৪১ দিনের ছুটিতে তা’মীরুল মিল্লাত, ছাত্রাবাস ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা
- তা’মীরুল মিল্লাত প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২৩, ১০:০০ AM , আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৩, ১০:০৭ AM
পবিত্র মাহে রমজান, শবে কদর ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আজ বুধবার (২২ মার্চ) থেকে টঙ্গীতে অবস্থিত তা'মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসায় ছুটি শুরু হয়েছে। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি ও রোজার ছুটি কাটাতে মাদ্রাসা ক্যাম্পাস ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা।
গত জানুয়ারী মাস থেকে মাদ্রাসা খোলার প্রায় তিন মাস ধরে চলছে একটানা ক্লাস-পরীক্ষা। এদিকে টানা ক্লাস-পরীক্ষায় ক্লান্ত শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন পর ছুটি পেয়ে এখন উচ্ছ্বসিত সবাই। নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছানোই এখন সবার মূল লক্ষ্য।
শহীদ তিতুমীর হলে থাকেন শিক্ষার্থী ওয়ালী উল্লাহ। পড়াশোনা করছেন আলিম ২য় বর্ষে (বিজ্ঞান)। রমজান মাসে মসজিদে তারাবিহর নামাজের ইমামতি করবেন তিনি। দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফেরার অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে আসার পর ক্লাস-পরীক্ষাসহ প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম নিয়মিত চলায় আর বাড়ি যাওয়া হয়নি। বাড়ি যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে ছিলাম। অবশেষে আজকে বাড়ি যাচ্ছি। খুবই আনন্দ লাগছে।
জানুয়ারির শেষ দিকে আলিমে ভর্তি হয়েছিলেন শিক্ষার্থী হামিদুর রহমান। একটানা ক্লাস এবং এই বন্ধের পরেই অনুষ্ঠিত হবে ১ম বর্ষের পরীক্ষা। তাই আর বাড়ি যেতে পারেননি হামিদ। তিনি বলেন, আমার বাসা বান্দরবান জেলায়। প্রায় দুই মাস পর বাড়ি যাচ্ছি। মনে হচ্ছে দুই মাস নয়, দুই বছর পর যাচ্ছি। কারণ এভাবে দূরে থেকে এতদিন কোথাও পড়াশোনা ও ক্লাস করিনি। বাড়ি যাচ্ছি, এবার একটু বিশ্রাম প্রয়োজন। আনন্দ লাগছে, আশা করি বাড়িতে ভালো সময় কাটবে।
হাজী শরীয়তুল্লাহ হলের তৃতীয় তলায় থাকেন দাখিল শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী সাবিত নিয়োগী। তার বাড়ি ময়মনসিংহের নেত্রকোনা জেলায়। তিনি জানান, আজকে মাদরাসা বন্ধ দিয়েছে, ভীষণ ভালো লাগছে। বাসায় পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদ উদযাপন করবো। বাড়িতে ছোট ভাই আছে। ঈদে অনেক খাওয়া-দাওয়া হবে। বাড়িতে গেলে সবার সাথে দেখা-সাক্ষাৎ হবে, প্রিয়জনদেরকে অনেকদিন পর একসঙ্গে দেখাটা অনেক বেশি আনন্দের।
ঈদের ছুটিতে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলা বিভাগের প্রভাষক জাহাঙ্গীর আলম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, দেশের অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তা'মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা। সকল শিক্ষার্থীকে এই সাফল্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। শিক্ষার্থীদেরকে সামনের রমজান ও ঈদের ছুটিতে অল্প অল্প করে হলেও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে। অধ্যয়নের বিকল্প অন্য কিছুই হতে পারে না। নিজের উপর আস্থা রেখে পড়াশোনা করে অন্যদের থেকে নিজেকে এগিয়ে রাখতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যতে বিশাল প্রতিযোগিতার মাঠে নিজের ঠাঁই পাওয়া কঠিন হবে। তিনি সকল শিক্ষার্থীর সুস্বাস্থ্য কামনা এবং তাদের পরিবারের সকল সদস্যদেরকে ঈদের অগ্রীম শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার (২১ মার্চ) শিক্ষকদের এক বিশেষ সভায় মাহে রমজান, শবে কদর, ঈদুল ফিতর ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি মিলিয়ে বুধবার (২২ মার্চ) থেকে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মোট ৪১ দিনের জন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ সময় সকল ধরনের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিষয়টি প্রশাসনিক ভাবে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়।
হল কিংবা ডাইনিং খোলা থাকবে কিনা জানতে চাইলে ছাত্রাবাসের সুপার অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, হল ও ডাইনিং বন্ধ থাকবে। তবে শুধুমাত্র হিফজ বিভাগের জন্য ২০ রমজান পর্যন্ত মাদ্রাসার ডাইনিং খোলা থেকে এরপর তাদেরও ছুটি হয়ে যাবে।