মানুষ বলে আমি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে না থাকায় দেশে লেখাপড়া হচ্ছে না: নাহিদ

  © সংগৃহীত

সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘দেশের বেসামরিক (সাধারণ) মানুষ এখনো রাস্তায় বের হলে আমাকে চিনে ফেলে। পথে-ঘাটে তারা এগিয়ে এসে কথাও বলে। এই তো পরশু, ফার্মগেটের দিক দিয়ে ফুটপাতে হাঁটছিলাম। এক তরকারি বিক্রেতা এগিয়ে এসে বলেন, স্যার, আপনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় কেন ছাড়লেন? আপনি মন্ত্রাণালয় ছাড়ায় (না থাকায়) দেশে লেখাপড়া হচ্ছে না, আমাদের সন্তানরা ভালো পড়াশোনা করতে পারছে না।’

মঙ্গলবার (১১ জুন) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত ‘চ্যালেঞ্জড শিক্ষার্থী সম্মেলনে’ অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার কারণ এবং এ অবস্থা থেকে উত্তরণের সম্ভাব্য উপায় নিয়ে দুই শতাধিক অকৃতকার্য শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষক বিভিন্ন জেলা থেকে সম্মেলনে অংশ নেয়।

তিনি বলেন, ‘অনেকেই আমাকে এটা বলেন। ব্যাপারটা যেন এমন যে, আমি ইচ্ছে করে মন্ত্রণালয় ছাড়ছি, আবার চাইলেই আসতেও পারবো! এটা আসলে মানুষের আকাঙ্ক্ষা। তাদের মনে হয় যে, আমি মন্ত্রণালয় ছেড়ে দিয়ে শিক্ষার ক্ষতি করেছি। আসলে আমি ক্ষতি করেছি বা অন্য যিনি দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি ক্ষতি করেছেন ব্যাপারা এমন না।’

নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে অভিভাবকদের অভিযোগ-অনুযোগের বিষয়টিকে ইঙ্গিত করে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘যে কোনো পরিবর্তন এলে নানান সমস্যা দেখা দেয়। হয়তো সেই পরিবর্তনের ইতিবাচক ফলটা তাৎক্ষণিক না পেয়ে অনেক অভিভাবক অসন্তুষ্ট থাকেন। সেজন্য অনেকে রাগ-ক্ষোভ থেকে অভিযোগ করে থাকেন। এটা একটা সমস্যা। এটা কাটিয়ে উঠতে হবে।’

শিক্ষার মেয়েদের অংশগ্রহণের সফলতার দিকে ইঙ্গিত করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, শিক্ষা কাঠামো নিয়ে আমাদের দীর্ঘ দিনের কাজের ফলাফল হলো বর্তমানে এমন কোন সাবজেক্ট নাই যেখানে মেয়েদের অংশগ্রহণ নেই। এমন কোন পেশা নেই যেখানে তারা অংশগ্রহণ করছে না। এটি বর্তমান সরকারের উল্লেখযোগ্য সফলতা। এখন আর ছেলে মেয়ে আলাদা হিসেবে বঞ্চনার সুযোগ নাই। আজকের সম্মেলন থেকে আমি নোট করে নিয়েছি। শিক্ষার্থীদের অকৃতকার্য হওয়ার নেপথ্যে উত্থাপিত সমস্যা নিয়ে আমরা আন্তরিকতার সাথে কাজ করবো। 

তিনি আরও বলেন, আজকের এই সম্মেলন আমাকে নতুন কিছু শিখতে এবং নতুন করে দেখতে সুযোগ করে দিয়েছে। গণস্বাক্ষরতা অভিযানের অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের নিয়ে এই আয়োজন সময়োপযোগী। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। সঞ্চালনা করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী। সম্মেলনে সকালের অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন, অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খালেকুজ্জামান আহমদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান, ফেরদৌস আহমেদ এমপি, কথাসাহিত্যিক ও লেখক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, কথা সাহিত্যিক আনিসুল হক, সাবেক শিক্ষা সচিব আন আই খান, সংগীত শিল্পী রাহুল আনন্দ এবং এভারেস্ট বিজয়ী এম এ মুহিত।

এছাড়াও বিকেলের অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন এম এ মান্নান এমপি, আরমা দত্ত, শিক্ষাবিদ ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, সংগীত শিল্পী ফাহমিদা নবী এবং নকিব খান, এভারেস্ট বিজয়ী নিশাত মজুমদার। 


সর্বশেষ সংবাদ