এআইইউবি থেকে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে প্রথম নারী আম্পায়ারের দায়িত্বে জেসি

সাথিরা জাকির জেসি
সাথিরা জাকির জেসি  © টিডিসি ফটো

বর্তমানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজ যোগ্যতাতেই এগিয়েছেন দেশের নারীরা। অগ্রযাত্রার মধ্যেও নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনাও ছিল আলোচিত। তবে নানা প্রতিবন্ধকতার পরেও এগিয়ে যায় নারীরা। তেমনই বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক নারী আম্পায়ার সাথিরা জাকির জেসি।  নিজেকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তিনি। সম্প্রতি তিনি তার শিক্ষাজীবন ও কর্মজীনের বিভিন্ন দিক নিয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের মুখোমুখী হয়েছে। তার কথাগুলো শুনেছেন আফরিন সুলতানা শোভা।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: শুরুতে আপনার শৈশব নিয়ে বলুন
সাথিরা জাকির জেসি: ছোটবেলা থেকে আমি অনেক ডানপিটে স্বভাবে ছিলাম।সারাদিন শুধু ক্রিকেট খেলতাম বাবা-মা অনেক বকাবকি করত অন্য সকল বাচ্চারা যে ধরনের খেলা খেলতো আমি সেগুলো না খেলে সব সময় ক্রিয়েটই খেলতাম।তবে দিনশেষে আমি যখন ক্রিকেটার হতে চেয়েছি আর বাবা-মা সবকিছুতেই সাপোর্ট করেছে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার শিক্ষাজীবনের গল্প শুনতে চাই। (প্রাইমারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়)
সাথিরা জাকির জেসি: আমার ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত কেটেছে লালমনিহাটে তারপরে আমি ঢাকায় চলে আসি সবশেষে আমি এআইইউবি থেকে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেছি 

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: টেন্ডুলকারের মতো ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন ছিলো আপনার। কিন্তু আসলে সে কি স্বপ্ন পূরণ হয়েছে?
সাথিরা জাকির জেসি: অবশ্যই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তবে টেন্ডুলকার তো একজনই হন তার মত তো আর হওয়া সম্ভব নায়। তবে আমি আমার সময়ে ২০০৭ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত খুব ভালোভাবে ক্রিকেট খেলেছি এবং অনেক বেশি উপভোগ করেছি। আমি হয়তো এ বছরই মাঠ থেকে অবসর নিব এবং আমি চাই আমার শেষ ম্যাচটিও যেন আমি খুব ভালোভাবে খেলে বিদায় নিতে পারি।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ২০০১ সালে আপনি বিকেএসপিতে ক্রিকেট কোচিংয়ের জন্য গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে নারী দল না থাকায় আপনাকে টেনিস কিংবা শুর্টিংয়ে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। সে স্মৃতি কি মনে পড়ে?
সাথিরা জাকির জেসি: আসলে বিকেএসপিকে অনেক বড় একটি ধন্যবাদ দিতে হয় বিকেএসপির জন্যই আমার এত দূরে আজকে আসা। বিকেএসপিতে আমি যখন যাই তখন আসলে মেয়েদের জন্য সেখানে ভর্তির কোন ব্যবস্থা ছিল না তাই তারা আমাকে বলেছিল আমি যেন টেনিস বা শুটিং এর কোন কোচিং এ ভর্তি হই।তবে পরবর্তীতে বিকেএসপিতে নারী ক্রিকেটারদের জন্য কোচিং ব্যবস্থা চালু করা হয় শুক্র-শনি বার করে আমরা সেখানে যেতাম এবং প্র্যাকটিস করতাম এবং বিকেএসপির জন্যই আমার এত দূরে আসা।

