বিদেশী শিক্ষার্থীদের মেডিকেলে ভর্তি যে প্রক্রিয়ায়

বিদেশী শিক্ষার্থী
বিদেশী শিক্ষার্থী  © ফাইল ফটো

দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য প্রতিবছর বিদেশী শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ আবেদন করে থাকেন। টিউশন ফি এবং থাকা-খাওয়ার খরচ কম হওয়ায় দেশের মেডিকেল কলেজগুলোতে বিদেশী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে তুলনামূলক কম খরচে পড়ালেখার সুযোগ পেয়ে থাকেন বিদেশী শিক্ষার্থীরা। আর বেসরকারি মেডিকেলে নিজেদের খরচে পড়তে হয়। সার্কভুক্ত ও নন সার্কভুক্ত দেশের ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা কোটা অনুসরণ করে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। আবেদন করার পর শিক্ষার্থীরা তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী সরকারি অথবা বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়ে থাকেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও জনশক্তি উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. এ কে এম আহসান হাবীব দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বর্তমান সরকার বিদেশী শিক্ষার্থীদের নানা রকম সুযোগ সুবিধা দিচ্ছেন। এজন্য প্রতিনিয়ত দেশের মেডিকেল কলেজগুলোতে বিদেশী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আরও পড়ুন: মার্চ-এপ্রিলে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের চিন্তা

জানা গেছে, বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলো মোট ১৮১টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে সার্কভুক্ত সাতটি দেশের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৯৯টি আসন। আর নন সার্কভুক্ত দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ৮২টি। আর বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে তাদের মোট আসনের ২৫ শতাংশ বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ থাকে।

সূত্র জানায়, আবেদনের ক্ষেত্রে বিদেশী শিক্ষা কার্যক্রমে এসএসসি-এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বরের সার্টিফিকেট সমূহ বাংলাদেশে প্রচলিত জিপিএতে রূপান্তর করে সমতাকরণ সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হয়। সার্টিফিকেট সমতাকরণ করতে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) বরাবর আবেদন করতে হয়। আবেদনের সাথে ২ হাজার টাকার ব্যাংক ড্রাফট/পে অর্ডারসহ সংযুক্ত করতে হবে। এরপর সমতাকরণ সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হবে। সার্টিফিকেটের সাথে শিক্ষার্থীদের একটি আইডি দেওয়া হবে। এই আইডি দিয়েই পরবর্তীতে আবেদন করতে হয়।

আরও পড়ুন: এমবিবিএস প্রথম বর্ষের মাইগ্রেশনের তালিকা প্রকাশ সোমবার

বিদেশী পাসপোর্টধারী অথবা বাংলাদেশের নাগরিক যারা বিদেশ থেকে এসএসসি এবং এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তাদের মার্কসীটসমূহ সংশ্লিষ্ট দেশের বাংলাদেশের দূতাবাস অথবা বাংলাদেশে অবস্থিত সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাস এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের থেকে সত্যায়িত করতে হবে। এছাড়া সমতাকরণ সার্টিফিকেট দেওয়া হয় না।

জানা গেছে, আবেদন ফি ও সার্টিফিকেটের নম্বর সমতাকরণ ফি বাবদ একজন বিদেশী শিক্ষার্থীর ৭০ মার্কিন ডলার খরচ পড়ে। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমান ৫ হাজার ৯৯২ টাকা। আবেদনের সময় কোন মেডিকেলে পড়তে চায় সেটি আবেদনপত্রে উল্লেখ করে দিতে হবে। সরকারি মেডিকেলে পড়ার ক্ষেত্রে একজন বিদেশী পাসপোর্টধারী সরাসরি ভর্তির সুযোগ পেয়ে থাকেন। আর বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের দেশের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি হতে হয়।

আরও পড়ুন: সরকারি মেডিকেলে প্রথম বর্ষে আসন ফাঁকা ৭৯টি

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিদেশী পাসপোর্টধারীদের সরকারি মেডিকেল কলেজে আবেদনের ক্ষেত্রে এসএসসি-এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় নম্বর সমতাকরণে নূন্যতম ৮ স্কোর করতে হয়। আর বেসরকারি মেডিকেলের ক্ষেত্রে ৭ স্কোর পেলেই আবেদন করা যায়। আবেদনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সনদের সত্যায়িত কপি ও পাসপোর্টের ফটোকপি জমা দিতে হয়।

সার্কভুক্ত দেশের শিক্ষার্থীদের আসন সংখ্যা

দেশের মেডিকেল কলেজগুলোতে সবচেয়ে বেশি পড়তে আসে সার্কভুক্ত দেশের শিক্ষার্থীরা। সার্কভুক্ত ৭টি দেশের ৯৯টি আসনের মধ্যে ভারত ২২, পাকিস্তান ২১, নেপাল ১৯, ভুটান ১৫, শ্রীলঙ্কা ১৩, মালদ্বীপ ৬ এবং আফগানিস্তানের শিক্ষার্থীদের জন্য ৩টি আসন বরাদ্দ রয়েছে।

নন সার্কভুক্ত দেশের শিক্ষার্থীদের আসন সংখ্যা

নন সার্কভুক্ত দেশের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্যালেস্টাইন ১৩, মায়ানমার ৫, এছাড়া মালয়েশিয়া, ইউএসএ, ইউকে এবং স্পেনের শিক্ষার্থীদের জন্য ৬৪টি আসন বরাদ্দ রয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