ইতালিতে উচ্চশিক্ষা: বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য কেমন হবে এই দেশ?

ইতালিতে পড়াশোনা-বৃত্তিসহ নানা বিষয়ে ধারণা নিয়ে একজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী সহজেই দেশটিতে যেতে পারেন
ইতালিতে পড়াশোনা-বৃত্তিসহ নানা বিষয়ে ধারণা নিয়ে একজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী সহজেই দেশটিতে যেতে পারেন  © সংগৃহীত

বিশ্বমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার সুযোগ, বৃত্তিসহ পড়াশোনা এবং পড়াশোনার নামমাত্র খরচের বিষয় মাথায় রাখলে ইতালিই হতে পারে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য সেরা গন্তব্য। উচ্চশিক্ষার জন্য দেশটির সরকার বিভিন্ন ধরনের বৃত্তি প্রদান করে থাকে—শিক্ষার্থীরা প্রায় শতভাগ পর্যন্ত এসব বৃত্তি পেয়ে থাকেন।

ইতালিতে বাৎসরিক বৃত্তির পরিমাণ সাধারণত প্রায় ৬ হাজার ৫০০ থেকে ১০ হাজার ইউরো হয়ে থাকে। যা দিয়ে একজন শিক্ষার্থী সহজেই নিজের জীবনযাত্রা চালিয়ে নিতে পারেন। এসব বিষয় বিবেচনায় রাখলে একজন শিক্ষার্থীর কাছে ইতালি নিঃসন্দেহে একটি সেরা গন্তব্য।

ইতালিতে পড়াশোনা করতে যেসব বিষয়ে ধারণা রাখতে হবে একজন বাংলাদেশিকে—

১. টিউশন ফি

ইতালির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত ৮০০ থেকে ৪,০০০ ইউরোর মধ্যে হয়ে থাকে; 

২. জীবনযাত্রার খরচ

মাসিক খরচ প্রায় ৬০০-৮০০ ইউরো;

৩. ব্যাংক স্টেটমেন্ট

*ব্যাংক স্টেটমেন্টে কমপক্ষে ১০,০০০ থেকে ১৩,০০০ ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা) প্রদর্শন করা উচিত। এই পরিমাণ কোর্সের মেয়াদ ও টিউশন ফি অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে;

*ব্যাংক স্টেটমেন্ট গত ৬ মাসের এবং ব্যাংকের স্ট্যাম্প ও স্বাক্ষরসহ হতে হবে; 

*স্পন্সর থাকলে: বাবা-মা বা অভিভাবকের স্টেটমেন্ট, আয়ের প্রমাণক, স্পন্সরশিপ লেটার প্রয়োজন;

*ব্লক মানি প্রয়োজন নেই;

৪. বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়

*সাপিয়েনজা ইউনিভার্সিটি অব রোম;

*পলিটেকনিকো দি মিলানো;

*ইউনিভার্সিটি অব পাডোভা;

*ইউনিভার্সিটি অব বোলোনিয়া;

*ইউনিভার্সিটি অব ত্রেন্তো;

৫. বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন ও ডেডলাইন

আবেদনপ্রক্রিয়া সাধারণত নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে মে বা জুন পর্যন্ত চলে। উদাহরণস্বরূপ: সাপিয়েনজা ইউনিভার্সিটি অব রোমে নন-ইইউ ভিসা প্রার্থীদের জন্য প্রি-সিলেকশন ডেডলাইন ২৯ এপ্রিল ২০২৫। 

৬. স্কলারশিপ

*DSU স্কলারশিপ;

*ইতালিয়ান গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ;

*বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক স্কলারশিপ;

৭. স্টাডি গ্যাপ

ব্যাচেলর প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ২ বছর এবং মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ৮ বছর পর্যন্ত স্টাডি গ্যাপ গ্রহণযোগ্য, যদি তা যথাযথভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। ​

৮. আইইএলটিএস (IELTS)

সাধারণত IELTS ৫.৫ থেকে ৬.০ প্রয়োজন হয়, তবে কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি মাধ্যমে পূর্ববর্তী শিক্ষার প্রমাণ দিলে IELTS ছাড়াও আবেদন গ্রহণ করে। 

৯. ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া

*ভিসা টাইপ: ডি-টাইপ ন্যাশনাল ভিসা;​

*বাংলাদেশে ইতালির দূতাবাসে সরাসরি আবেদন করা যায়; পূর্বনির্ধারিত অ্যাপয়েন্টমেন্টের প্রয়োজন নেই; 

১০. স্পাউস ও সন্তান নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া

সাধারণত, স্টুডেন্ট ভিসার সঙ্গে স্পাউস ও শিশুদের একসঙ্গে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

১১. ইতালিতে পড়াশোনা শেষে স্থায়ীভাবে বসবাসের নানা ধাপ

পড়াশোনা→কাজ খোঁজার পারমিট (১ বছর) (১২ মাসের জন্য "Permesso di Soggiorno per Ricerca Lavoro")→চাকরি পেয়ে কাজের পারমিট (চাকরি পেলে "Permesso di Soggiorno per Lavoro Subordinato" এ রূপান্তর)→৫ বছর পর স্থায়ী রেসিডেন্স পারমিট→১০ বছর পর নাগরিকত্ব।​

১২. সুযোগ-সুবিধা

*টিউশন ফি ও জীবনযাত্রার খরচ কম;

*বিভিন্ন স্কলারশিপের সুযোগ আছে;

*ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশে ভ্রমণের সুযোগ আছে;

*আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাব্যবস্থা;​

১৩. অসুবিধা

*ইতালিয়ান ভাষার প্রয়োজনীয়তা (বিশেষ করে দৈনন্দিন জীবনে);

*ভিসাপ্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ হতে পারে;

*কিছু ক্ষেত্রে চাকরির সুযোগ সীমিত হতে পারে।


সর্বশেষ সংবাদ