আওয়ামী লীগের সাথে আপোষ না করায় নিবন্ধন বঞ্চনা: নুর

নুরুল হক নুর
নুরুল হক নুর  © সংগৃহীত

ইসির নিবন্ধন পাচ্ছে নতুন দুই দল। নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন চাওয়া ১২টির মধ্যে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পরবর্তী ধাপের বাছাইয়ের জন্য টিকেছে দুটি দল। বাদ পড়া দলগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের দল গণঅধিকার পরিষদ ও জামায়াতে ইসলামী সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ থাকা আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে নুরুল হক নুর বলেন, আওয়ামী লীগের সাথে আপোষ না করায় নিবন্ধন বঞ্চনা।

রোববার (১৬ জুলাই) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) নামের দুটি রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশন সভা শেষে এ তথ্য জানান ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম। প্রধান নির্বাচন কমিশন (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল সভায় সভাপতিত্ব করেন। 

পরে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে নুরুল হক নুর গণমাধ্যমকে বলেন, আওয়ামী লীগের সাথে আপোষ না করায় নিবন্ধন বঞ্চনা।

তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে আদালতে যাবে না গণঅধিকার পরিষদ। বলেন, বর্তমান কমিশনের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে যাবেন।

নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দৌড়ে টিকে থাকা দল দুটি হলো, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)। আর একটি ধাপ টপকাতে পারলেই ইসির চূড়ান্ত নিবন্ধন পাবে দল দুটি।

ইসি সচিব বলেন, যাচাই-বাছাই শেষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) নিবন্ধনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। এ লক্ষ্যে দল দুটিকে নিয়ে আগামীকাল পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে কারো কোন আপত্তি থাকলে তা নিষ্পত্তি করে কমিশন পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবে। আপত্তি নিষ্পত্তির পরে কমিশন সন্তুষ্ট হলে দল দুটিকে নিবন্ধন দেওয়া হবে বলে জানান ইসি সচিব।  

আরও পড়ুন: ইসির নিবন্ধন পাচ্ছে নতুন দুই দল

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ধাপে ধাপে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে অফিস থাকার কথা, কমিটি থাকার কথা, জনবল থাকার কথা এগুলো সব যাচাই করেছি। পুনরায় যাচাই করে এই দুটি দলের আইন অনুযায়ী সবকিছু থাকায় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। এরপরই চূড়ান্ত হবে যে, কারা কারা নিবন্ধন পাবে। বাকি ১০টি দল যে তথ্য দিয়েছে মাঠ পর্যায়ে যাচাই করে গরমিল পাওয়ায় তাদের আবেদন বাতিল করা হয়েছে।

১২টি রাজনৈতিক দল নতুন দল হিসেবে নিবন্ধন পাওয়ার সংক্ষিপ্ত তালিকায় রয়েছে বলে জানা গেছে। সেগুলো হলো- এবি পার্টি (আমার বাংলাদেশ পার্টি), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম), বাংলাদেশ হিউম্যানিস্ট পার্টি (বিএইচপি), গণঅধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি), বাংলাদেশ পিপলস পার্টি (বিপিপি), ডেমোক্রেটিক পার্টি ও বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিএলডি)। নির্বাচন কমিশন দুই দফা যাচাই করে দেখেছে ওইসব রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটি ও মাঠপর্যায়ের কার্যালয় সক্রিয় রয়েছে কিনা। এই দুই দফার প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে নতুন দল নিবন্ধন দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা রয়েছে।

আইন অনুযায়ী, নিবন্ধন পাওয়ার জন্য ২১ জেলা ও ১০০ উপজেলা বা থানায় কার্যকরী কমিটি ও কার্যালয় এবং প্রতিটি উপজেলায় দলের অন্তত ২০০ ভোটার থাকতে হবে। নির্বাচন কমিশন দুই দফায় এসব দলের মাঠ কার্যালয় ও কমিটি যাচাই করে দেখেছে। দুই ধাপে পাওয়া প্রতিবেদন রোববার কমিশনের সভায় তোলা হয়েছে। এতে শর্ত পূরণ করতে সক্ষম হওয়া দলসমূহ নিয়ম অনুযায়ী নিবন্ধন পাওয়ার জন্য বিবেচিত হয়েছে।

ইসির নিবন্ধন পেতে ৯৩টি রাজনৈতিক দল আবেদন করলেও তিন দফার ছাঁকুনি শেষে গত ১১ এপ্রিল প্রাথমিক বাছাইয়ে টিকে যাওয়া ১২টি দলের তালিকা প্রকাশ করেছিল আউয়াল কমিশন। এবার দুটি দল টিকল। দাবি আপত্তি শেষে এ দুই দলের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।


সর্বশেষ সংবাদ