গ্রীষ্মের রুক্ষ প্রকৃতিতে ববি ক্যাম্পাসে জারুলের প্রেমপত্র
- ববি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৫৩ AM , আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫, ১২:৫৮ PM

প্রকৃতি যখন গ্রীষ্মের খরতাপে ক্লান্ত, তখন প্রাণের সঞ্চার কর প্রকৃতিতে ফুটে উঠেছে জারুল ফুল। তার নরম বেগুনি রঙ যেন রুক্ষ প্রকৃতিকে ছুঁয়ে দিয়ে বলে—‘আছো তুমি, আমি জানি’! এই ফুল শুধু চোখে নয়, মনেও গেঁথে যায়।
রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতায় প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের বর্ণণা পাওয়া যায়। সেখানে বাদ যায়নি গ্রীষ্মের খরতাপের মাঝে প্রশান্তি আনা বেগুনি আভার জারুল ফুলও।‘রূপসী বাংলা’ কাব্যের ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতায়
জারুল নিয়ে কবি লিখেছেন—
সেখানে সবুজ রাঙা ভ’রে মধুকূপী ঘাসে অবিরল
সেখানে গাছের নাম: কাঁঠাল, অশ্বত্থ, বট, জারুল, হিজল
সেখানে ভোরের মেঘে নাটার রঙের মতো জাগিছে অরুণ
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের পাশে পাশে, ছাত্রী হলের রাস্তার পাশে, হতাশা চত্বর, প্রীতিলতা চত্বর, শিক্ষক ডরমিটরি, কাপল রোডে দেখা মিলে এই অপরূপ সুন্দর ফুলের। এই অস্বস্তিকর গরমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জারুলের সৌন্দর্য ও গাছের ছায়ায়
প্রশান্তি খুঁজে পায়।
জারুলের বৈজ্ঞানিক নাম Lagerstroemia speciosa। এটি একটি মাঝারি আকৃতির বৃক্ষ, যা বাংলাদেশের শহর ও গ্রাম উভয় অঞ্চলে দেখা যায়। সাধারণত এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে এর ফুল ফোটে। প্রতিটি ফুলের ছয়টি পাপড়ি থাকে, যা গুচ্ছাকারে ফুটে গাছকে রঙিন করে তোলে। দূর থেকে মনে হয় যেন রঙের মেঘে ছেয়ে গেছে ডালপালা।
তবে শুধু রূপেই নয়, গুণেও অনন্য এই গাছ। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এর পাতার রস ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হয়। এর ছাল ও বীজ থেকেও তৈরি হয় ওষুধ। পরিবেশবান্ধব এই গাছ বায়ু পরিশোধনে এবং শহরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যস্ত ক্যাম্পাসজুড়ে যখন জারুল ফুলে ফুলে সেজে ওঠে, তখন সেই দৃশ্য যেন প্রকৃতির লেখা এক নীরব প্রেমপত্র—যেখানে শুধু রঙ নয়, আছে অনুভব, শীতলতা আর এক অপূর্ব নান্দনিকতা।