আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা হারানোর ঝুঁকিতে দেশীয় এমবিবিএস

আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা হারানোর ঝুঁকিতে দেশীয় এমবিবিএস
আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা হারানোর ঝুঁকিতে দেশীয় এমবিবিএস  © ফাইল ছবি

২০২৪ সালের জুনের মধ্যে বাংলাদেশকে ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশনের (ডব্লিউএফএমই) স্বীকৃতি পেতে হবে। এজন্য কলেজগুলোতে শিক্ষক সংকট, অবকাঠামোসহ ১১টি শর্ত পূরণ করতে হবে বাংলাদেশকে। এটি সম্ভব না হলে বিশ্বের অনেক দেশে বাংলাদেশের ব্যাচেলর অব মেডিসিন, ব্যাচেলর অব সার্জারি (এমবিবিএস) ডিগ্রি গ্রহণযোগ্যতা হারাবে।

সারা বিশ্বে মেডিকেল কলেজের আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিতে কাজ করে ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন। জানা যায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ডব্লিউএফএমইর যৌথ টাস্কফোর্সের সুপারিশের ভিত্তিতে ২০২৪ সালের মধ্যে বিশ্বের সকল দেশের মেডিকেল শিক্ষা একটি অ্যাক্রেডিটেশনে চলে আসাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

তিন মাস আগে জাতীয় সংসদে চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রেডিটেশন বিল পাস হয়েছে। এর আলোকে মেডিকেল অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল গঠিত হলেই বাকি কাজটা সম্পন্ন হয়ে যাবে। -অধ্যাপক আবুল বাশার, অতিরিক্ত মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতি দ্রুত ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশনের গাইডলাইন অনুযায়ী কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু চাকরি নয় বিভিন্ন প্রশিক্ষণে যেতে হলেও এই স্বীকৃতি দরকার। এ স্বীকৃতি না পেলে বিদেশে বন্ধ হয়ে যেতে পারে বাংলাদেশি ডাক্তারদের চাকরি ও প্রশিক্ষণের সুযোগও।

এদিকে, গত চলতি বছরের গত ৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে মানসম্মত চিকিৎসা শিক্ষা ও সেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষে বাংলাদেশ চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রেডিটেশন বিল, ২০২৩ পাস হয়। বিলটি পাসের প্রক্রিয়ায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মান উন্নয়ন ও মান নিশ্চিতকরণের লক্ষে স্বাধীন অ্যাক্রেডিটেশন কমিশন গঠনের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) এবং ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডাব্লিউএফএসই) এর যৌথ টাস্কফোর্সের সুপারিশ রয়েছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা এবং আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল গঠন এবং সংশ্লিষ্ট বিধি-বিধান প্রণয়নের লক্ষে বাংলাদেশ চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রেডিটেশন আইন প্রণয়ন করা অতি প্রয়োজনীয় ও যুক্তিযুক্ত।

ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশনের স্বীকৃতির জন্য দেশে মেডিকেল অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল গঠন করতে হবে। তবে আইন পাস হলেও মেডিকেল এক্রিডিটেশন কাউন্সিল গঠনের বিষয়টি এখনো ঝুলে আছে। তিন মাস আগে এ সংক্রান্ত আইন পাস হলেও এখনো কাউন্সিল গঠন করা যায়নি।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মো. জামাল বলেন, তিন মাস আগে জাতীয় সংসদে চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রেডিটেশন বিল পাস হয়েছে। এর আলোকে মেডিকেল অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল গঠিত হলেই বাকি কাজটা সম্পন্ন হয়ে যাবে।

স্বীকৃতি না পেলে দুটি বড় ধরনের ক্ষতি হবে। একটা হলো আমাদের দেশের অনেক ডাক্তার যারা বিদেশে গিয়ে চাকরির সুযোগ পেতেন। তারা সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন। আরেকটি হলো বিদেশি শিক্ষার্থীরাও এখানে আসতে নিরুৎসাহিত হবেন। -অধ্যাপক ডা. টিটো মিয়া, মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর

বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসের (বিসিপিএস) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, বাংলাদেশকে এখন অত্যন্ত দ্রুততার সাথে ওয়ার্ল্ড ফেডারনের গাইডলাইন অনুযায়ী কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে করে আমাদের চিকিৎসকরা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত না হন। শুধু চাকরি-বাকরি নয়, আমাদের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের জন্যেও বহির্বিশ্বে যেতে হয়। আবার ফেরত আসতে হয়। এ স্বীকৃতি না থাকলে এ প্রশিক্ষণের সুযোগও বাতিল হয়ে যাবে।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. টিটো মিয়া বলেন, স্বীকৃতি না পেলে দুটি বড় ধরনের ক্ষতি হবে। একটা হলো আমাদের দেশের অনেক ডাক্তার যারা বিদেশে গিয়ে চাকরির সুযোগ পেতেন। তারা সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন। অন্যদিকে বিদেশি যেসব শিক্ষার্থী যারা আমাদের দেশে পড়তে আসেন, তারাও তখন এ ব্যাপারে নিরুৎসাহিত হবেন।


সর্বশেষ সংবাদ