 
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: পরে আবার ক্রিকেটে ফিরে আসলেন কীভাবে, সেটা কবে
সাথিরা জাকির জেসি: ২০০৭ সালে খবর পেলাম মেয়েদের জন্য ক্রিকেট ম্যাচ চালু হচ্ছে ঢাকাতে তো তখন আমি বিকেএসপি থেকে তখন ঢাকায় চলে এলাম এবং সে ম্যাচটি খুব ভালোভাবে খেললাম তারপরে এভাবে আমার ন্যাশনাল টিমে আসা।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: এতো এতো সংগ্রামের পর আপনি এখন ইন্টারন্যাশনাল ইভেন্টে প্রথম বাংলাদেশি নারী আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করছেন। এ অনুভূতি কেমন?
সাথিরা জাকির জেসি: অবশ্যই অনেক ভালো অনুভূতি ছিল।কারণ এই সুযোগটি সবাই পায়না আমি পেয়েছি তার জন্য আমি গর্বিত।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ক্রিকেটে এসে সবচেয়ে বড় স্বপ্ন কি ছিল?
সাথিরা জাকির জেসি: ক্রিকেটে আমার সবথেকে বড় স্বপ্ন ছিল জাতীয় দলে খেলা। আমি জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেয়েছি এবং আমি যা চেয়েছিলাম তার থেকে অনেক বেশি কিছু পেয়েছি। তারপরে ধীরে ধীরে ধারাভাষ্যে আসা এবং আম্পায়ারিং এ আসা সেখান থেকেই।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আম্পায়ারিংয়ে যাত্রা কবে শুরু, আম্পায়ার নাকি ক্রিকেটার কোনটায় বেশি উপভোগ করেন?
সাথিরা জাকির জেসি: আমি ক্রিকেট খেলাটাকে বেশি উপভোগ করতাম তবে একটা সময় পর নিজের পেশা পরিবর্তন করতে হয়। তাই এখন যেহেতু ক্রিকেটের মধ্যেই আছি আমি আম্পায়ারিংও  অনেক বেশি উপভোগ করছি।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: এই পেশায় কোন প্রতিবন্ধকতা আছে কিনা? দেশের অধিকাংশ পেশায় নারীদের প্রতিবন্ধকতা আছে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে কেউ আম্পায়ারিংয়ে আসতে চাইলে আপনার পরামর্শ কি থাকবে?
সাথিরা জাকির জেসি: আগে কিছুটা প্রতিবন্ধকতা ছিল তবে বর্তমানে কোন ধরনের কোন প্রতিবন্ধকতা নেই আর একটি প্রতিবন্ধকতার কথা যদি উল্লেখ করি যে ছেলেদের ম্যাচে মেয়েরা আম্পায়িং করবে এটা নিয়ে বেশ প্রতিবন্ধকতা ছিল তবে এটিও এখন সমাধান হয়ে গেছে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ইন্ট্যারন্যাশনাল কোন ম্যাচে দিয়ে অভিষেক হচ্ছেন
সাথিরা জাকির জেসি: আমার অভিষেক হতে যাচ্ছে জুনের ১২ তারিখে ইনশাল্লাহ  ৯ তারিখের দিকে হংকং যাব সেখানে এশিয়া কাপের মাধ্যমে আমার শুরুটা হবে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: এ পর্যন্ত আসতে আপনাকে আর কি কি বাধা অতিক্রম করতে হয়েছে?
সাথিরা জাকির জেসি: বাধা তো অবশ্যই ছিল - জাতীয় দলে আশা, ক্রিকেটে আসা, তবে জাতীয় দলে আসার পর থেকে আমি এ পর্যন্ত অর্থাৎ আমার আম্পায়ারিং এর জীবন এবং ধারাভাষ্যের জীবনে আমি খুব সহজেই পার করতে পেরেছি কোন ধরনের বাধা আসেনি। 

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: নতুন কোন মেয়ে যদি এই পেশায় আসতে চাই তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কি থাকবে
সাথিরা জাকির জেসি: যদি কেউ এই পেশায় আসতে চায় আমি তাদের ওয়েলকাম করব কারণ এই পেশায় এখনো প্রতিদ্বন্দ্বী অনেক কম । বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮ থেকে ১০ জন নারী আম্পায়ার রয়েছেন তাই এখানে যদি কেউ চায় তাহলে সহজে নিজের ক্যারিয়ার করে নিতে পারবে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি
সাথিরা জাকির জেসি: এখন আমার সব পরিকল্পনা আম্পায়ারিং কে ঘিরেই। তবে এখনও ভালো করতে হবে এবং ইন্টারন্যাশনাল ম্যাচের আম্পায়ারিং করতে হবে সেই ইচ্ছেটাও খুব দ্রুত পূরণ হতে যাচ্ছে। 


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence