বইমেলায় নিষিদ্ধ ‘প্রেসিডেন্টের লুঙ্গি নাই’

জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএমের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজের একটি বই নিষিদ্ধ করা হয়েছে অমর একুশে বইমেলায়।গতিধারা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বইটির নাম 'প্রেসিডেন্টের লুঙ্গি নাই'।

বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বইমেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভাপতি অসীম কুমার দে বলেন, নীতিমালা না মানায় বইমেলায় এই বইটি বিক্রি ও প্রদর্শন করতে মানা করা হয়েছে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে। তারা আমাদের সাথে একমত হয়েছেন এবং বইটি মেলায় বিক্রি ও প্রদর্শন করছেন না।

আরও পড়ুন: একুশে বইমেলায় নিষিদ্ধ প্রীতির ‘জন্ম ও যোনির ইতিহাস’ বই

সোমবার বইটি নজরে আসার পরদিনই এই নির্দেশনা দেওয়া হয় জানিয়ে তিনি বলেন, তারা যেহেতু আমাদের নির্দেশনা মেনে নিয়েছে। এজন্য আর লিখিত নির্দেশনা দেওয়ার প্রয়োজন হয়নি।

মেলায় গতিধারার স্টলে গিয়ে দেখা যায়, বইটি বিক্রি করা হচ্ছে না। স্টলের বিক্রয়কর্মীরা জানান, মঙ্গলবার থেকেই মেলায় আর তারা বইটি বিক্রি বা প্রদর্শন করছেন না। তবে বিভিন্ন অনলাইন বুক শপে এবং বাংলাবাজারে তাদের নিজস্ব কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হচ্ছে।

গতিধারার নির্বাহী পরিচালক আহমেদ কাওসার বলেন, মেলা কমিটি থেকে মৌখিকভাবে আমাদেরকে বলেছে বইটি বিক্রি বা প্রদর্শন না করতে। আমরা আর বিক্রি করছি না। বইটি নিয়ে বাংলা একাডেমি কী আপত্তি তুলেছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, বইয়ের নাম দেখেই মূলত আপত্তি করেছে, বইটার ভেতরে আসলে আপত্তিকর কিছু নাই।

আরও পড়ুন : আমি বাংলা সাহিত্যের ইমরান হাশমি

বইয়ের লেখক ববি হাজ্জাজ বলেন, এটি মূলত একটি উপন্যাস। আমি নিশ্চিত করেই বলতে পারি, এখানে কোনো ব্যক্তি বিশেষকে কটাক্ষ বা কুরুচিপূর্ণ কিছু লেখা হয়নি। আমি যতটুকু জেনেছি, তারা বইটির নাম নিয়ে আপত্তি করেছে। পুরো বইটি তারা পড়েননি। পড়লে আমার মনে হয় বইটি সম্পর্কে তাদের নেতিবাচক ধারণা হবে না। এই বইটি সবাই পছন্দ করবেন। বইটি নিষিদ্ধ করার আগে লেখকের সঙ্গে বাংলা একাডেমি যোগাযোগ করেনি বলে ববি জানান।

উপন্যাসটির ফ্ল্যাপে বইটি সম্পর্কে বলা হয়েছে, কল্পনার এক আজব দেশ, যেখানে সব নিয়মকানুন তৈরি করে পোকামাকড়রা। তাদের ইশারাতেই পরিচালিত হয় দেশ। সেই দেশে আবার রাজনীতিও চলে, তবে সেটা প্রহসনের রাজনীতি। আর সেই রাজনীতির এক উত্তাল সময়ে আকস্মিকভাবে প্রেসিডেন্টকে তুলে নিয়ে যায় কীটপতঙ্গের হর্তাকর্তারা। কোথায় নিয়ে যায়, কেন নিয়ে যায় এর কোন জবাব দিতে তারা নারাজ। সেই ঘটনার একমাত্র সাক্ষী খালিদ। উত্তাল সেইসময়ের ঘটনাচক্রে পড়ে খালিদ তার নিজের আত্মপরিচয় খুঁজতে শুরু করে।

আরও পড়ুন : বিয়ে ভেঙে বিয়ের পিঁড়িতে দুই জেলা প্রশাসক

মেলায় বই নিষিদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় ববি হাজ্জাজ বলেন, একজন লেখক হিসেবে এবং এই দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমি বিশ্বাস করি, অবাধ মত প্রকাশের স্বাধীনতা আমাদের সবার থাকা উচিৎ। সাহিত্যের একটা কাজ এভাবে জনগণের কাছ থেকে অবরুদ্ধ করে করে রাখাটা সবভাবেই মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে রুদ্ধ করা হয় এবং দেশের তরুণ সমাজ বা আগামী সমাজের বিকাশকে রুদ্ধ করার মতোই একটা কাজ এটা। এটাকে আমরা অত্যন্ত নীতিবাচক মনে করি।

এর আগে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমির টাস্কফোর্সের নির্দেশে অমর একুশে বইমেলায় প্রবাসী লেখিকা জান্নাতুন নাঈম প্রীতির বই বিক্রি বন্ধ করেছে নালন্দা প্রকাশনী। বইমেলার নীতিমালা পরিপন্থী ব্যক্তিগত আক্রমণ ও বিচারকদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য থাকায় নালন্দা প্রকাশনীকে বইটি মেলায় প্রদর্শন ও বিক্রি না করার নির্দেশনা দেয় বাংলা একাডেমির টাস্কফোর্স।


সর্বশেষ সংবাদ