ইসলামে অকাল মৃত্যু বলতে কিছু নেই
- অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউসুফ
- প্রকাশ: ০৩ মে ২০২১, ০৬:৫৯ PM , আপডেট: ০৩ মে ২০২১, ০৬:৫৯ PM
কেউ অল্প বয়সে মারা গেলে ব্যানারে, পোস্টারে বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখতে দেখা যায় যে, অমুকের অকাল মৃত্যুতে আমরা দুঃখিত বা শোকাহত ইত্যাদি। এ কথাটি ইসলামী আক্বীদার পরিপন্থি। কেননা ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী প্রত্যেক মানুষ তার নির্ধারিত আয়ু শেষে মারা যায়।
কেউ তার নির্দিষ্ট সময়ের এক মুহূর্ত আগে বা পরে মারা যায় না। এমনকি আহলি সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের আক্বীদা হলো “যাকে কেউ হত্যা করে সেও তার নির্ধারিত সময়ে মারা যায়।”
ইমাম নাসাফীর পরিভাষায়- “আল-মাকতুলু মাইয়্যিতুন বি আজালিহি।” সুতরাং যারা অল্প বয়সে স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করে তারা তাদের কাল বা সময় শেষ হওয়ার আগে মারা গেছে এ বিশ্বাস কখনও ইসলামী বিশ্বাস হতে পারে না। কারণ তা কুরআনুল কারীমের অসংখ্য আয়াতের ভাষ্য পরিপন্থি।
সেগুলোর কয়েকটি হলো, আল্লাহ বলেন: “প্রত্যেক জাতির এক নির্দিষ্ট সময় আছে। যখন তাদের সময় আসবে তারা মুহূর্তকাল বিলম্ব করতে পারবে না এবং ত্বরাও করতে পারবে না। (আরাফ:৩৪)
“তিনিই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন মাটি হতে, পরে শুক্রবিন্দু হতে, তারপর ‘আলাকা হতে, তারপর তোমাদের বের করেন শিশুরূপে, অতঃপর যেন তোমরা উপনীত হও তোমাদের যৌবনে, তারপর হয়ে যাও বৃদ্ধ। আর তোমাদের মধ্যে কারো মৃত্যু ঘটে এর পূর্বেই।” (মুমিন:৬৭)
“যখন কারো নির্ধারিত কাল উপস্থিত হবে, তখন আল্লাহ তাকে কিছুতেই অবকাশ দিবেন না।”(মুনাফিকুন:১১)
“নিশ্চয় আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত কাল উপস্থিত হলে তা বিলম্বিত হয় না; যদি তোমরা তা জানতে।(নূহ:০৪)
উপরোক্ত আয়াতসমূহের অর্থ খুবই স্পষ্ট। যা পাঠের পরে অকাল মৃত্যু বলার কোনো সুযোগ অন্তত ইসলামে নেই। আসুন আমরা কুরআনের ছায়াতলে আশ্রয় নেই। নিজেরা সংশোধিত হই অন্যকে সংশোধন করি। আক্বীদা বিধ্বংসী এ কথাটি বলা থেকে বিরত থাকি।
লেখক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক।