প্রধানমন্ত্রীর কাজে সন্তুষ্ট ৭০ শতাংশ বাংলাদেশি: আইআরআই’র জরিপ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৩, ১০:৩৫ AM , আপডেট: ০৯ আগস্ট ২০২৩, ১০:৩৫ AM
বাংলাদেশে পরিচালিত এক জরিপে অংশ নেয়া ৭০ শতাংশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাজকে সমর্থন দিয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) সেন্টার ফর ইনসাইটস ইন সার্ভে রিসার্চ এ জরিপ চালায়। গত ১ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত ৬৪ জেলায় ১৮ বছরের বেশি বয়সী ৫ হাজার মানুষ এ জরিপে অংশ নেন।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) আইআরআইর ওয়েবসাইটে ‘ন্যাশনাল সার্ভে অব বাংলাদেশ, মার্চ-এপ্রিল ২০২৩’ শীর্ষক জরিপ প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। ফলাফলে দেখা গেছে, বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার জনসমর্থন ধরে রেখেছে। তবে বিরোধী দলের জনপ্রিয়তাও বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত ইন্টারন্যাশাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) জরিপের ফল অনুযায়ী, ৩০ শতাংশ বাংলাদেশি মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুবই ভালো করছেন। ৪০ শতাংশের অভিমত, কিছুটা ভালো করছেন। ৫৩ শতাংশের মতে, দেশ ভুল পথে যাচ্ছে; এদের ৫০ শতাংশ এ জন্য দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিকে দায়ী করেছেন।
উত্তরদাতাদের মধ্যে ২ হাজার ৩৪৮ জন ছিলেন ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সের মধ্যে। ৩৬ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে ছিলেন ১ হাজার ৭৩৩ জন। ৫৬ বছরের ওপরে ছিলেন ৯১৯ জন। উত্তরদাতাদের মধ্যে পুরুষ ২ হাজার ৬৩৩ জন এবং নারী ২ হাজার ৩৬৭ জন। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে শহরের ১ হাজার ৫৫০ জন এবং গ্রামের ৩ হাজার ৪৫০ জন।
জরিপে অংশ নেওয়া ৯২ শতাংশ জানিয়েছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে তারা ভোট দিতে পারেন। জরিপে অংশ নেওয়া ৪৪ শতাংশ বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চান। তবে বেশিরভাগই মনে করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়াই নির্বাচনে বিরোধীদের অংশ নেওয়া উচিত। ২৫ শতাংশ উত্তরদাতার অভিমত, ক্ষমতাসীন দলের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। ৩৪ শতাংশ উত্তরদাতা নির্বাচনে নতুন দল চান। বাকিরা বর্তমান দলগুলোর ওপর ভরসার কথা জানিয়েছেন।
যদিও ৮৮ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, ভোট দিতে যাবেন। যারা ভোট দেবেন না, তাদের ৫৫ শতাংশ জানিয়েছেন গত নির্বাচনে অন্য কেউ তার ভোট দিয়ে দিয়েছে। ২৫ শতাংশ উত্তরদাতা বিরোধী দলের সমন্বয়ে একটি নির্বাচনকালীন ঐকমত্যের সরকারের পক্ষে মত দিয়েছেন।
জরিপে অংশ নেওয়া ৬১ শতাংশ উত্তরদাতা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে খুব ভালো বললেও মাত্র ২১ শতাংশ মনে করেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন অবশ্যই অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। ২৬ শতাংশের অভিমত, সুষ্ঠু নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখেন। বাকিরা সুষ্ঠু ভোটের আশা দেখছেন না। জরিপে অংশ নেয় ৪৪ শতাংশ বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনব্যবস্থায় ফেরাকে সমর্থন জানিয়েছেন। তবে তাদের বেশির ভাগই মনে করেন, যে সরকারের অধীনেই নির্বাচন হোক না কেন, বিরোধীদের এতে অংশ নেয়া উচিত।
জরিপের ফলে দেখা গেছে, মানুষ বিভিন্ন সেক্টরে শেখ হাসিনার সরকারের সাফল্যের উচ্চ প্রশংসা করেছেন। সড়ক, মহাসড়ক এবং সেতু নির্মাণে সরকারের সাফল্যের কথা বলেছেন ৮৭ শতাংশ মানুষ। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ জনসমর্থন ধরে রেখেছে। তবে বিরোধীদলের জনপ্রিয়তাও বেড়েছে।
আইআরআইর দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক স্টিভ সিমা বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের জন্য জনসমর্থন দেখা উৎসাহব্যঞ্জক।’ জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, দেশের ৭০ ভাগ মানুষ শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্ট। তবে বিরোধী দলের সমর্থনও বাড়ছে। ২০১৯ সালে বিরোধীদের জনসমর্থন ছিল ৩৬ শতাংশ। এখন সেটা বেড়ে হয়েছে ৬৩ শতাংশ।
আইআরআই জরিপ বলছে, ২০১৮ সালের তুলনায় শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা ৪ শতাংশ বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকারের জনপ্রিয়তা বাড়ার কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, প্রথমত কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সাফল্য। এরপর রয়েছে অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বিস্তৃতকরণ।
ভারত, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশে প্রভাব নিয়েও জানতে চাওয়া হয় জরিপে। সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ে মত জানান উত্তরদাতারা। তাদের ৪২ শতাংশ ইন্টারনেট এবং ৪০ শতাংশ ফেসবুক ব্যবহার করেন।