নববর্ষ ঘিরে ঢাবির দোয়েল চত্বরে বিলুপ্তপ্রায় হস্তশিল্পের মেলা
- আজবার রাজ
- প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৫৬ PM , আপডেট: ৩০ নভেম্বর -০০০১, ১২:০০ AM

বাঙালির জীবনের সঙ্গে হস্তশিল্পের সম্পর্ক বহু দিনের। মাটির তৈরি পণ্য, কাঠ-বাঁশের কাজ, বেত-পাটের জিনিস এসব কেবল সাজসজ্জারই উপকরণ নয়, এগুলো যেন বাঙালির জীবনের গল্পও বলে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের সামনে শিশু একাডেমির পাশেই দোয়েল চত্বর। এই জায়গায় সারা বছরই বসে হস্তশিল্প সামগ্রীর দোকান। তবে নববর্ষ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন মৃৎশিল্প এবং কুটিরশিল্পের পণ্য নিয়ে সাজানো হয়েছে ছোট ছোট দোকান। মাটির তৈরি ফুলদানি, ব্যাংক, ঘোড়া, হাতি, কলমদানি, প্লেট, কাপ, চামচ ও ওয়ালমেট সহ ঘর সাজানোর নানা জিনিস পাওয়া যায় এখানে। পহেলা বৈশাখ সামনে রেখে এসব পণ্যে যোগ হয়েছে নতুন রঙের ছোঁয়া।
দোকানগুলোয় স্পষ্ট দেখা যায় বাঙালিয়ানার ছাপ; পোড়ামাটির টেরাকোটা, কাঠের খোদাই, মাটির গয়না। শহরের শৌখিন মানুষজন এসব জিনিস কিনতে ভিড় করছেন দোয়েল চত্বরে। এখানকার দোকানে মাটির জিনিসের পাশাপাশি থাকছে কাঠ, বেত, পাট, পিতল, কাসার নানা পণ্য। কাঠের গহনার বাক্স, টেবিল ল্যাম্প, পাটের ব্যাগ কিংবা মাটির শোপিস সবই পাওয়া যাচ্ছে তুলনামূলক কম দামে। ঢাকা গেট থেকে শিশু একাডেমি পর্যন্ত ফুটপাতে রয়েছে ৪০টিরও বেশি দোকান। পটুয়াখালী, সাভারসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা কারিগরেরা মাটির তৈরি এসব পণ্য এনে এখানে বিক্রি করেন। কুমোরটুলিতে তৈরি হয় এসব পণ্য—চাক ঘুরিয়ে, হাতে গড়া, মনের ভাবনায় তৈরি হয় একেকটা শিল্পকর্ম।
প্রায় ২৫ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছেন আরিফুল ইসলাম। তিনি জানান, “এ বছর অন্যান্য বারের তুলনায় ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। মালামালও বেশি এসেছে।”
বিভিন্ন পণ্য কিনছিলেন মেলায় ঘুরতে এসেছেন ড. খালেদ। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের বাংলা সনও ভুলতে শুরু করেছি। তারা (বিক্রেতারা) আমাদের সংস্কৃতি ধরে রাখার চেষ্টা করেছে। তবে এখানে এসে মনে হচ্ছে আমরা আমাদের সংস্কৃতির ভিতরে আছি। এখানে এসেই দেখতে পাচ্ছি নববর্ষ ১৪৩২।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিলুপ্তপ্রায় এই হস্তশিল্পগুলো জায়গা করে নিয়েছে ঢাকা শহরের দোয়েল চত্বরে। এখানে আসলে বোঝা যায় বাঙালির ঐতিহ্য আর সৌন্দর্যবোধ আজও হারায়নি। বরং নববর্ষের মতো উৎসবগুলোতে সেটা আরও রঙিন হয়ে ওঠে।’