ফুলের সৌন্দ‌র্যে সজ্জিত ভোলার বেগম রহিমা ইসলাম কলেজ

বেগম রহিমা ইসলাম কলেজ
বেগম রহিমা ইসলাম কলেজ  © টিডিসি ফটো

কনকনে শীত আর ঘন কুয়াশা। সঙ্গে বাতাসের শনশন শব্দ। এভাবে প্রকৃতি ছেয়ে আছে প্রচণ্ড শুকনো ও রুক্ষতায়। কুয়াশার চাদরে ঢেকে আছে গোটা দেশ। তীব্র শীতের পাশাপাশি হিমেল হাওয়াতে মানুষ এখন জড়সড়। এরই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাহারি রঙের নতুন ফুলে ফুলে ভরে গেছে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার শশীভূষণ বেগম রহিমা ইসলাম কলেজ ক্যাম্পাস।

গাছে ফোটা এসব ফুলের মিষ্টি সুবাসে পাগল পারা পাখি আর প্রজাপতিরা। যা দেখে মুগ্ধ সবাই। রাজ্যের সব ফুল যেন এখানেই জড়ো হয়েছে! যেদিকে তাকানো যায় সেদিকেই বিচিত্র সব বর্ণাঢ্য ফুলের সমারোহ। ভ্রমরের পাশাপাশি ফুলের গন্ধে মাতোয়ারা ক্যাম্পাসে আগতরা।

কলেজের গেট পেরিয়ে ভেতরে ঢুকতেই সবুজ ক্যাম্পাসের ইট-পাথরে গড়া ভবনের সামনে চোখে পড়ল রং-বেরঙের ফুল আর ফুল। প্রথম দেখায় যে কারও মনে হতে পারে; এ যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা নয়ন জুড়ানো সৌন্দর্যমণ্ডিত কোনো ছবি। যদিও মুহূর্তেই বিভ্রম কেটে যাবে। কারণ সচরাচর এমন পুষ্পশোভিত নান্দনিক ক্যাম্পাস আর চোখে পড়ে না। দেখে মনে হচ্ছে বসন্ত যেন তার পুরো রং-রূপ ঢেলে দিয়েছে ক্যাম্পাসে

এ ব্যাপা‌রে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃশ‌রিফুল আলম সো‌য়েব বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে, আমাদের চরফ্যাশন ও মনপুরার শিক্ষা বিস্তারের জনক বেগম রহিমা ইসলাম কলেজের প্রতিষ্ঠাতা জনাব আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাক‌ব এমপি চরফ্যাশন ও মনপুরায় ৫টি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি আমাদের কলেজে লেখাপড়ার মানউন্নােয়ের পাশাপাশি, খেলাধুল, প্রশাসনিক ও কলেজের পরিবেশগত বিভিন্ন দিক নিদর্শনা দিয়ে থাকেন।

তিনি আরো জানান,অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে আমার চিন্তা চেতনা ছিলো পুরো কলেজ ক্যাম্পাসটিকে  দৃষ্টিনন্দন করা। সেজন্য ক্যাম্পাসে ফুলের বাগান করার পরিকল্পনা করলাম। এছাড়া আরেকটি উদ্দেশ্য হলো, শিক্ষার্থীদেরকে ক্যাম্পাসে আকৃষ্ট করা ও মনোরম পরিবেশে পাঠদান নিশ্চিত করা। এছাড়াও কলেজ‌টি‌কে ভোলা জেলার মধ্যে মডেল কলেজ হি‌সে‌বে প্রতিষ্ঠিত কর‌তে কাজ করে যাচ্ছি।

প্রতিবছরের ন্যায় এবারও পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন ফুলের গাছ রোপণ করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে ঢুকলে শিক্ষার্থীদের মন ও চপন্তা চেতনার বিকাশ ঘটায়  এটাই কর্তৃপক্ষের কাজ। তাই এ বছর অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি ফুলের চাষ করা হয়েছে। ক্যাম্পাসের ভেতরে যে ফুলের সমারোহ এটা শুধু কলেজের না,বাইরে যারা রয়েছেন তারাও এই সৌন্দর্য দেখতে আসেন।

‘কেউ ফুল ছেঁড়ে না?’ এমন প্রশ্নে তিনি মৃদু হেসে বলেন, ‘সবচেয়ে আনন্দের বিষয় হলো আমাদের কলেজ ক্যাম্পাসটি ২২টি সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং যখন বাগান করা শুরু করি, তখন আশঙ্কায় ছিলাম! শত শত শিক্ষার্থীর মধ্যে বাগান টিকিয়ে রাখা কঠিন। ভেবেছিলাম, ফুল ফুটলে ছেলে-মেয়েরা ছিঁড়ে নিয়ে যাবে। কিন্তু তা হয়নি। 

তিনি বলেন, আমাকে অবাক করে দিয়ে তারা ফুলের বাগান করতে আমাকে সহযোগিতা করেছে। এখন যে হাজার হাজার ফুল ফুটে আছে, আমার কোনো শিক্ষার্থী এবং ফুল দেখতে আশা কোনো পর্যটক একটি ফুলও ছেঁড়ে না। আমার খুব ভালো লাগে। আমি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানাই।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি অত্র কলেজের প্রতিষ্ঠাতা জনাব আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপি মহোদয়ের প্রতি।


সর্বশেষ সংবাদ