ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে স্বাস্থ্যসম্মত ওয়াশরুম চাই

ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের প্রধান ফটক
ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের প্রধান ফটক  © ফাইল ফটো

১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সূচনা। ঢাকা কলেজ ও ল’ কলেজ থেকে প্রাপ্ত প্রায় আঠারো হাজার বইয়ের সংগ্রহ নিয়ে যাত্রা শুরু করে এ গ্রন্থাগারের। ঢাবিভুক্ত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিও সমস্যামুক্ত নয়। প্রতিষ্ঠাকালীন থেকেই এর সিটের স্বল্পতা। শুরুতে সিট সংখ্যা ছিল ৫৮০টির মতো। পরবর্তীতে এক্সটেনশন বিল্ডিং বাড়িয়ে সিট সংখ্যা প্রায় ১৫০০ করা হয়। যা বর্তমানেও চলমান। তবুও শিক্ষার্থীদের তুলনায় এ সিট সংখ্যা খুবই নগণ্য।

শুধু যে সিট বা আসন সমস্যা তা নয়। কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে এমন শত শত সমস্যা ভর করে আছে যা সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ফেস করতে হচ্ছে। আসন সংকট ছাড়াও সাইকেল বই চুরি, সিসিটিভির অপর্যাপ্ততা, ব্যবহার অনুপযুক্ত ওয়াশরুম, সুপেয় পানির অভাব, বহিরাগত শিক্ষার্থীদের অনুপ্রবেশ, মেট্রোরেল ও যানবাহনের সৃষ্ট শব্দদূষণ, নেটওয়ার্কিং সমস্যা, ইন্টারনেট সেবা না থাকাসহ নানামুখী অব্যবস্থাপনা দেখা যায়। 

এ শত সমস্যার মধ্যে টয়লেট-ওয়াশরুমের সমস্যাটা সবার প্রথমে দৃষ্টিগোচর হয়। কারণ লাইব্রেরিতে ঢুকতেই প্রথম তলায় টয়লেটের দুর্গন্ধ নাকে লাগে। কাদা-পানি মাখা স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থা প্রধান দরজা থেকে বাথরুমের দরজা পর্যন্ত চিহ্ন আকা। দেখে মনে হয় কোন বিখ্যাত গণিতবিদ বড় কোন জ্যামিতিক সমাধানের জন্য বিরাট এক সরলরেখা এঁকে রেখেছে। টয়লেট থেকে আসা দুর্গন্ধ অসহনীয় পর্যায়ে চলে যায়। টয়লেটের সিলিন্ডারসহ চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ব্যবহৃত টিস্যু পেপার।

দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার ওয়াশরুমগুলোর অবস্থাও সেম। প্রায় ১৫০০ শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়াশরুমের সংখ্যা মাত্র ১৮টি। আর মেয়েদের জন্য মোটে ৪টি ওয়াশরুম বরাদ্দ। ফলে প্রায়ই ওয়াশরুমে যেতে হলে দীর্ঘ সিরিয়ালের প্রয়োজন হয়।

গত ১৫ই নভেম্বর সাধারণ শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরির এসব সমস্যা নিয়ে জোর আন্দোলন করে। তারা দাবি করে যে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত আসনসংখ্যা নিরসনসহ পর্যাপ্ত টয়লেট বৃদ্ধি করা এবং এর স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ বজায় রাখতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা। তবে এ ব্যাপারে প্রধান লাইব্রেরিয়ান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য বলেন, এ সমস্যা ইদানিং বেড়ে গেছে। মূলত জায়গা সংকুলানের কারণে এ সমস্যা প্রকট হয়েছে। টয়লেটের সংস্কার কার্যক্রমের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। তাঁরা শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে বলেন, খুব শীঘ্রই এ সমস্যার সমাধান হবে।

পড়াশোনার জন্য চাই সুস্থ, সুন্দর, অনুকূল পরিবেশ। কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির এসব অব্যবস্থাপনা খুব শীঘ্রই নিরসনের জোর দাবি জানাই। মেয়েদের ওয়াশরুম বৃদ্ধিসহ সকল শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত ওয়াশরুমের ব্যবস্থা করা জরুরি। সেকেলে ব্যবস্থার পরিবর্তে আধুনিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এ সকল সমস্যা সমাধান করা প্রয়োজন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার কেন্দ্রস্থল এই লাইব্রেরিকে পড়াশোনার উপযোগী এবং শিক্ষার্থীবান্ধব করা হোক।

লেখক: শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় 
ই-মেইল: infohabiburrahman0@gmail.com


সর্বশেষ সংবাদ