ভালো কিছুর জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে হয়: শওকত হোসেন

শওকত হোসেন
শওকত হোসেন  © সংগৃহীত

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কনস্টেবল শওকত হোসেনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। গত ১৬ এপ্রিল তার চাকরিচ্যুতির আদেশে স্বাক্ষর করেন সিএমপির বন্দর বিভাগের উপ কমিশনার শাকিলা সোলতানা। আদেশের কপি পাঠানো হয় সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়ের দপ্তরে। 

উপ কমিশনার শাকিলা সোলতানা গত নয়দিন আগে শওকতের চাকরিচ্যুতির আদেশে স্বাক্ষর করলেও মূলত আজ বৃহস্পতিবার বিষয়টি জানাজানি হয়। এ বিষয়ে শওকতের ব্যক্তিগত কোনো মন্তব্য পাওয়া না গেলে নিজের ফেসবুক ‘মানবিক শওকতে’ এক স্ট্যাটাসে তিনি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

নিজের ফেসবুকে শওকত লিখেছেন, ‘‘কখনো ভালো কিছুর জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে হয় ৷ তাই সেচ্ছায় নিজেকে সরিয়ে নিলাম ৷ ইনশাআল্লাহ মানবতার কল্যানে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত থাকবো’’।

চাকরিচ্যুত শওকত হোসেন নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার বাসিন্দা। তিনি ২০০৫ সালে পুলিশ কনস্টেবল পদে যোগ দেন। ২০০৯ সালে ঢাকা থেকে বদলি হয়ে রাঙ্গমাটিতে যান। সেখান থেকে আসেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালে। তিনি চাকরির পাশাপাশি তিন বছরের ডিপ্লোমা এবং দুই বছরের প্যারামেডিকেল কোর্স সম্পন্ন করেন।

চাকরিচ্যুতির আদেশে বলা হয়েছে, ‘৭১ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এ ছাড়া অভিযুক্ত (শওকত হোসেন) শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সমস্যা থাকায় এবং বেওয়ারিশ মানুষকে নিয়ে মানবিক কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকায় পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি করা তার পক্ষে সম্ভব নয়, এমন বক্তব্য লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।’

আরও পড়ুন: যে অভিযোগে চাকরিচ্যুত হলেন মানবিক পুলিশ শওকত

জানা গেছে, ২০১৯ সালে তৎকালীন সিএমপি কমিশনার মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমানের আদেশে মানবিক পুলিশ ইউনিটের যাত্রা শুরু হয়েছিল। ওই সময় কমিশনার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৫০ হাজার টাকাও দিয়েছিল। বেওয়ারিশ মানুষদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে ইতিবাচক কার্যক্রমের মাধ্যমে পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করায় তখন সংবাদমাধ্যমে পুলিশের এই উদ্যোগ ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছিল।

এদিকে শওকত হোসেন ২০২১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ডবলমুরিং থানা এলাকায় একটি মাহফিলে অতিথি হয়ে যান এবং ‘বিতর্কিত’ বক্তব্য দেন। ওই বক্তব্যের জেরে পরবর্তী সময়ে তাকে দামপাড়া বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল থেকে বদলি করে কর্ণফুলী থানায় পাঠানো হয়।

সিএমপির উপকমিশনার (সদর) মোহাম্মদ আবদুল ওয়ারীশ গণমাধ্যমকে বলেন, কনস্টেবল শওকত হোসেনের চাকরিচ্যুত আদেশ হয়েছে। এখন তিনি (শওকত) চাইলে সিএমপি কমিশনারের কাছে আপিল করতে পারেন। এরপরও প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।