১৯ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম রুফাইদা, বললেন— ‘বাবা-মায়ের স্বাবলম্বী মেয়ে হতে চাই’

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী রুফাইদা নূর। জিএসটি গুচ্ছভুক্ত ১৯ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষায় ‘গ’ (ব্যবসায়) ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ১ম স্থান অধিকার করেন। পরীক্ষায় নিজের সাফল্যের গল্প নিয়ে মুখোমুখি হয়েছেন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের। তার কথাগুলো শুনেছেন—আমান উল্যাহ আলভী।
ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতিতে আপনার অনুপ্রেরণা কি ছিল?
অবশ্যই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় টার্গেট ছিল। বাবা-মায়ের স্বাবলম্বী মেয়ে হতে চাই যেন পরবর্তীতে আমাকে নিয়ে কোনো চিন্তা করতে না হয়। আমার পড়াশোনার অনুপ্রেরণাই হলো আমার পরিবার, যখন ভাবি যে ভবিষ্যতে কিছু করলে সবাই কতো খুশি হবে তখনি আমার পড়ার প্রতি উৎসাহ বেড়ে যায়। এখন যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন শুরু হয়নি, তবুও এই ফল আমাকে সামনে আগাতে সাহায্য করবে, আলহামদুলিল্লাহ।
প্রস্তুতিকালীন সময়ে কীভাবে পড়ালেখা করতেন?
আমার ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি প্রধানত আমার কোচিংয়ের ‘প্যারাগন ইউনিভার্সিটি অ্যাডমিশন কোচিং’ লক্ষ্মীবাজার শাখার ক্লাস ও পরীক্ষাকে ঘিরেই হয়েছে। আমি সেই রুটিন অনুযায়ী নিয়মিত পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছি। সবার পড়ার সময় এক হয় না তাই আমার পড়াশোনাও দৈনিক এক থাকতো না। তবে পরীক্ষার আগের কয়েকদিন ৭-৮ ঘণ্টার মতো পড়েছি। রিভিশন দেওয়ার সময় শুধু মুখস্থ অংশটা রিভাইস করেছি কারণ বেসিক পড়াটা ভালোভাবে আয়ত্ত করতে সফল হয়েছিলাম।
প্রস্তুতি সময়ে অনেক সময় হতাশায় কাজ করে পড়া নিয়ে, এই সময়গুলোতে কীভাবে নিজেকে সামলে উঠতেন?
আমার জন্য পাবলিকে চান্স পাওয়া একটি জরুরি বিষয় ছিল, তাই পড়াশোনায় এভাবেই এগিয়েছি যেন এটাই আমার শেষ সুযোগ। যদিও সবাইকে আমি এই মানসিকতা রাখতে বলব না। কারণ পৃথিবীতে ভর্তি পরীক্ষাই একমাত্র পন্থা নয় সন্তোষজনক জীবনযাপন করার তবে এরূপ মানসিকতা আমার কোনো ক্ষতি করেনি কারণ আমি পরিবার থেকে অতিরিক্ত কোনো চাপ পাইনি।
আরো পড়ুন: বাবার ইচ্ছেতেই আইন নিয়ে পড়ার স্বপ্ন, প্রথমবার সুযোগ না পেলেও সেকেন্ড টাইমে বাজিমাত
পরীক্ষার হলে কীভাবে কৌশল অবলম্বন করে পরীক্ষা দিয়েছেন?
আসলে পরীক্ষা শুরু করার কোনো বাধাধরা নিয়ম নেই, আমি প্রথম থেকে উত্তর দাগানো শুরু করেছি, তবে যারা অঙ্কে দুর্বল, তাদের বলব হিসাববিজ্ঞান শেষে দাগাতে। বাকিটুকু আল্লাহ তায়ালার উপর ছেড়ে দিতে হব, কারণ বেশিরভাগ শিক্ষার্থী টেনশনে অযথা ভুল করে।
কোন বিষয়ে পড়ার ইচ্ছা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
আল্লাহ চাইলে হিসাববিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করতে চাই, সিএ এর দিকে ঝোঁক আছে স্কুল থেকে, আল্লাহ ভাগ্যে রাখলে সেই পথেই আগাবো। এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সাম তো পিছিয়ে গেল, বাকি সবার মতো আমার ইচ্ছাও ঢাবিতেই ছিল। কোনো পরীক্ষায় প্রথম হবো ভাবিনি। তবে একটা অনুমান ছিল লাস্ট এর দিকের সিট হলেও পাবলিকে হয়ে যাবে।
গুচ্ছ ছাড়াও কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছেন কি না?
আমি গুচ্ছ ছাড়াও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪র্থ এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২তম স্থান অধিকার করেছি।
পরবর্তীতে যারা পরীক্ষা দিয়ে তাদের জন্য যদি কিছু বলতেন।
যারা ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের তাদের বলবো তোমরা এইচএসসির কয়েক মাস আগেই (অর্থাৎ এখনই) বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং এ ভর্তি হয়ে যাও। অ্যাডমিশনের সময়ে সঠিক কোচিং নির্বাচন পড়াশোনায় কতটা প্রভাব ফেলতে পারে। কেউ কোচিং এ ভর্তি হতে না পারলে প্রস্তুতির বইগুলো কিনতে বলবো। কারণ ভর্তি প্রস্তুতির বইগুলোতে প্রাসঙ্গিক তথ্য সবচেয়ে কার্যকরভাবে সাজানো থাকে।