গরম চায়ের সঙ্গে সিগারেটে সুখটান ডেকে আনতে পারে বিপদ

চা-সিগারেট
চা-সিগারেট  © সংগৃহীত

বন্ধুদের আড্ডায় গরম চায়ের সাথে একটা জ্বলন্ত সিগারেট না হলে অনেকের আড্ডা জমেইনা। চা-সিগারেটের এই যুগলবন্দি মহিমা হয়তো ক্ষণিকের সুখ দেয়। কিন্তু সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যর যে চরম ক্ষতিটা প্রতিনিয়ত একটু একটু করে শরীরের মধ্যে বাা বাঁধছে সেটা কিন্তু অনেকেরই অজানা।

এক সমীক্ষায় প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, যে সমস্ত ব্যক্তিরা নিয়মিত ধূমপান ও মদ্যপান করে থাকে তাদের ক্ষেত্রে এই অভ্যাস বিপদ ডেকে আনে। গরম চায়ের সঙ্গে সিগারেট খেলে এই সমস্ত ব্যক্তিদের খাদ্যনালীতে ক্যান্সারের প্রবণতা দেখা দেয়। অ্যানালস অব ইন্টারনাল মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনই আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে।

তাই নিজের এবং পরিবারের স্বার্থে সুস্থ থাকতে আজই এই অভ্যেস বর্জন করুন। এমনিতেই তামাক এবং অ্যালকোহল দুটিই ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। সঙ্গে যদি দোসর হয় গরম চা, তাহলে সেই বিপদের মাত্রা আরও কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তাই গরম চায়ের সঙ্গে সিগারেটে সুখটান দেওয়ার অভ্যেসটা বদলে ফেলুন।

যারা দিনে অন্তত এক গ্লাস অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় পান করেন এবং পাশাপাশি দিনে অতিরিক্ত গরম চা পান করেন তাদের খাদ্যনালীতে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি। গবেষণার লেখক পিকিং ইউনিভার্সিটি হেলথ সায়েন্স সেন্টারের ড. জুন এলভি জানান, ‘ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস না থাকলে শুধু চা পান করা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই।’

আরও পড়ুন: খাবার খাই, গান গাই, কিন্তু বাংলা বর্ষপঞ্জিকে এড়িয়ে চলি

বিশেষজ্ঞদের মতে, খাদ্যনালীতে যে ক্যান্সার হয় তা আগে থেকেই অ্যালকোহল এবং ধূমপানের সাথে যুক্ত। কিন্তু বিজ্ঞানীদের মতে প্রতিদিনের গরম চা আর গরম সিগারেটের যুগলবন্দিতে এই ঝুঁকির পরিমান আরও বেড়ে যায়। গবেষকদের মতে, গরম চা ফুটানো খাদ্যনালীর কোষের ক্ষতি করে। যদি ব্যক্তি একই সাথে অ্যালকোহল পান করে এবং ধূমপান করে, তাহলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে। এক গবেষণায় ৩০ থেকে ৭৯ বছর বয়সী ৪৫৬,১৫৫ চীনা প্রাপ্তবয়স্কদের উপর তথ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। সেই সময় কোনও ব্যক্তি ক্যান্সার আক্রান্ত ছিলেন না।

দীর্ঘ ৯ বছর ধরে এই পরীক্ষা চালানো হয়। সেই সময় দেখা যায় ১ হাজার ৭৩১ জন ব্যক্তি খাদ্যনালীর ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। উল্লেখ্য, চীনে এই রোগের মাত্রা সবচেয়ে বেশী। কারন সেখানে চা খাওয়ার রেওয়াজ অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশী। সেই সঙ্গে চীনা ব্যক্তিদের সিংহভাগই ধূমপায়ী ও মদ পান করে থাকেন। উল্লেখ্য, চীনা লোকেরা প্রায়শই ফ্লাস্ক থেকে চা পান করে থাকেন যেটি তারা তাদের কর্মস্থলে নিয়ে যায়। চীনা লোকেরা প্রায়শই ঐতিহ্যবাহী ব্রিটিশ চা পান করে, যা চীনা জাতের চেয়ে কম গরম কারণ এটি সাধারণত ঠান্ডা দুধের সাথে নেওয়া হয়।


সর্বশেষ সংবাদ