স্বাক্ষর জাল করে দপ্তরিকে চাকুরিচ্যুত করার অভিযোগ অধ্যক্ষ ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে

  © টিডিসি ফটো

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার গোয়াল ভিটা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আনোয়ার হোসেন এবং সহকারী শিক্ষক মো. উজাউল ইসলামের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জাল করে মো. আব্দুল হামিদ নামের এক দপ্তরিকে চাকুরিচ্যুত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই দপ্তরি গোপনে অব্যাহতি পত্র প্রস্তুত করে চাকুরি থেকে ইস্তফা দেখানো ও বেতন থেকে বঞ্চিত করায় মাদ্রাসার সভাপতিসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাদ্রাসার দপ্তরি পদে আব্দুল হামিদ গত ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১ জুন থেকে নিয়মিতভাবে কর্মরত ছিলেন। তার ৮ম পাশের সনদ ও জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী জন্ম তারিখ ১ জানুয়ারি ১৯৬২। এই মোতাবেক সরকারি বিধি অনুসারে তার চাকুরি থেকে অবসর যাওয়ার কথা ২০২১ খ্রিস্টাব্দের ৩১ ডিসেম্বর। কিন্তু ২০২১ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে অধ্যক্ষ তাকে জানান যে, তার চাকুরির বয়স শেষ হয়েছে বিধায় তিনি আমাকে তৎপরবর্তী সময়ের বেতন-ভাতা ও প্রদান করেননি। তিনি সরল বিশ্বাসে তার কথা মেনে নিয়েছেন। বর্তমান কমিটি আয়ব্যয় পর্যালোচনায় দেখতে পান যে, তার চাকুরি থাকা অবস্থায় তার ইস্তফা দেখানো হয়েছে খবরটি শুনে এবং অব্যাহতি পত্র দেখে তিনি বিস্মিত হন। 

অভিযোগে তিনি আরও বলেন, সহকারী শিক্ষক উজাউল ইসলাম নিজ হাতে তার অব্যাহতিপত্র প্রস্তুত করে সুকৌশলে তার অজান্তে তাকে চাকুরি হতে ইস্তফা দেখিয়েছেন। ওই ইস্তফা পত্রে মো. উজাউল ইসলামের নিজ হাতে লেখা, যেটি উনি নিজে সাক্ষর করেনি। 

তিনি বলেন, ‘অথচ সরকারি বিধান মতে আমার আরো ৪ মাস চাকুরি ছিল।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী দপ্তরি আব্দুল হামিদ বলেন, ‘অধ্যক্ষ এবং উজাউল আমাকে বিনা বেতনে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে নতুন দপ্তরি নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আমাকে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করতে বলেন। সে মোতাবেক আমার দ্বারা ২০২২ খ্রিস্টাব্দের ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিনা বেতনে মাদ্রাসার দায়িত্ব কর্তব্য পালন করে নিয়েছেন। আমার সম্পূর্ণ অজ্ঞাতসারে আমার ইস্তফাপত্র প্রস্তুত করে আমাকে বেতন থেকে বঞ্চিত করায় আমি উক্ত ৪ মাসের বেতন এবং বিধি অনুযায়ী অবসর ও কল্যাণ সুবিধা থেকে আংশিক বঞ্চিত ও প্রতারণার শিকার হয়েছি। আমার এই ইস্তফা পত্রে আমি স্বাক্ষর করিনি। এটা উজাউল ও অধ্যক্ষ মিলে করেছে। আমি এর বিচার চাই।’

জানতে চাইলে ইস্তফাপত্র লেখে দেওয়ার কথা শিকার করে শিক্ষক উজাউল বলেন, ‘আমাকে ড্রাফট করে দিয়েছে সেটাই আমি লেখে দিয়েছি। আমি এতে স্বাক্ষর করিনি।’ তবে ভুক্তভোগীর স্বাক্ষরের সাথে ইস্তফাপত্রের স্বাক্ষরের মিল নেই কেন? এ প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ার পর থেকে আমাকে আর মাদ্রাসায় ঢুকতে দেয়নি। যে বিষয়ে অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা। সেই সময় দপ্তরি নিজেই চাকুরিতে ইস্তফা নিয়েছে। এখন তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ উঠিয়েছে, যা ভিত্তিহীন।’ 

অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত নিয়ে মাদ্রাসার সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে সত্যতা পেলে বিধিমতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’


সর্বশেষ সংবাদ