নতুন শিক্ষাক্রম চালুর পর বেড়েছে

প্রাথমিকে শিক্ষার্থীপ্রতি বছরে পরিবারের ব্যয় ১৪ হাজার, মাধ্যমিকে ২৭

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এডুকেশন ওয়াচ প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে অতিথিরা
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এডুকেশন ওয়াচ প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে অতিথিরা  © টিডিসি ফটো

দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীপ্রতি বছরে একটি পরিবারের ব্যয় হয় প্রায় ১৪ হাজার টাকা। আর মাধ্যমিকে ২৭ হাজার টাকার বেশি ব্যয় হচ্ছে। শনিবার (৩০ মার্চ) ‘বাংলাদেশে বিদ্যালয় শিক্ষা: মহামারী উত্তর টেকসই পুনরুত্থান’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। নতুন শিক্ষাক্রম চালুর পর ব্যয় বেড়েছে স্বীকার করলেও এর প্রকৃত হিসাব নেই বলে প্রতিবেদনের গবেষকরা জানিয়েছেন।

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে গণসাক্ষরতা অভিযান এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে সহযোগিতা করেছে ক্লিয়ার ও এফসিডিও। গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও এডুকেশন ওয়াচের সদস্য সচিব রাশেদা কে. চৌধুরীর সঞ্চালনায় সভাপ্রধান ছিলেন এডুকেশন ওয়াচের চেয়ারপার্সন ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। 

এডুকেশন ওয়াচ প্রতিবেদন-২০২৩ উপস্থাপন করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের উপ-পরিচালক ও এডুকেশন ওয়াচের ফোকাল পয়েন্ট ড. মোস্তাফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এডুকেশন ওয়াচের আহবায়ক ড. আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষর্থীর জন্য বছরে গড়ে ১৩ হাজার ৮৮২ টাকা খরচ হয়। তবে শহরের তুলনায় গ্রামে খরচ কম। গ্রামে বছরে গড়ে ১০ হাজার ৬৩৭ এবং শহরে ১৮ হাজার ১৩২ টাকা খরচ হয়। গত বছরের (২০২৩) প্রথম ছয় মাসে এ খরচ ৮ হাজার ৬৪৭ টাকা বা ২৫ শতাংশ বেড়েছে।

এদিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বছরে শিক্ষার্থীপ্রতি বছরে গড়ে খরচ হয় ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। এরমধ্যে গ্রামে ২২ হাজার ৯০৯ এবং সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার ৬৬২ টাকা ব্যয় হয়। গত বছরের প্রথম ছয় মাসে এ খরচ অন্তত ২০ হাজার ৭১২ টাকা বা ৫১ শতাংশ বেড়েছে। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর এবং গত বছরের (২০২৩) জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত তুলনামূলক হিসাব করে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

আরো পড়ুন: কী হতে চাও প্রশ্নে স্কুলছাত্রের জবাব, ‘আমি বোকা হতে চাই’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ খরচের বড় অংশই চলে যায় টিউশনি বা কোচিং সেন্টারে। এছাড়া বাকি খরচ হয় গাইড বইসহ সহায়ক বিভিন্ন সামগ্রী, যাতায়াত, খাবার, শিক্ষা উপকরণ (বই, খাতা, কলম), স্কুলের বিভিন্ন ফি এবং এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিজে।

এডুকেশন ওয়াচ-২০২৩ এর মূখ্য গবেষক ড. মনজুর আহমদ বলেন, ২০২২ সালের পর চার দশমিক পাঁচ শতাংশ প্রাথমিকে এবং ছয় শতাংশ শিক্ষার্থী মাধ্যমিকে নেই। সরকারের যে ঝরে পড়ার হিসাব, এটা অনেকাংশে তার অতিরিক্ত। সে আশঙ্কা রয়েছে। কারণ দ্বিতীয় শ্রেণিতে এত বেশি ঝরে পড়ার কথা না। 

খরচের বিষয়ে তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ নানা কারণে খরচ বেড়েছে। প্রাথমিকে ২৫ শতাংশ এবং মাধ্যমিক ৫১ শতাংশ খরচ বেড়েছে। খরচ বেশি হচ্ছে কোচিং, টিউশনি ও গাইড বইয়ে। নতুন শিক্ষাক্রমের হিসাব এখনো আসেনি। এর প্রভাব ব্যয়ের কিছুটা পড়লেও দেখানোর মতো অবস্থা এখনো হয়নি বলে তিনি জানান।


সর্বশেষ সংবাদ