শমসের–তৈমুরকে ‘জাতীয় বেইমান’ আখ্যা তৃণমূল বিএনপির প্রার্থীদের

জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থীরা
জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থীরা  © সংগৃহীত

তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মুবিন চৌধুরী ও মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকারকে ‘জাতীয় বেইমান’ আখ্যায়িত করেছেন দরটি থেকে বিভিন্ন আসনে প্রার্থী হওয়া নেতারা। তাদের অভিযোগ, প্রার্থীদের মাঠে নামিয়ে এখন আর খোঁজ নিচ্ছেন না দরটির শীর্ষ নেতারা। এছাড়াও শমসের, তৈমুর ও তৃণমূল বিএনপির নির্বাহী চেয়ারপারসন অন্তরা হুদা দলের তহবিল থেকে টাকা তছরুপ করেছেন বলেও অভিযোগ করেছেন দলটির প্রার্থীরা।

শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সভায় এসব কথা বলেন ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া তৃণমূল বিএনপির এই নেতারা। এদিন ‘তৃণমূল বিএনপির সব প্রার্থীর সঙ্গে মতবিনিময় ও আলোচনা সভা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে দলের কো-চেয়ারপারসন কে এ জাহাঙ্গীর মাজমাদার এবং ভাইস চেয়ারপারসন মেজর (অব.) ডা. শেখ হাবিবুর রহমানের অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও তাঁরা আসেননি। সভায় বিভিন্ন আসনে তৃণমূলের প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা দাবি করেছেন, দলের ১৩০ জন প্রার্থী এখন তাঁদের সঙ্গে আছেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা-১৫ আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী খন্দকার এমদাদুল হক ওরফে সেলিম। নির্বাচনে তৃণমূল বিএনপির ১৩৭ জন প্রার্থী আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, দলের চেয়ারপারসন ও মহাসচিব আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখছেন না। আমাদের সুবিধা-অসুবিধা, কীভাবে আমরা নির্বাচন করছি, আমাদের কী প্রয়োজন, সে ব্যাপারে কোনো খোঁজখবর রাখছেন না।

আরও পড়ুন: নির্বাচনের ভাগ্য ঠিক করবে বাংলাদেশের জনগণ: ফের জানাল ভারত

দলের শীর্ষ দুই নেতা সবার সঙ্গে আলোচনা করে প্রার্থী দিলে তৃণমূল বিএনপি ৩০০ আসনেই প্রার্থী দিতে পারত এবং অন্তত ১০০ আসন নিয়ে সংসদে বিরোধী দল হতে পারত বলে মন্তব্য করেন খন্দকার এমদাদুল হক। তিনি বলেন, ওই দুই জাতীয় বেইমানের কারণে এটা হয়নি। তাঁরা তৃণমূল বিএনপির যে অবস্থা করেছেন, তাতে আমরা কষ্ট পাচ্ছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমরা আমাদের দলের বিষয়ে আলোচনা করতে চাই।

নির্বাচনের মাধ্যমে তৃণমূল বিএনপি যেন সংসদে বিরোধী দল হতে পারে, সে জন্য দলটিতে চলমান সমস্যা সমাধানে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ ও তাঁর হস্তক্ষেপ কামনা করেন এমদাদুল হক। তিনি বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, আমরা দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চাই। বিদেশিদের ও বিএনপির ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে আমরা জনগণের পাশে থাকতে চাই। কিন্তু আমাদের অবস্থা কী? শমসের ও তৈমুরের উদ্দেশ্য ভিন্ন। তাঁদের মুখে এক কথা, অন্তরে আরেক কথা। তাঁদের বহিষ্কার করে তৃণমূল বিএনপিতে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে এলে আমরা খুশি হব। ১৩৭ জন প্রার্থীর মধ্যে ওই দুজন বাদে সবাই আমাদের সঙ্গে আছেন।

যশোর-৫ আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মেজর (অব.) আবু নসর মোহাম্মদ মোস্তফা বলেন, দেশে সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা যে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছি এবং করছি, তাতে বাধা তৈরি করেছেন দুই বেইমান শমসের মুবিন ও তৈমুর আলম। নজিরবিহীন অসমন্বয় করে আমাদের উলঙ্গ করে তাঁরা মাঠে ছেড়ে দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: পল্টন এলাকায় নির্বাচন বর্জনের লিফলেট বিতরণ ছাত্রদলের

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি এর বিচার করার অনুরোধ জানিয়ে তৃণমূল বিএনপির এই নেতা বলেন, শমসের, তৈমুর ও অন্তরা হুদা দলের তহবিল থেকে টাকা তছরুপ করে আমাদের উলঙ্গ করে নির্বাচনী মাঠে যে তামাশা করছেন, জাতির কাছে তার হিসাব দিতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে আমরা কঠোর হতে বাধ্য হব। ৬০ জন প্রার্থীকে নিয়ে আমি আমরণ অনশনে যেতে বাধ্য হব।

শমসের মুবিন ও তৈমুর আলমকে ‘যুগশ্রেষ্ঠ মীর জাফর’ আখ্যায়িত করে নেত্রকোনা-৫ আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী আবদুল ওয়াহাব হামিদী বলেন, তাঁরা যেকোনো মূল্যে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে নেমেছেন। শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রীর চূড়ান্ত অভিভাবকত্বমূলক সহযোগিতা চান তিনি।

এসময় শমসের মুবিন ও তৈমুর আলম বিএনপির সঙ্গে আঁতাত করেছেন বলে অভিযোগ করেন গোপালগঞ্জ-২ আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী জামাল উদ্দিন শেখ। কুমিল্লা-২ আসনে দলটির প্রার্থী মাইন উদ্দিন চলমান সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।


সর্বশেষ সংবাদ