শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে মানববন্ধন শেষে স্কুলে ভাঙচুর

  © সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় লোকজন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে মানববন্ধন করেছে। আজ সোমবার দুপুরে মানববন্ধন শেষে বিদ্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে।

জানা গেছে, দুপুরে উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফা, উপজেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মহিউদ্দিনসহ শতাধিক ব্যক্তি ওই বিদ্যালয়ে আসেন। এ সময় বিদ্যালয়ে পাঠদান চলছিল। বহিরাগত ব্যক্তিরা শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষ থেকে বের করে দিয়ে শিক্ষার্থীদের বাইরের মাঠে নিয়ে যান।

এরপর বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে তাঁরা মানববন্ধন করেন। মানববন্ধন শেষে নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের হাসনাহেনা একাডেমিক ভবনের বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষের দরজা-জানালা ভাঙচুর করে। এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে লাঠিসোঁটা ছিল। খবর পেয়ে বাঞ্ছারামপুর থানা–পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এক সহকারী শিক্ষক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন বলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানতে পারে। এ ঘটনায় ১৭ মার্চ সন্ধ্যায় পরিচালনা পর্ষদের সভায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পাশাপাশি ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। আজ সকালে ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের দুই সদস্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ওই শিক্ষক প্রায় দেড় মাস আগে প্রাইভেট পড়ানোর সময় কক্ষে এক পেয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। পরে ওই ছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন। আপত্তিকর ছবি মুঠোফোনে সংরক্ষণ করে ওই ছাত্রীকে বিভিন্ন সময় হয়রানি করেন ওই শিক্ষক। দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন বলেও প্রচার করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষক।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক বলেন, স্কুলশিক্ষক ও ছাত্রীর ঘটনা শুনে পরিবারের অভিযোগ পাওয়ার আগেই ১৭ মার্চ সন্ধ্যায় ঘটনা যাচাই করতে তদন্ত কমিটি গঠনসহ অভিযুক্ত শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানাতে আজ তিনি উপজেলা সদরে যান। সেখানে থাকা অবস্থায় জানতে পারেন, ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে স্থানীয় লোকজন বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষার্থীদের নিয়ে মানববন্ধন করেন। পরে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে বলে শিক্ষকেরা তাকে জানিয়েছেন।

ওই ছাত্রীর চাচাবলেন, ওই শিক্ষক ভাতিজিকে ফাঁদে ফেলে একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন। পরে জোরপূর্বক তার কাছ থেকে নন–জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়েছেন। এখন ভাতিজিকে বিয়ে করেছেন বলে প্রচার করছেন ওই শিক্ষক। একাধিকবার চেষ্টা করেও মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় সহকারী শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দা শমসাদ বেগম বলেন, ঘটনা শুনে বাঞ্ছারামপুর থানার ওসিকে সঙ্গে নিয়ে ওই বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছেন। তবে তাদের কাছে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। ওসিকে তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।


সর্বশেষ সংবাদ