কওমি শিক্ষার্থীদের স্টুডেন্ট ভিসা দেয় না ভারত: শিক্ষক পরিষদ

সংবাদ সম্মেলন
সংবাদ সম্মেলন  © সংগৃহীত

মসজিদকে ধর্মীয় শিক্ষার কেন্দ্র করা, শিক্ষাব্যবস্থা যুগোপযোগী করা, শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়ন করা সহ কয়েক দফা সুপারিশ জানিয়েছে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদ। আজ মঙ্গলবার (১৩ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ জানায় সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে শিক্ষা-সাংস্কৃতিক সব বিষয়ের চুক্তি বিরাজমান থাকা সত্ত্বেও দীনি শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনও প্রকার স্টুডেন্ট ভিসা দেওয়া হয় না। উচ্চতর দীনি শিক্ষার প্রয়োজনে দেশটিতে যাওয়ার জন্য স্টুডেন্ট ভিসা উন্মুক্ত ও সহজতর করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

সংবাদ সম্মেলনটিতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কওমি মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মিজানুর রহমান চৌধুরী। শিক্ষক পরিষদের করা সুপারিশগুলো হলো–

১. সাধারণ শিক্ষার মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত দীনি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা। একইসঙ্গে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সাহেবদের মাধ্যমে সহিহ-শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত শেখানো এবং বুনিয়াদি ইসলামি শিক্ষার ব্যবস্থা করা। অন্য ধর্মের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ধর্মের শিক্ষা অর্জন করবে।

২. দীনি শিক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব আইন ও বিধিবিধান বাতিল বা সংশোধন করা।

৩. কওমি মাদ্রাসার স্বকীয়তা বজায় রাখা।

৪. মাদ্রাসা-মসজিদ দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে দাতাদের স্নান সম্পূর্ণভাবে আয়করমুক্ত রাখার আইন চালু অথবা নতুন বিধি-বিধান প্রণয়ন ও কার্যকর করা।

আরও পড়ুন:গুগলে ডাক পেলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শুভ

৫. মাদ্রাসা শিক্ষার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মনস্তাত্ত্বিক চাপ। কোনও কোনও মহল অনৈতিকভাবে প্রচারমাধ্যম ব্যবহার করে আলেমদের নানা অভিযোগে অভিযুক্ত করার চেষ্টা করে আসছে, সেসব অভিযোগের কোনও সত্যতা নেই। এ কথা বারবার প্রমাণিত হয়েছে, জঙ্গি আক্রমণ ও জঙ্গি কার্যক্রমের সঙ্গে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই জড়িত নন। তারপরও দীনি শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র বন্ধ হয়নি। এগুলো বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অপসংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে জাতিকে রক্ষা করা।

৬. ভারত আমাদের প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র। তাদের সঙ্গে আমাদের শিক্ষা-সাংস্কৃতিক সব বিষয়ের চুক্তি বিরাজমান থাকা সত্ত্বেও দীনি শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনও প্রকার স্টুডেন্ট ভিসা দেওয়া হয় না। উচ্চতর দীনি শিক্ষার প্রয়োজনে ভারতে যাওয়ার জন্য স্টুডেন্ট ভিসা উন্মুক্ত ও সহজতর করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

৭. শিক্ষা কমিশন এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে এক তৃতীয়াংশ সদস্য হিসেবে আলেমদের সম্পৃক্ত রাখা।

৮. নৈতিক অবক্ষয়রোধে প্রকাশ্যে ‘অশ্লীলতা’ বন্ধে প্রয়োজনীয় কার্যকরী আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করা। সেই সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করে জনসাধারণের মাঝে ধর্মীয় মূলবোধের চেতনা জাগিয়ে তোলা।

৯. কওমি শিক্ষাকে বিশেষায়িত শিক্ষা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া এবং আধুনিকায়নের নামে মাদ্রাসা শিক্ষা সংকোচনের ‘ষড়যন্ত্র’ প্রতিরোধ করা।

১০. প্রাথমিক স্তর অর্থাৎ মক্তব, নাজেরা, হেফজ বিভাগ, কিতাব বিভাগের ইবতেদায়ি (প্রথম শ্রেণি) থেকে ধারাবাহিক মিশকাত জামাত পর্যন্ত শ্রেণিগুলো অন্যকোনও নীতি বা আইন দ্বারা যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় তা উল্লিখিত আইনে সুস্পষ্ট করা।

১১. মুসলিম জনসাধারণের মধ্যে কোরআন ও নামাজ শুমারি করে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে মসজিদভিত্তিক ও মক্তব-মাদ্রাসা, বয়স্ক পুরুষ, মহিলা ও শিশু-কিশোরদের কোরআন শিক্ষা নিশ্চিত করা এবং নামাজি বানানোর জন্য দাওয়াতি মেহনত চালু করা।

১২. ধর্মীয় উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ এবং মাদকের আগ্রাসন থেকে জাতিকে সচেতন ও সংগঠিত করার লক্ষ্যে হক্কানি আলেমদের মাধ্যমে ওয়াজ-নসিহতের সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর করা।

১৩. নানাভাবে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে দীনি শিক্ষাকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। এমন আচরণ অতিদ্রুত বন্ধ করা।

১৪. যেহেতু মুসলিম জনগণের অর্থায়নে কওমি মাদ্রাসাগুলো পরিচালিত হয় এবং আয়ের একটি বড় উৎস কোরবানির চামড়া। তাই কোরবানির চামড়ার ন্যায্যমূল্য পাওয়ার বিষয়ে সঠিক কর্মপন্থা নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন করা।

১৫. মাওলানা মামুনুল হকসহ সব আলেম-উলামার নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার এবং কারাবন্দি আলেমদের নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া।

১৬. বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মুফতি ফয়জুল করীমের ওপর হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন– মাওলানা আশেকে মোস্তফা, মাওলানা আব্দুল বাসেত খান সিরাজগঞ্জী, মাওলানা জুবায়ের আহমেদ, মাওলানা জসিম উদ্দিন প্রমুখ।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence