১০ শিক্ষার্থী করোনায় আক্রান্ত, তবুও পরীক্ষার তোড়জোড়

এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ
এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ  © ফাইল ফটো

একই ব্যাচের ১০ শিক্ষার্থী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরেও ফাইনাল প্রফ পরীক্ষা আয়োজনের তোড়জোড় শুরু করেছে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ। একদিকে করোনা সংক্রমণের ভয়; অন্যদিকে পর্যাপ্ত ব্যবহারিক ক্লাস না হওয়ায় পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তবে কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করেই পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। 

জানা গেছে, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ২০১৯-২০ সেশনের ৫৮ ব্যাচের প্রায় ১০ শিক্ষার্থী করোনায় আক্রান্ত। এদের মধ্যে চারজন হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। বাকিরা বিভিন্নভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যেই আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে ৫৮ ব্যাচের প্রথম প্রফ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। 

করোনায় আক্রান্ত হওয়াসহ ওই ব্যাচের একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বললে তারা জানায়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ওসমানী মেডিকেল কলেজের ৫৮তম ব্যাচের সশরীরে ক্লাস শুরু হয়। করোনার বন্ধে অনলাইনে ক্লাস হলেও অধিকাংশ ক্লাস ব্যবহারিক হওয়ায় সেভাবে কিছুই শিখতে পারেননি তারা। এছাড়া ব্যবহারিক ক্লাস করতে গিয়ে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যদের মধ্যেও করোনা উপসর্গ দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় পরীক্ষা পেছানোর দাবি তাদের।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি গোপন রাখতে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য মেডিকেল কলেজে প্রফ পরীক্ষা নভেম্বরের শেষ দিকে অথবা ডিসেম্বরে নেওয়া হলেও কেবলমাত্র ওসমানী মেডিকেল কলেজেই অক্টোবর মাসে পরীক্ষা নেওয়া হবে। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৫৮ ব্যাচের এক শিক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, আমাদের সশরীরে ক্লাস শুরুর পর গাদাগাদি করে ব্যবহারিক ক্লাস করানো হয়েছে। ইতোমধ্যে আমাদের ব্যাচের ১০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৷ অন্যদের মধ্যেও করোনা উপসর্গ দেখা গেছে। এই অবস্থায় ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়ার যৌক্তিকতা কতটুকু তা আমার বোধগম্য নয়।

আরেক শিক্ষার্থী জানান, আমরা হোস্টেলে এক রুমে ৬ থেকে ৭ জন একসঙ্গে থাকি। এতে করে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর মধ্যেই আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে আমাদের প্রথম প্রফেশনাল পরীক্ষার ডেট দিছে। অথচ দেড় বছর অনলাইন ক্লাস করায় আমাদের প্রফেশনাল এক্সাম নিয়ে কোনো আইডিয়া নেই। এছাড়া আমাদের অনেক সহপাঠী করোনায় আক্রান্ত। এই অবস্থায় পরীক্ষা পেছানো উচিৎ।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেলে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মইনুল হক শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা করোনায় আক্রান্ত তাদের উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি তারা দ্রুতই সুস্থ হয়ে যাবেন।

ব্যবহারিক ক্লাস না করিয়ে পরীক্ষা নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করোনার বন্ধে আমাদের নিয়মিত অনলাইন ক্লাস হয়েছে। এছাড়া গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে সশরীরে ক্লাস হচ্ছে। আমাদের শিক্ষকরা আন্তরিকতার সাথে শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক শিখিয়েছেন। ফলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না। কারা অভিযোগ করেছে সে বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই। আমাদের হাতে এখনো এক মাসের মতো সময় আছে। আমরা যথা সময়েই পরীক্ষা আয়োজন করতে চাই।

সার্বিক বিষয়ে জানতে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরীর ব্যবহৃহ মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে অপরপ্রান্ত থেকে জানানো হয়, তিনি ঘুমোচ্ছেন। পরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।


সর্বশেষ সংবাদ