ডা. মিলনের মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ পরেই পতন হয় এরশাদ সরকারের

শহীদ ডা. মিলন
শহীদ ডা. মিলন  © ফাইল ছবি

আগামীকাল (রবিবার) ‘শহীদ ডা. মিলন দিবস’। ১৯৯০ সালের এই দিনে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় গুলিতে নিহত হন ডা. শামসুল আলম খান মিলন। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার পৃথক বাণী দিয়েছেন।

বাণীতে তারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের বীর শহীদ ডা. মিলনের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন। চিকিৎসকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. মিলনের ৩২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী দল ও সংগঠনের পক্ষ থেকে  বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

এই শোকাবহ ঘটনার স্মরনে ১৯৯১ সাল থেকে প্রতি বছর শহীদ ডা. মিলন দিবস উদযাপিত হয়ে আসছে। ডা. মিলনের মধ্য দিয়ে তখনকার স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নতুন গতি সঞ্চারিত হয় এবং অল্প কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এরশাদ সরকারের পতন ঘটে।

আরও পড়ুন: চত্বরে চত্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে চেনা-জানা

আওয়ামী লীগ যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালনের নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ উপলক্ষে আগামীকাল সকাল  ৮টায় দলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ চত্বরে ডা. শামসুল আলম খান মিলনের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতের কর্মসূচি পালন করবে।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আগামীকাল ভোর ৬ টায় দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, সকাল ৮ টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজস্থ শহীদ ডা. মিলনের সমাধি ও সকাল ৮টা ৩০মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি সংলগ্ন শহীদ ডা. মিলন সৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং বিএমএসহ বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠন আয়োজিত আলোচনা সভা।

ডা. মিলনের রক্তদানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তখন নতুন গতিবেগ সঞ্চারিত হয়। পরে ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সেই সময়ের স্বৈরশাসনের পতন ঘটে এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আজ এক বিবৃতিতে শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলন দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের জন্য সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

ডা. শামসুল আলম খান মিলনকে সচরাচর শহীদ ডা. মিলন হিসাবে অভিহিত করা হয়। তার মত্যুকে মহান আত্মত্যাগ হিসাবে গণ্য করা হয়। মৃত্যুকালে পেশায় চিকিৎসক শামসুল আলম খান মিলন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষক হিসাবে নিয়োজিত ছিলেন। এছাড়া তিনি ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের তৎকালীন যুগ্ম-মহাসচিব।

ডা. মিলনের জন্ম ১৯৫৭ সালে ২১ আগস্ট ঢাকা হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে। ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সরকারী বিজ্ঞান কলেজ থেকে শিল্পকলা (ইন্ডাস্ট্রিয়াল আর্টস) বিভাগে ২য় স্থান অধিকার করে এসএসসি পাস করেন। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি এইচএসসি পাশ করেন নটরডেম কলেজের ছাত্র হিসাবে। এর পর চিকিৎসক হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন (ব্যাচ কে-৩৪)। ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি এমবিবিএস ডিগ্রী লাভ করেন ও ডাক্তারী পেশায় যোগ দেন।


সর্বশেষ সংবাদ