বঙ্গবাজারের আগুনের উত্তাপ ছড়িয়েছে ঢাকার বাইরেও

গোপালগঞ্জে ঈদ উপলক্ষে পোশাক কিনছেন ক্রেতারা
গোপালগঞ্জে ঈদ উপলক্ষে পোশাক কিনছেন ক্রেতারা  © ফাইল ছবি

বাংলাদেশে কাপড়ের অন্যতম প্রধান মার্কেট বঙ্গবাজার। সারাদেশে খুচরা কাপড় ব্যবসায়ীদের বড় অংশই বঙ্গবাজার থেকে কাপড় সংগ্রহ করেন। গত ৪ ফেব্রুয়ারি ভয়াবহ আগুনে পুড়েছে বঙ্গবাজার। এতে যেমন নিঃস্ব হয়েছেন মার্কেটটির বহু ব্যবসায়ী তেমনি এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন জেলার কাপড়ের বাজারেও।

দেশের বিভিন্ন জেলার ঈদ বাজার ঘুরে দেখা যায় ইতোমধ্যেই বাজারগুলোতে বঙ্গবাজারে আগুনের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। গোপালগঞ্জ জেলা শহরের বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায় তাদের অনেকেই পাইকারি কাপড় কিনতে গিয়ে চাহিদা অনুযায়ী কাপড় পাননি এবং অপেক্ষাকৃত বেশি দামে কাপড় কিনতে বাধ্য হয়েছেন।ৎ

আরো পড়ুন: একক ভর্তি পরীক্ষায় যাওয়া অনিশ্চিত বড় ৫ বিশ্ববিদ্যালয়ের

এস কালেকশনের আবু হোসেন বলেন, আমরা বঙ্গবাজার থেকেই কাপড় সংগ্রহ করি। গত পরশু কাপড় কিনতে গিয়েছিলাম কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী কাপড় পাইনি। নতুন পাইকারি দোকান খুঁজে কিছু কাপড় কিনেছি তবে তারা দাম বেশি নিয়েছে।

বঙ্গবাজারে আগুনের প্রভাব ঈদের পর আরো বেশি পড়বে উল্লেখ করে স্পন্দন ফ্যাশনের  প্রিতম সাহা নামে অপর এক বিক্রেতা বলেন, ঈদের কাপড় আমরা অনেকেই ইতোমধ্যে স্টক করে ফেলেছি কিন্তু সমস্যা হবে মূলত ঈদের পর। আমাদের নতুন করে পাইকারি দোকান খুঁজতে হবে৷ স্বাভাবিকভাবেই সেখানে আমরা আগের মূল্যে কাপড় পাবো না, ফলে খুচরা বাজারেও কাপড় বেশি মূল্যে বিক্রি করতে হবে।

খুলনা মহানগরের  হালিমা এন্টারপ্রাইজের মো: মাহবুবুর রহমান বলেন, বঙ্গবাজারে আগুনের প্রভাব সারা দেশেই পড়বে। ইতোমধ্যে ঢাকার অন্যান্য মার্কেটে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। আগুন লাগার আাগেরদিন যে কাপড় ২২০০ টাকায় কিনেছি, দুইদিনের ব্যবধানে সেই কাপড় এখন ২৭০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। 

আরো পড়ুন: গুচ্ছে থাকবে জবি-ইবি-বশেমুরবিপ্রবি—আশা ইউজিসির

বরিশালের সিটি মার্কেটের স্মার্ট জোনের মালিক মো. সেলিম বলেন, প্রতি সপ্তাহে বঙ্গবাজার থেকে আমাদের পোশাকের চালান আসত। আগামী সপ্তাহে ঈদের বড় চালান আসার কথা ছিল। কিন্তু এর আগেই বঙ্গবাজারে আগুন লেগে সব পুড়ে যাওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী পোশাক পাওয়া যাচ্ছে না। এতে বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে আমাদের।

পটুয়াখালীর গলাচিপার সোহেল এন্টারপ্রাইজের উজ্জ্বল বলেন, ঈদের সময় আমাদের কেনাবেচা সবচেয়ে বেশি হয়। বর্তমানে বাজারে ওয়ান পিসের বেশ চাহিদা থাকায় গতকাল ঢাকায় ওয়ানপিস আনতে গিয়েছিলাম কিন্তু আমরা যেখান খেকে কাপড় আনি সেই দোকান পুড়ে গিয়েছে। আর একইধরনের কাপড় একই দামে অন্য কোথাও পাইনি। তাই চাহিদা অনুযায়ী সব মালামাল না নিয়েই ফিরে এসেছি।  এখন অনেক কাস্টমার ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে।

আরো পড়ুন: ৮৯ মাদ্রাসায় সেসিপের চারটি পদের অনুমোদন

সিলেটের সুনামগঞ্জের কাপড় ব্যবসায়ী রাজীব হোসেন বলেন, রমযানে আমরা ঢাকা থেকে দুইবার মালামাল আনি। বেশিরভাগ মালামাল সাধারণত রোযা শুরুর আগেই নিয়ে আসা হয়। এরপর চাহিদা বিবেচনায় দ্বিতীয়বারে অল্প সংখ্যক মালামাল কেনা হয়। শিশুদের কিছু পোশাকের চাহিদা থাকায় বুধবার ঢাকায় গিয়েছিলাম। এ পোশাকগুলো বঙ্গবাজারের  বাইরে থেকেই কিনি কিন্তু বঙ্গবাজারে আগুন লাগায় তাদের গ্রাহক বৃদ্ধি পাওয়ায় তারাও মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। ওইদিন ৩০ হাজার টাকায় যে পোশাক কিনেছি আগে তার মূল্য ছিল ২৫ হাজার টাকা। এই বাড়তি দামের কারণে আমরা এখন খুচরা বাজারেও বেশি দামে কাপড় বিক্রি করতে হচ্ছে।

এদিকে, বঙ্গবাজারে আগুনের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা করে সহযোগিতা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ঈদের আগেই ব্যবসা পরিচালনা করার সুযোগ করে দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। 

এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। ০৭/০৪/২০২৩ শুক্রবার পর্যন্ত বঙ্গবাজারের তথ্য ও সহযোগিতা কেন্দ্রে সর্বমোট ৪০৭ জন কর্মচারী এবং ৬টি মার্কেটের সর্বমোট ৮৩৩ জন মালিক/ভাড়াটিয়া তাদের তথ্য প্রদান করেছেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence