বিশ্ব খাদ্য দিবস
খাদ্যসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য কমানোর দাবিতে র্যালি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২৩, ০১:৫৭ PM , আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০২৫, ০২:৩৮ PM
বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা সমস্যা মোকাবেলায় সচেতনতা বৃদ্ধিতে সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সকলের জন্য পুষ্টিকর খাবারের নিশ্চয়তায় গুরুত্ব দিতে জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতি বছর ১৬ অক্টোবর পালিত হয় ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস’। তারই ধারাবিহকতায় বিস্তর কর্মসূচি গ্রহণ করেছে খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ। কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার (১৬ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জমায়েত, আলোচনা, র্যালির আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়েব ফাউন্ডেশন ও খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ।
র্যালিতে ওয়েভ ফাউন্ডেশনে কর্মসূচি ব্যবস্থাপক লিপি আমেনার পরিচালনায় আলোচনায় খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ নেটওয়ার্কের নেতৃবৃন্দ, তরুণ প্রতিনিধি ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। এরপর সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন-এর সাধারণ সম্পাদক জায়েদ ইকবাল খান, বিসিএইচআরডির নির্বাহী পরিচালক মাহাবুল হক, কারিতাস বাংলাদেশের ব্যবস্থাপক ফরিদ আহমেদ খান এবং বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন-এর সহ-সভাপতি রেহেনা বেগম। তরুণ প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম আকাশ, উম্মে ফারিহা নানজিবা। কর্মসূচির প্রচারণাপত্র পাঠ করেন খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ সচিবালয়ের পাপেল কুমার সাহা।
এসময় আলোচনায় উঠে আসে পানি এবং খাদ্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দিক। আলোচকরা বলেন, পানি হল মানুষ, অর্থনীতি এবং প্রকৃতির চালিকাশক্তি এবং আমাদের খাদ্যের ভিত্তিই হলো পানি। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, নগরায়ণ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণগুলো পৃথিবীর পানি সম্পদকে ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে ফেলেছে। পানির অপরিমিত ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনা, ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন, দূষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পানির প্রাপ্যতা এবং গুণমান দ্রুত অবনমিত হচ্ছে।
যার ফলে গত কয়েক দশকে জনপ্রতি স্বাদু পানি ২০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এফএও -এর তথ্যমতে ২.৪ বিলিয়ন (২৪০ কোটি) মানুষ পানি সংকটজনিত দেশগুলোতে বাস করছে। এর মধ্যে অনেকেই ক্ষুদ্র কৃষক যারা ইতোমধ্যেই তাদের দৈনন্দিন চাহিদা, বিশেষ করে নারী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, অভিবাসী এবং উদ্বাস্তুজনিত সংকট মোকাবেলা করছে। এই পানি সংকটের জন্য পারস্পরিক বিপদাপন্নতার সম্মুখীন হচ্ছে তারা—জানান আলোচকরা।
আলোচনায় খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী কানিজ ফাতেমা তাঁর বক্তব্যে দাবি জানান, দেশের খাদ্যদ্রব্যের উর্ধ্বগতির বর্তমান বাস্তবতায় গ্রাম ও শহরাঞ্চলের প্রান্তিক ও শ্রমজীবী মানুষ যাতে খেয়েপরে বাঁচতে পারে, সে জন্য নিত্যপণ্যের দাম যেমন স্থিতিশীল রাখতে হবে। তেমনি তাদের আয় বাড়ানোর সুযোগ তৈরি করতে হবে বলে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি খাদ্য সরবরাহ ও দামকে প্রভাবিত করে এমন কিছু পদ্ধতিগত শক্তির বিপরীতে পাইকারি ও খুচরা উভয় পর্যায়ে বাজার তদারকি বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। সবমিলিয়ে কর্মসূচি থেকে বর্তমান পরিস্থিতিতে খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ-এর সুপারিশগুলো জোরালো উত্থাপিত হয়।
এসময় দেশে টেকসই কৃষি খাদ্য ব্যবস্থা এবং খাদ্যের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করাসহ বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এতে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিসমূহের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করা এবং সেবাগ্রহীতাদের উত্তরণে একটি সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনাসহ শক্তিশালী মনিটরিং ও মূল্যায়ন পদ্ধতি নিশ্চিত; প্রান্তিক, শ্রমজীবী ও নিম্নবিত্ত মানুষ যাতে খেয়েপরে বাঁচতে পারে; সে জন্য চাল, আটাসহ সকল নিত্যপণ্যের মূল্য কমানোর সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিও জানানো হয়েছে। এছাড়া সুপারিশে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের সুরক্ষার জন্য জলবায়ু সহনশীল, পরিবেশবান্ধব কৃষি ব্যবস্থা এবং পারিবারিক কৃষির সাথে সংশ্লিষ্টদের অধিকারকে সমুন্নত রাখা এবং কৃষকদের অংশগ্রহণ ও তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার দাবিও জানানো হয়েছে সুপারিশে।