নামাজে গিয়ে অটোরিকশা হারালেন রশিদ, কিনে দিলেন তাসরিফ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৩, ১১:০১ AM , আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৩, ১২:১৯ PM
নামাজ পড়তে গিয়ে অটোরিকশা হারানো প্রতিবন্ধী রশিদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তরুণ সঙ্গীতশিল্পী তাসরিফ খান। তাসরিফ স্কোয়াডের পক্ষ থেকে তাকে একটি অটোরিকশা কিনে দেয়া হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছিলেন তিনি। শনিবার (২৫ মার্চ) রাতে আব্দুর রশিদকে এক লাখ টাকায় কেনা অটোরিকশাটি হস্তান্তর করা হয়।
ফেসবুক লাইভে এসে তাসরিফ বলেন, আমার যে সামর্থ্য রয়েছে সেটার ভিত্তিতে রশিদ ভাইকে এক লাখ টাকা দিয়ে ব্যবহৃত একটি অটোরিকশা কিনে দিলাম। নতুন কিনতে প্রায় আড়াই লাখ লাগবে। কিন্তু আমি তো কোটিপতি না, যা পেরেছি সে অনুযায়ী পাশে দাঁড়িয়েছি। আশা করি এখন উনি ভালোভাবে চলতে পারবে।
এরপরে তিনি প্রতিবন্ধী রশিদের চালিত অটোরিকশায় উঠে কিছু দূর ঘুরে আসেন। যাত্রী বেসে অটোরিকশা থেকে নামার পর ১০০ টাকা ভাড়া দেন। সবশেষে সবার কাছে রশিদের জন্য দোয়া চান তিনি।
এর আগে শনিবার (২৫ মার্চ) রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় মাওনা চৌরাস্তায় যান তাসরিফ খান। আব্দুর রশিদকে সেখান থেকে তার ব্যক্তিগত গাড়িতে তুলে গাজীপুর মহানগরের টঙ্গীর কলেজ গেট এলাকায় নিয়ে যান।
সেখানে তাসরিফ স্কোয়াড গাজীপুর টিমের সদস্যরা তাসরিফের উপস্থিতিতে পা হারানো অটোরিকশাচালক আব্দুর রশিদের কাছে একটি অটোরিকশা হস্তান্তর করবেন। শনিবার সন্ধ্যায় তাসরিফ খান এ তথ্য জানিয়ে বলেন, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে রশিদের অসহায়ত্বের সংবাদ প্রকাশ হয়। শুক্রবার রাতে আমি তা জেনে রশিদের খোঁজ চেয়ে কমেন্ট বক্সে লিখি।
এছাড়াও গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাছির মোড়ল ২৫ হাজার টাকা দিয়েছেন রশিদকে। এ সময় তিনি বলেন, আব্দুর রশিদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি আমাকে খুব ব্যথিত করেছে। আমি এতে মর্মাহত। অটোরিকশা চুরি যাওয়ার খবর পেয়ে সাথে সাথে রশিদের সাথে যোগাযোগ করি এবং একটি অটোরিকশা কেনার সহযোগিতা বাবদ ২৫ হাজার টাকা তাকে দিয়েছি।
আরও পড়ুন: 'ফেসিয়াল প্যারালাইসিসে' আক্রান্ত তরুণ গায়ক তাশরিফ খান
এ সময় অটোরিকশা চালক আব্দুর রশিদ জানান, ছোট বয়সে একটি দুর্ঘটনায় এক পা হারাতে হয় তার। বৃহস্পতিবার ২৩ মার্চ ঘরে ২১ দিন বয়সী শিশু সন্তান, ২ বছর বয়সী ছেলে, স্ত্রী, মা ও বাবাকে রেখে উপার্জনের জন্য অটোরিকশা নিয়ে বের হয়েছিলেন। তার অটোরিকশার উপার্জনেই চলে সংসার খরচ। সারাদিনের উপার্জনের টাকায় ইফতার তৈরির খাবার কেনার কথা ছিল।
দুর্ঘটনায় এক পা হারিয়ে প্রতিবন্ধী রশিদ। পরিবারের চার সদস্যকে নিয়ে ভাড়া বাসায় অভাব-অনটনে কাটছিল তার জীবন।
পরে স্থানীয়দের পরামর্শে সাপ্তাহিক ১ হাজার ৫০০ টাকা কিস্তিতে একটি এনজিও থেকে ৬০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে অটোরিকশার ব্যাটারি ও অটো মেরামত করে আবার শুরু করেন রিকশা চালানো। গত বৃহস্পতিবার শ্রীপুর উপজেলার মাওনার পুকুরপাড় মসজিদের সামনে অটোরিকশা রেখে আসরের নামাজ আদায় করতে গেলে তা চুরি হয়ে যায়। নামাজ শেষে অটো দেখতে না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রতিবন্ধী এই চালক।