউ চাইব।

আরও পড়ুন: হাসপাতালে নজরদারিতে থাকা নাহিদ ও আসিফকে আবারও তুলে নেয়া হয়েছে

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ওনাদের হয়ত জানা ছিল না, বর্তমানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানের চাকরি করার বয়স আর নাই। তাহলে কারা পাবে, সে বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মতামত, দয়া করে মহামান্য আদালত শুনবেন, আমরা সেই ব্যবস্থা করব।

এই রায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ‘রক্তক্ষরণ’ হয়েছে মন্তব্য করে আ ক ম মোজ্জাম্মেল হক বলেন, সেটা আইনি প্রক্রিয়ায় কীভাবে দূর করা যায়, আমরা ভবিষ্যতে ব্যবস্থা নেব।

বর্তমানে দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সবশেষ বয়স সীমা এখন ৩০ বছর। তবে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় কারও বয়স ৩২ হলে তিনিও আবেদনের সুযোগ পাবেন। 

আরও পড়ুন: ভিন্নমত ও দাবি আদায়ের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অপরাধ নয়, সাংবিধানিক অধিকার: টিআইবি

এর আগে ২০১৮ সালের আগ পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ছিল ৩০ শতাংশ। এর বাইরে ১০ শতাংশ করে জেলা ও নারী কোটা, ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী কোটা ও ১ শতাংশ ছিল প্রতিবন্ধী কোটা।

ওই বছর কোটা নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে সব কোটা তুলে দেয়। ২০২১ সালে মুক্তিযোদ্ধার ৭ সন্তান বিষয়টি নিয়ে হাই কোর্টে রিট করলে জুনের শেষে সেই পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা হয়।

ফলে নতুন করে এর প্রতিক্রিয়ায় ফের আন্দোলন শুরু হয়। সেই আন্দোলনে এক পর্যায়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে, গণমাধ্যমের হিসাবে দুইশরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছে আরও কয়েকশ মানুষ। বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিতে বেপরোয়া হামলা হয়েছে। সরকারের অভিযোগ, কোটা আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে সরকারবিরোধীরা এই কাজ করেছে।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের জনগণের ওপর সহিংসতায় হতবাক কানাডা: হাইকমিশনের বিবৃতি

নরসিংদীতে কারাগারে হামলা করে সব অস্ত্র লুট করে বন্দিদের বের করে আনা হয়েছে। এমনকি যারা বের হতে চায়নি, তাদেরকে পেটানো হয়েছে। হামলা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সেও।

এমন সংঘাতময় পরিস্থিতিতে জারি হয়েছে কারফিউ। প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টা শিথিল থাকলেও এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে, এখনো সেনা সদস্যদের টহল আছে রাজপথে।

এই পরিস্থিতিতে গত রোববার আপিল বিভাগ এক রায়ে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে ৭ শতাংশ কোটা নির্দিষ্ট করে দেয়। এর মধ্যে ৫ শতাংশ পাবে মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনাদের সন্তানরা। বাকি ১ শতাংশ করে সংরক্ষিত থাকবে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য।

আরও পড়ুন: ঢালাওভাবে মামলা-গ্রেপ্তার বন্ধ এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি সুজনের

সেই আদেশ মোতাবেক সরকার এরই মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা আর আগের মতো রণাঙ্গনের যোদ্ধাদের নাতি-নাতনিরা পাবে না।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী কথা বলেন নরসিংদীতে হামলা নিয়েও। তিনি বলেন, এই পাঁচদোনা এক সময় দেশবাসীকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। এবার এই পাঁচদোনায় আঘাত দেশের মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটিয়েছে।

নরসিংদীতে কী দেখলাম আমরা? জেলখানা আক্রমণ করল কাদেরকে ছুটিয়ে নেওয়ার জন্য? দুই জন মহিলা জঙ্গিসহ আরও ৭ জন কুখ্যাত জঙ্গি ছিল সেখানে। উদ্দেশ্য ছিল জঙ্গিদের নেওয়া, অন্যদেরও যেতে বাধ্য করেছে, আমরা পত্রিকায় পড়েছি বলেও জানান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence