কালবৈশাখীতে লণ্ডভণ্ড বিদ্যালয়, ক্লাস চলছে খোলা আকাশের নিচে
- নেত্রকোনা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৪, ১১:৩৫ PM , আপডেট: ০৭ মে ২০২৪, ১১:৪০ PM
নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় হাসিনা শাহিদ মাধ্যমিক মডেল একাডেমির ক্লাস চলছে খোলা আকাশের নিচে। পাঠদান কার্যক্রমের জন্য ৪০ হাত লম্বা যে টিনের ঘরটি ছিল, তা গত রোববার সন্ধ্যার কালবৈশাখীর ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। ফলে পাঠদান কার্যক্রমের জন্য আর কোনো ঘর না থাকায় মঙ্গলবার (৭ মে) সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলছে খোলা আকাশে নিচেই।
জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ থেকে দুর্যোগকালীন সময়ে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জরুরি একটি একাডেমীক ঘর নির্মানের জন্য মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে ৫ বান্ডিল অর্থাৎ ৮ ফুট লম্বা ৪০ পিছ টিন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। টিন পাওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট আর্থিক সহায়তাও ছেয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক।
কেন্দুয়ার উপজেলার ৪নং গড়াডোবা ইউনিয়নের গাড়াউন্দ মাষ্টার বাড়ী প্রাঙ্গণে ২০১০ সালের ১ জানুয়ারী স্থাপিত হয় হাসিনা সাহিদ মডেল একাডেমি। ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারী নবম ও দশম শ্রেণীর স্বাকৃতি পায়। ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ২৭৩ জন। শিক্ষক কর্মচারীর সংখ্যা ১২ জন। ৫টি টিনের ঘর থাকলেও গত রোববারের কালবৈশাখী ঝড়ে প্রায় চল্লিশ হাত লম্বা টিনের বড় ঘরটি লণ্ডভণ্ড করে ফেলেছে। বাকি যে ঘরগুলো আছে সেগুলোও ঝড়ে খুবই নড়বড়ে হয়ে পড়েছে।
গত বছর ২০২৩ সালে বিদ্যালয়টি থেকে ৪৩ জন ছাত্র-ছাত্রী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাস ছিল শতভাগ। এর মধ্যে ৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এ বছর ৫৮ জন ছাত্র-ছাত্রী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। ফলাফল হবে আগামী ১২ মে।
একাডেমির প্রধান শিক্ষক এম. এ সালাম জানান, পিছিয়ে থাকা এলাকায় শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে আমরা জমি দান করে মা-বাবার নামে হাসিনা সাহিদ মডেল একাডেমি স্থাপন করেছিলাম। এখন মাধ্যমিক মডেল একাডেমিতে রূপান্তরিত হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা এবং উপস্থিতিও সন্তোষজনক। কিন্তু একাডেমিক পাকা ভবন না থাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠ দান কার্যক্রম নিয়ে খুবই অসুবিধায় থাকতে হয়। তিনি সরকারের নিকট একটি ৪ তলা বিশিষ্ট পাকা ভবন নির্মানের দাবি জানান।
এদিকে, সোমবার সকালে ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়া স্কুল ঘরটি দেখতে যান কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমদাদুল হক তালুকদার। তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে একটি পাকা ভবন খুবই দরকার। আমরা এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অভিহিত করব।
গড়াডোবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান খান সোহাগ বলেন, এই কেন্দুয়া উপজেলায় এমনও বিদ্যালয় আছে, যেখানে ৩-৪টি পাকা ভবন নির্মিত হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হাসিনা সাহিদ মাধ্যমিক মডেল একাডেমিতে সরকারের একটি পাকা ভবনও নেই। তিনি এই একাডেমিতে ৪ তলা বিশিষ্ট একটি পাকা ভবন বরাদ্দের জন্য সকল ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবকের পক্ষ থেকে দাবি জানান।