রামেবিতে প্রতীকী বিষপান কর্মসূচি, অসুস্থ ১৫ শিক্ষার্থী
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:০২ PM , আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৩ PM
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করেন রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) বৈষম্যবিরোধী নার্সিং অনুষদের শিক্ষার্থীরা। এসময় অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অসুস্থ শিক্ষার্থীদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে।
এ কর্মসূচিতে রামেবি অধিভুক্ত রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট সরকারি নার্সিং কলেজ এবং বগুড়া, সিরাজগঞ্জসহ রাজশাহী সহ বিভিন্ন বেসরকারি নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) থেকে নগরীতে আন্দোলন করছেন (রামেবি) বৈষম্যবিরোধী নার্সিং অনুষদের শিক্ষার্থীরা। গলায় রশি ঝুলিয়ে প্রতীকি ফাঁস দিয়ে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা। প্রথমে পরীক্ষা গ্রহণের এক দফা দাবি থাকলেও বর্তমানে ৭ দাবিতে পৌছেছে।
দাবিগুলো হলো—
১. স্থগিত হওয়া ২০১৯-২০ সেশনের বিএসসি-ইন-নার্সিং কোর্সের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে দুই কার্যদিবসের মধ্যে যে কোনো কর্মকর্তাকে পরীক্ষা পরিচালনার জন্য নির্বাহী দায়িত্ব প্রদান করতে হবে অথবা দুই কার্যদিবসের মধ্যে রামেবিতে নতুন উপাচার্য নিয়োগ দিতে হবে।
২. পরীক্ষা কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থায় পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করতে হবে।
৩. আগামী পহেলা অক্টোবর থেকে হাসপাতালে, আমাদের ইন্টার্নশিপ শুরু নিশ্চিত করতে হবে।
৪. বেসরকারি কলেজসমূহে পরীক্ষার ফরম ফিলাপের অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ বন্ধ করতে হবে।
৫. রামেবিতে পরীক্ষার রেজাল্ট চ্যালেঞ্জের ফি প্রতি সাবজেক্ট ৫ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ১ হাজার টাকা করতে হবে।
৬. রাজশাহীস্থ বেসরকারি নার্সিং কলেজের বিএসসি শিক্ষার্থীদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
৭. রামেবির নার্সিং অনুষদে সেশনজট সৃষ্টি, পরীক্ষা বানচাল ও জটিলতার ঘটনায় সন্দেহভাজন ১২ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অপসারণপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা গণমাধ্যমকে জানান, শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ২০১৯-২০ সেশনের বিএসসি-ইন-নার্সিং কোর্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে ৯ মাস পিছিয়ে আছি। কবে নাগাদ আমাদের পরীক্ষা হবে, কোনো নিশ্চয়তা আমরা পাচ্ছি না। সংশ্লিষ্টদের গাফেলতির কারণে চরম অনিশ্চয়তায় ২৩টি কলেজের প্রায় ৩ হাজার নার্সিং শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ।
এদিন বিএসসি চতুর্থ বর্ষের রিসার্চ-ইন-নার্সিং পরীক্ষা দেন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের ভেতর থেকেই চারজনকে উপাচার্য, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও পরীক্ষা কক্ষ পরিদর্শক (এক্সটারনাল ও ইন্টারনাল) করা হয়। এসময় হঠাৎ পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর আন্দোলনকারী সিংহভাগ পরীক্ষার্থীকে ফেল দেখিয়ে ফলাফল প্রকাশ করা হয়। হতাশ হয়ে প্রতীকী বিষপান করেন শিক্ষার্থীরা। প্রতীকী বিষপানে অন্তত ১৫ জনকে রামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
রামেবিতে নার্সিংয়ের পরীক্ষা নিয়ে নাটকীয়তা, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ করেন তারা।আন্দোলনের সমন্বয়ক রায়হান আলী বলেন, যে সময়ে পড়ার টেবিলে বই-খাতা নিয়ে থাকতাম, হাসপাতালে ইন্টার্নশিপে গিয়ে রোগীদের সেবা করতাম; সেই সময়ে রোদ-বৃষ্টি ও অসংখ্য বাঁধা মোকাবেলা করে আন্দোলন করতে হচ্ছে আমাদের। দেওয়ালে আমাদের পিঠ ঠেকে যাওয়ায় রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ থেকে এসে দিনের পর দিন রাস্তায় পড়ে আছি। বেশ কয়েকজন অসুস্থ। দাবি না মানলে মৃত্যু ছাড়া কোনো পথ নেই।
রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা. শংকর কে বিশ্বাস বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক ছিল। অন্তত ১১ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলছে। আশা করি, সুস্থ হবেন তারা।