তৃতীয়বারের চেষ্টায় সহকারী জজ ইবির সেলিনা

সেলিনা শেলী
সেলিনা শেলী  © টিডিসি ফটো

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের (বিজেএসসি) নিয়োগ পরীক্ষায় সহকারী জজ পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন সেলিনা শেলী। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। সারাদেশে মোট ১০৪ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। তিনি দু’ইবার ভাইভা ফেরত হয়ে আসলেও হতাশ হননি।ফলে তৃতীয়বারের চেষ্টায় কাঙ্ক্ষিত সফলতা পেয়েছেন। সম্প্রতি তিনি তার সাফল্য ও শিক্ষা জীবন নিয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের মুখোমুখি হয়েছেন। তার কথাগুলো শুনেছেন মো. রাকিব হোসেন

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনাকে অভিনন্দন। আপনার জন্ম, শৈশবকাল সম্পর্কে জানতে চাই।
সেলিনা শেলী: আমার বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার চেউটিয়া গ্রামে। শৈশব কেটেছে গ্রামে বাবা মায়ের সঙ্গে। নিজ এলাকা থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাশ করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ ভর্তি হই।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: সহকারী জজ পরীক্ষা উত্তীর্ণ হওয়ার পর আপনার অনুভূতি সম্পর্কে বলুন।
সেলিনা শেলী: চূড়ান্ত সুপারিশের পর অনুভূতি যে কতটা চমৎকার এটা আসলে বোঝাতে পারছি না। কারণ অত্যন্ত আবেগ ছিল এবং আছে এটার প্রতি।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিচারক হওয়া কি স্বপ্ন ছিল?
সেলিনা শেলী: অনেক ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার। তখন ম্যাজিস্ট্রেট মানেই বুঝতাম না। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রস্তুতির সময় ইচ্ছা হয় আইন বিভাগে পড়ার। এ কারণে আমার ব্যাকগ্রাউন্ড মানবিক না থাকা স্বত্ত্বেও শুধু আইন নিয়ে পড়ার জন্য মানবিক বিষয়ে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। আইন বিভাগে ভর্তি হওয়ার পর থেকে বিচারক হওয়ার স্বপ্ন বাসা বাঁধে। 

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিচারক হওয়ার পেছনে কার সবচেয়ে অবদান বেশি?
সেলিনা শেলী: বিচারক হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বেশি কাজে লেগেছে আমার বাবার স্বপ্ন পূরণের জন্য উঠেপড়ে লাগা। বাবার স্বপ্ন ছিল আমি বিচারক হই। তিনি আমার থেকে এটা যেহেতু আশা করেছিলেন তাই আমি সর্বোচ্চ চেষ্টাটাই করেছি। সবসময় প্রার্থনা করেছি, যেন বাবাকে জজের বাবা হিসাবে পরিচয় করাতে পারি।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: কিভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন এবং দিন কত ঘন্টা করে পড়াশোনা করেছেন?
সেলিনা শেলী: কত ঘন্টা পড়তাম এটার হিসাব রাখতাম না। ঘুমা, খাওয়া, প্রার্থনা, ব্যক্তিগত কোন কাজ ব্যতীত সবসময় পড়াশোনা করতাম। বিজেএসের সিলেবাসের আলোকে বিগত সালের প্রশ্ন বিশ্লেষণ করা এবং আইনের বেয়ারএক্ট ধরে কনসেপ্ট ক্লিয়ার করে পড়ার চোষ্টা করতাম। মনে না থাকলে বার বার করে দেখতাম। জেনারেল বিষয়ও সিলেবাসের আলোকে নোট করতাম। তবে বার বার স্বপ্ন ভঙ্গ হলেও আত্নবিশ্বাস হারাই নি। নিজের দুর্বলতাগুলো খুঁজে সেই আঙ্গিকেই নোট প্রস্তুত করতাম। সে অনুযায়ী পড়াশোনা করেছি।

আরও পড়ুন: সহকারী জজ হলেন স্টেট ইউনিভার্সিটির সাথী-বিল্লাল

দ্যাডেইলি ক্যাম্পাস: কত বার ভাইবা দিয়েছেন এবং কততম ভাইভাতে সফল হয়েছেন?
সেলিনা শেলী: আগে ২ বার ভাইভা দিয়েছি হয়নি। তবে আত্মবিশ্বাস হরায়নি। ফলে ৩য় বারে সফল হয়নি। 

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: যারা বিচারক হতে চাই তাদের উদ্দেশ্যে আপনার পরামর্শ কি?
সেলিনা শেলী: যাদের স্বপ্ন বিচারক হওয়া তাদের কে বলব সাধনাটা থাকতে হবে প্রবল। স্বপ্ন পূরণের জন্য কি করতে হবে সেটা নিজের মধ্যে শতভাগ ধারণ করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী নিজেকে প্রস্তত করতে হবে। যত বাধা আসুক ব্যর্থতা আসুক এই প্লাটফরম থেকে সরে যাওয়া যাবে না যতক্ষন সুযোগ থাকবে। অবশ্যই অনেক বেশি অধ্যবসায়ী হতে হবে এটার বিকল্প কোন রাস্তা নাই। কম পড়াশোনায় আসলে সম্ভব না।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিচারক হিসেবে দেশের জন্য আপনি কি অবদান রাখতে চান?
সেলিনা শেলী: দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্রের কল্যাণে কাজ করতে চাই। আমি সততা ও ন্যয়নিষ্ঠার সাথে আইনের মাধ্যমেই ন্যায়বিচার বাস্তবায়ন করব।


সর্বশেষ সংবাদ