সহপাঠীদের সামনে বই-খাতা, ফাইয়াজের বেঞ্চে ফুল-জাতীয় পতাকা

ফারহান ফাইয়াজের স্মরণে বন্ধুরা সেখানে ফুল ও জাতীয় পতাকা রেখেছে
ফারহান ফাইয়াজের স্মরণে বন্ধুরা সেখানে ফুল ও জাতীয় পতাকা রেখেছে  © সংগৃহীত

ফারহানুল ইসলাম ভূঁইয়া ফারহান ফাইয়াজের বয়স হয়েছিল ১৭ বছর। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে গত ১৮ জুলাই রাজধানীর ধানমন্ডিতে গুলিতে নিহত হন তিনি। দেশজুড়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ ও দেশত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। এরপরে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর ধীরে ধীরে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয় সরকার। 

আন্দোলন শেষে রাজধানীর ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে ফাইয়াজের সকল সহপাঠী ক্লাসে-পরীক্ষার টেবিলে ফিরলেও ফেরেনি আন্দোলনে বুলেটবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারানো ফাইয়াজ। তার বসার বেঞ্চটা আজ ফাঁকা। তাঁর স্মরণে বন্ধুরা সেখানে ফুল ও জাতীয় পতাকা রেখেছে। ফাইয়াজের শোকাহত বন্ধুরা তাদের প্রিয় সহপাঠীকে ভোলেনি। কখনো ভুলতেও পারবে না।

সহপাঠীরা বলেন, শহীদ ফারহান ফাইয়াজ এ আসনে বসে ক্লাস করার কথা ছিল। সে শহীদ হয়ে আমাদেরকে ঋণী করে রেখে গেছে, আমরা যেন এ অর্জিত স্বাধীনতা আমাদের সততা, নিষ্ঠা, দেশপ্রেম ও কর্মকাণ্ড দিয়ে রক্ষা করি। মহান রবের কাছে শহীদ ফারহান ফাইয়াজ-এর শহীদী মর্যাদার জন্য কায়েমানুবাক্যে দোয়া করছি।

ফাইয়াজে শিক্ষক মিরাজ উদ্দিন তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লেখেন, ‘শহীদ ফারহান ফায়াজ দীর্ঘদিন বন্ধের পর কলেজে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু। ফারহানের সহপাঠীরা ক্লাসে উপস্থিত, ক্লাসের সবকিছু আগের মত আছে, কিন্তু ফারহান আর নেই। সহপাঠীরাও ক্লাসে ফারহানের অনুপস্থিতি অনুভব করেছে, তাকে ভুলে যায়নি। কিন্তু দুনিয়ার জীবনে তার সাথে আর সাক্ষাৎ পাবে না। শহীদ আবু সাঈদ, মুগ্ধ ও ফারহানসহ নাম না জানা অসংখ্য শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ সত্যিকারের মানবিক ও কল্যাণকর রাষ্ট্র হউক, সে প্রত্যাশা রইল। আমিন।’

আরো পড়ুন: শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে বন্যার্তদের জন্য তোলা টাকা ছিনতাই

জানা গেছে, রাজধানীর ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন ১৭ বছর বয়সী ফাইয়াজ। ২০২৫ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। ধানমন্ডিতে মা-বাবার সঙ্গে থাকতেন তিনি। তাদের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব পৌরসভার বরপা গ্রামে। 

ফাইয়াজের বাবা শহিদুল ইসলাম দিশান প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্সে কর্মরত। মা ফারহানা দিবা গৃহিণী। ছোট বোন ফারিন ইসলাম উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।


সর্বশেষ সংবাদ