সুপার সাইক্লোনের পূর্বাভাস, লন্ডভন্ড হতে পারে স্থলভাগ

সমুদ্রে সুপার সাইক্লোন
সমুদ্রে সুপার সাইক্লোন  © সংগৃহীত

চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে সাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যা পরবর্তী সময়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে সুপার সাইক্লোনের শক্তি অর্জন করতে পারে। এতে উপকূলীয় এলাকা লন্ডভন্ড হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

এটি কোন স্থান দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ কিংবা ভারত-বাংলাদেশের উপকূলের কোন একটি স্থান দিয়ে স্থলভাগ পার হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা ইতোমধ্যে দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে জানিয়েছি, অক্টোবরে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। তবে এটি কখন সৃষ্টি হবে, এটি শক্তিশালী হবে কি না, তা এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, একটি সিস্টেমে কয়েকটি ধাপ পার হয়ে তারপর ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়।

আরও পড়ুন: টাকা ফেরত চেয়ে ঢাকা থেকে নোরা ফাতেহিকে লিগ্যাল নোটিশ

তিনি বলেন, সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড়টি নিম্নচাপে পরিণত হবে ১৭ অক্টোবর, যা ১৮ অক্টোবরের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনার কথা নির্দেশ করছে পূর্বাভাস মডেল। সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে-সিত্রাং। তিনদিন আগের পূর্বাভাসে নির্দেশ করছিল, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন উপকূলের ওপর দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে। রোববারের (৯ অক্টোবর) পূর্বাভাসে নির্দেশ করছে যে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের ওপর দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে। ফলে আশঙ্কা করা যাচ্ছে, সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে আঘাত করার সম্ভাবনা রয়েছে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন উপকূলের মাঝামাঝি যেকোনো একটি স্থানে।

কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, ‘সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড়টি সুপার সাইক্লোনের শক্তি অর্জন করতে পারে। অর্থাৎ এর বাতাসের গতিবেগ ঘূর্ণিঝড় সিডর কিংবা আম্পানের মতো (ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটার থেকে ২৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত) হতে পারে। অক্টোবরের ২৫ তারিখ অমাবস্যা। ফলে সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড়টি যদি অক্টোবরের ২২ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে স্থলভাগে আঘাত করে, তবে যে স্থানে আঘাত করবে সেই স্থানের উপকূলীয় এলাকা লন্ডভন্ড করে দিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শতভাগ।’

মোস্তাফা কামাল আরও বলেন, ‘সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি যে স্থানে আঘাত করবে সেই স্থানের উপকূলীয় এলাকায় ১৫ থেকে ২০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে, যদি উপকূলের আঘাত হানার সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকে।’

বঙ্গোপসাগরে কোনো ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলে এর নাম হবে ‘সিত্রাং’। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) অধীন জাতিসংঘের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের ১৩টি দেশের (বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ওমান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান, সৌদি আরব ও ইয়েমেন) আবহাওয়াবিদদের সংস্থা এস্কেপ ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়ে থাকে। ‘সিত্রাং’ নামটি থাইল্যান্ডের দেয়া।


সর্বশেষ সংবাদ