মিডিয়া ছাত্রলীগকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করে
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ছাত্রলীগের রাজনীতি, নতুন দায়িত্বগ্রহণ, র্যাগিং ও কমিটিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পর দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের মুখোমুখি হয়েছিলেন সাদ্দাম। তার কথাগুলো শুনেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের নিজস্ব প্রতিবেদক ফাতেমা-তুজ-জিনিয়া—
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ছাত্ররাজনীতির প্রতি আগ্রহ তৈরি হয় কীভাবে?
সাদ্দাম হোসেন: আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। জাতির পিতার ডাকে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের যোগ দিয়েছিলেন। তার রণাঙ্গনের স্মৃতি বঙ্গবন্ধুর প্রতি এবং রাজনীতির প্রতি আগ্রহ তৈরি করে।
স্কুল পর্যায় থেকেই আকাঙ্ক্ষা ছিল যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি করবো। বঙ্গবন্ধুসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক নেতা আইন বিভাগের ছাত্র হওয়ায় আইনের প্রতি একটা আলাদা আকর্ষণ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরপরই রাজনীতিতে যুক্ত হই। এরপর পর্যায়ক্রমে হল, বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন করে আজকের অবস্থানে পৌঁছেছি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনারা দায়িত্বগ্রহণের পর সবার প্রত্যাশা ছিল ছাত্রলীগে শৃঙ্খলা ফিরবে। কিন্তু দেখা যায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা র্যাগিং, অভ্যন্তরীণ কোন্দলসহ বিভিন্ন কারণে নেতিবাচক সংবাদের শিরোনাম হচ্ছে। এ বিষয়টি কিভাবে দেখছেন?
সাদ্দাম হোসেন: ছাত্রলীগ দেশের বৃহত্তম ছাত্রসংগঠন। এ সংগঠনে কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে না, এমনটা বলার সুযোগ নেই। তবে মিডিয়া ছাত্রলীগকে অধিক নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করে।
আরও পড়ুন: ভারতে অস্ত্রোপচার হলো সাদ্দামের
ছাত্রলীগ একশটা ভালো কাজ করলেও সংবাদ হয় না। কিন্তু ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে একটা কোনো অভিযোগ উঠলেই সেটি যাচাই-বাছাই না করে ‘আই ক্যাচিং’ শিরোনামে বারবার উপস্থাপন করা হয়।
আমরা কখনোই সাংবাদিক ভাইদের কাজে হস্তক্ষেপ করি না। গঠনমূলক সমালোচনাকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু কেউ যদি উদ্দেশ্যমূলকভাবে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অপচেষ্টা করে তবে তা প্রতিহত করা হবে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনি বলছেন মিডিয়া অধিক নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করছে। ইবিতে ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনা, চবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া, রাবিতে হিন্দু শিক্ষার্থীকে শিবির ট্যাগ দেয়া—এসব বিষয়ে কি বলবেন?
সাদ্দাম হোসেন: ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে। তার সাহসীকতাকে আমরা স্যালুট জানাই। এ ঘটনায় আমরা আইনিব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। নিপীড়কের পরিচয় যাইহোক ছাত্রলীগ সর্বদা নির্যাতিতের পক্ষে অবস্থান করবে।
আরও পড়ুন: সমাবর্তন নিলেন সাদ্দাম
আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর অনেকেই ছাত্রলীগকে ভালোবেসে নয়, বরং নিজেদের স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে ছাত্রলীগে প্রবেশ করেছে। বিশেষ করে যারা যুদ্ধাপরাধ ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, তারা সরাসরি কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পেরে ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশ করেছে। বেশিরভাগ নেতিবাচক ঘটনার সঙ্গে তারাই জড়িত। যারা এ ধরনের ঘটনায় জড়িত হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: সাংগঠনিক শৃঙ্খলার বিষয়েও আপনারা জিরো টলারেন্সের কথা বলছেন। কিন্তু সম্প্রতি আমরা দেখেছি চবি ছাত্রলীগ শোকজ লেটারের উত্তর দেয়নি। তৃণমূলের ওপর কি তাহলে কেন্দ্রের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেই?
সাদ্দাম হোসেন: ছাত্রলীগের প্রাণ হচ্ছেন তৃণমূলের কর্মীরা। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই আমরা তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সাথে যোগাযোগ রাখছি; সমাবেশ করীছ। আগামীতে তৃণমূল পর্যায়ে সব কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে হবে।
অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও সংঘাতের ব্যাপারে আমরা জিরো টলারেন্স অবস্থানে অনড় আছি। কেউ কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ না করলে এ বিষয়ে সাংগঠনিক-গঠনতান্ত্রিক উপায়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ কবে হবে?
সাদ্দাম হোসেন: পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয়ে কাজ চলছে। শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।